ইঞ্জেকশন দেওয়ার পরেই অসুস্থ হয়ে এক প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে বালুরঘাট হাসপাতালে। ওই একই ইঞ্জেকশনে আরও আট প্রসূতি অসুস্থ হয়ে পড়েন বলেও অভিযোগ। এইঘটনায় বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা স্বাস্থ্য দফতর।
‘অ্যামিকাসিন’ অ্যান্টিবায়োটিক ইঞ্জেকশন দেওয়ার পরে এমন হয়ে থাকতে পারে, এই সন্দেহে জেলা জুড়ে হাসপাতালগুলিতে ওই ইঞ্জেকশন দেওয়া বন্ধ রাখা হয়েছে, খবরদফতর সূত্রে। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের এক শীর্ষ কর্তা শনিবার জানান, জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে (সিএমওএইচ) ঘটনার পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। বালুরঘাটে এ দিন ঘটনার প্রতিবাদে পথে নামে বিরোধীরা।
হাসপাতাল সূত্রের খবর, সেখানে ভর্তি থাকা সুস্মিতা বর্মণ (২১) নামে তপনের বাসিন্দা এক প্রসূতির মৃত্যু হয় শুক্রবার। পরিবারের অভিযোগ, একটি ইঞ্জেকশন দেওয়ার পরেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। আরওঅভিযোগ, ওই একই ইঞ্জেকশন দেওয়ার পরে অসুস্থ বোধ করেন আরও আট প্রসূতি। জ্বর, কাঁপুনি ও শ্বাসকষ্টের জন্য সে রাতেই তাঁদের হাসপাতালের সিসিইউ-তে স্থানান্তর করতে হয়। তাঁদের উপরে নজর রাখেন সিএমওএইচ সুদীপদাস-সহ অন্য চিকিৎসকেরা। এখন ওই আট প্রসূতির অবস্থা স্থিতিশীল বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি।
রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘অ্যামিকাসিন’ ইঞ্জেকশনের কারণেই এমন ঘটেছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যে ব্যাচের ইঞ্জেকশন দেওয়ার পরে সমস্যা হয়েছে বলে অভিযোগ, সেই ব্যাচের বাকি ইঞ্জেকশন সরিয়ে রাখতে বলা হয়েছে। সিএমওএইচ বলেন, ‘‘উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের নেতৃত্বে দশ জনের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। মঙ্গলবারের মধ্যে তদন্তের রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে।’’ তিনি আরও জানান, হাসপাতালের চার জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে নিয়েও একটি দল গড়ে ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। স্বাস্থ্যকর্তার বক্তব্য, ‘‘ওই ব্যাচের ‘অ্যামিকাসিন’ ইঞ্জেকশন পরীক্ষার জন্য পাঠানো হচ্ছে। মৃত প্রসূতির ময়না তদন্ত করানো হচ্ছে।’’
বালুরঘাটের বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্তমজুমদারের দাবি, ‘‘মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেও এ ধরনের ঘটনায় এক প্রসূতির মৃত্যু হয়েছিল। তা ধামাচাপা দিতে মুখ্যমন্ত্রী ঘটনার মোড় ঘুরিয়ে দেওয়ায় চেষ্টা করেছিলেন।’’
বালুরঘাটের ঘটনায় আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে স্বাস্থ্যসচিবকে ব্যবস্থা নিতে হবে বলে দাবি তাঁর। এ দিন বালুরঘাটে দফায় দফায় অবরোধ-বিক্ষোভ করে বিজেপি, সিপিএম এবং আরএসপি। রাজ্যের মন্ত্রী বিপ্লব মিত্রের যদিও বক্তব্য, ‘‘হাসপাতাল ও জেলা স্বাস্থ্য দফতর ঘটনার পরেই যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করেছেন।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)