বাসের ধাক্কায় প্রাণ গেল এক কিশোরীর।
যশোর রোডের উপরে বারাসতের কাছে মেঘদূত মোড়ে বুধবার দুপুরে এই দুর্ঘটনা ঘটে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার নাম অন্তরা বসু (১৬)। তার বাড়ি মধ্যমগ্রামে। এক বন্ধুর স্কুটারে চেপে বারাসতে কালীপুজো দেখতে যাওয়ার পথে দুর্ঘটনাটি ঘটে বলে জানিয়েছে কিশোরীর পরিবার। পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, দু’টি বাস রেষারেষি করার সময়ে স্কুটারে ধাক্কা মারে। বাসের ধাক্কায় স্কুটার থেকে ছিটকে পড়ে অন্তরা। এর পরে একটি বাসের চাকা তাকে পিষে দেয়। দুর্ঘটনার পরে দু’টি বাসেই ভাঙচুর চালায় উত্তেজিত জনতা। এল-২৩৮ রুটের একটি বাস আটক করেছে পুলিশ।
তদন্তকারীরা জানান, রেষারেষির অভিযোগ তাঁরা স্থানীয় পর্যায় থেকে পেয়েছেন। সেই অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যে বাসটি আটক করা হয়েছে, সেটি কোন বাসের সঙ্গে রেষারেষি করছিল, সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে তা জানার চেষ্টা চলছে।
প্রসঙ্গত, কালীপুজোর কারণে বর্তমানে বারাসতে যান নিয়ন্ত্রণ করতে হিমশিম খাচ্ছে পুলিশ। প্রতিদিন দুপুর থেকে পূর্ব নির্ধারিত ঘোষণা অনুযায়ী চিহ্নিত রাস্তাগুলি একমুখী করে দেওয়া হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, সময় মতো গন্তব্যে পৌঁছতে যে যাঁর মতো পারছেন, প্রাণপণে গাড়ি চালাচ্ছেন। বারাসতে দুপুর ২টো থেকে ‘নো এন্ট্রি’ করা হচ্ছে। এ দিন বেলা ১২টা নাগাদ দুর্ঘটনাটি ঘটে। ফলে, ‘নো এন্ট্রি’ এড়াতে বাসচালক বিপজ্জনক গতিতে বাস চালাচ্ছিলেন, এমন অভিযোগ মানতে নারাজ পুলিশ।
এক পদস্থ পুলিশ আধিকারিকের কথায়, ‘‘রেষারেষি হচ্ছিল কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে ওই সময়ে শুধুমাত্র ‘নো এন্ট্রি’ এড়াতে কারও দ্রুত গতিতে গাড়ি চালানোর কথা নয়। একটি বাস আটক করা হয়েছে।’’ ছাত্রীর মৃত্যুর পরে একটি এল-২৩৮ এবং সেটির পিছনে থাকা ৭৯বি রুটের একটি বাসে ভাঙচুর চালান স্থানীয় মানুষ। স্থানীয়দের অবশ্য দাবি, এল-২৩৮ রুটেরই দু’টি বাসের মধ্যে রেষারেষি চলছিল।
আকস্মিক এমন দুর্ঘটনায় ঘোর কাটছে না অন্তরার পরিবারের। এ দিন সকালে ঠাকুর দেখতে যাবে বলে ওই ছাত্রী বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল। দুপুরে পরিবারের লোকজন দুর্ঘটনার খবর পান। ছাত্রীটির পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, বাড়ি থেকে বেরোনোর পরে এক বন্ধুর সঙ্গে সে স্কুটারে চেপে বারাসতে ঠাকুর দেখতে যাচ্ছিল। দুর্ঘটনায় অন্তরার ওই বন্ধুটিও জখম হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর।
উল্লেখ্য, গত বছরই রেষারেষির কারণে কলকাতা শহরে একাধিক দুর্ঘটনা ঘটেছে। তার পরে রেষারেষি এড়াতে একাধিক পদক্ষেপের কথা ঘোষণা করেছিল পরিবহণ দফতর। কিন্তু সে সবে বেপরোয়া বাসচালকদের কতটা নিয়ন্ত্রণে আনা গিয়েছে, এ দিনের ঘটনার পরে তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই গিয়েছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)