চারদিক সেজে উঠেছে বেগুনি রঙে। বেগুনি রং দিয়ে রাঙানো হয়েছে গাছের গুঁড়ি। বেগুনি রংয়ের বেলুন ঝুলছে মাঠে তৈরি স্টেজে। আর যারা উপস্থিত মাঠে, তাদের অধিকাংশের মাথায় বেগুনি রংয়ের টুপি।
বুধবার, ৩ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধকতা দিবসে নরেন্দ্রপুরে রামকৃষ্ণ মিশন ব্লাইন্ড বয়েজ় অ্যাকাডেমি আয়োজন করেছে পার্পল ফেয়ার বা বেগুনি রংয়ের মেলা। বেগুনি রংয়ের এই মেলায় যারা নিজেদের নানা দক্ষতা মেলে ধরে স্টল দিয়েছে তারা সবাই বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন পড়ুয়া। কেন এই মেলার নাম পার্পল ফেয়ার? নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন ব্লাইন্ড বয়েজ় অ্যাকাডেমির অধ্যক্ষ ব্রহ্মচারী অসীমচৈতন্য বলেন, ‘‘বেগুনি রং শক্তির ও উদ্দীপনার প্রতীক। একটা রামধনু যখন তৈরি হয়, তার প্রথম রং বেগুনি। এই মেলায় অংশগ্রহণকারী বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন পড়ুয়ারা সবাই উদ্দীপনার প্রতীক, শক্তির প্রতীক। তাই এই মেলার নাম পার্পল ফেয়ার।’’
শুধু নরেন্দ্রপুর ব্লাইন্ড বয়েজ়ের পড়ুয়ারাই নয়, বিভিন্ন স্কুলের বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন পড়ুয়ারা এই মেলায় অংশ নিয়েছিল। মাঠে দুই দল তৈরি করে দৃষ্টিহীনদের ক্রিকেট হচ্ছিল। তার পাশেই হচ্ছিল ফুটবল। সাঁতার কাটতেও নেমে পড়েছিল কয়েক জন। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন কয়েক জন পড়ুয়া আবার কৃষিকাজ, মুরগি পালনে তারা কতটা পারদর্শী তার নিদর্শন রাখে। চতুর্থ শ্রেণির দৃষ্টিহীন পড়ুয়া সাহিল রাও আর নিহার মোল্লারা দেখাচ্ছিল, স্মার্টফোন ব্যবহার করে কী ভাবেতারা বই পড়ছে বা লিখছে। নরেন্দ্রপুর ব্লাইন্ড বয়েজ় অ্যাকাডেমির প্রাক্তন অধ্যক্ষ বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, ‘‘স্মার্টফোনের বিশেষ অ্যাপ ব্যবহার করে সম্পূর্ণ দৃষ্টিহীনরা এখন লিখতে পড়তে পারছে। ভবিষ্যতে হয়তো ব্রেলের মাধ্যমে দৃষ্টিহীনদের পড়াশোনার দরকার পড়বে না। পরীক্ষায় রাইটার নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজনও হয়তো হবে না।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)