Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
TMC

TMC: নেতার গ্রেফতারের প্রতিবাদে বিক্ষোভ, রাস্তা অবরোধ

গোটা ঘটনায় তৃণমূলের দলীয় কোন্দল প্রকাশ্যে চলে এসেছে।

প্রতিবাদ: যশোর রোড অবরোধ করেছেন বিক্ষোভকারীরা।

প্রতিবাদ: যশোর রোড অবরোধ করেছেন বিক্ষোভকারীরা। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক।

নিজস্ব সংবাদদাতা 
বনগাঁ শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০২১ ০৭:২১
Share: Save:

দলের ছাত্র সংগঠনের নেতাকে বাড়িতে চড়াও হয়ে মারধরের অভিযোগে পুলিশ এক যুব তৃণমূল নেতাকে গ্রেফতার করল। যুব নেতাকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে তৃণমূলের কিছু কর্মী-সমর্থক বৃহস্পতিবার থানার সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ দেখান। যশোর রোড বা ৩৫ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করা হয়। পথে বেরিয়ে ভোগান্তি পোহাতে হয় বহু মানুষকে।

বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে বনগাঁ শহরে। গোটা ঘটনায় তৃণমূলের দলীয় কোন্দল প্রকাশ্যে চলে এসেছে।

পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত যুব তৃণমূল নেতার নাম প্রশান্ত অধিকারী। তিনি পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের যুব তৃণমূলের সভাপতি। পাশাপাশি তিনি বাস-অটো-টোটো সংগঠনেরও কর্মকর্তা।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বনগাঁ পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের পালপাড়া এলাকার বাসিন্দা তৃণমূল ছাত্র পরিষদ নেতা অমিত চক্রবর্তী। তিনি বনগাঁ দীনবন্ধু কলেজের ছাত্র সংসদের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক।

অমিতের অভিযোগ, বুধবার দুপুরে তিনি বাড়িতে ২১ জুলাই কর্মসূচিতে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তৃতা শুনছিলেন। সে সময়ে প্রশান্তর নেতৃত্ব ১৫ জনের একটি দল চড়াও হয়। ওই দলে মহিলারাও ছিল। সকলে মিলে তাঁকে মারধর করে। বাবা-মা ঠেকাতে এলে তাঁদের গালিগালাজ করা হয়। শারীরিক ভাবে হেনস্থার চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ। অমিত বুধবার বনগাঁ থানায় প্রশান্ত-সহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন। পুলিশ রাতে প্রশান্তকে গ্রেফতার করে।

এ দিকে, প্রশান্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে, এই খবর জানাজানি হতেই তৃণমূলের বহু কর্মী-সমর্থক বনগাঁ থানায় জড়ো হতে থাকেন। সারা রাত তাঁরা থানা চত্বরে ছিলেন। তাঁরা দাবি তোলেন, যুব নেতাকে ছেড়ে দিতে হবে। পুলিশ তাঁকে না ছাড়ায় বৃহস্পতিবার সকালে দলে দলে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা অটো-টোটো করে থানায় জড়ো হন। টোটোয় মাইক বেঁধে, দলীয় পতাকা লাগিয়ে থানার গেটের মুখে শুরু হয় বিক্ষোভ।

বিক্ষোভে সামিল হয়েছিলেন অনেক টোটো-অটো-বাস চালক। ফলে সকালে শহরে কিছু টোটো-অটো চলাচল করেনি। দীর্ঘ সময় বিক্ষোভ চলার পরেও পুলিশের পক্ষ থেকে কোনও সাড়া না পেয়ে তাঁরা থানার সামনে থেকে বনগাঁ শহরের বাটারমোড় এলাকায় গিয়ে যশোর রোড অবরোধ শুরু করেন। তখন সকাল সাড়ে ৯টা। কর্মব্যস্ত সময়ে যানজট সৃষ্টি হয়। সাড়ে ১১টা নাগাদ পুলিশ গিয়ে অবরোধকারীদের সঙ্গে কথা বলে অবরোধ তুলতে সক্ষম হয়।

বিক্ষোভকারীদের পক্ষে বনগাঁর মতিগঞ্জ-নিমতলা ই-রিকশা ইউনিয়নের সম্পাদক বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘পুলিশের কাছে আমরা জানতে চেয়েছি, প্রশান্তকে কেন গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ কোনও উত্তর দিতে পারেনি। প্রশান্তকে ছেড়ে দেওয়ার দাবিতে আমরা সড়ক অবরোধ করেছি। বনগাঁর পুরপ্রশাসক প্রশান্তকে ধরিয়ে দিয়েছেন।’’

বনগাঁর প্রাক্তন পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্যের ঘনিষ্ঠ প্রশান্ত। শঙ্কর বলেন, ‘‘অমিত একটি ছেলেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় হুমকি দিয়েছিল। অনেককে চাকরি দেওয়া কথা বলেছিল। সে কারণে বুধবার প্রশান্ত-সহ কয়েকজন অমিতের বাড়িতে গিয়ে জানতে চায়, কেন সে হুমকি দিয়েছে। মারধর করা হয়নি। পুলিশ প্রকৃত তদন্ত না করে প্রশান্তকে গ্রেফতার করেছে। কর্মীরা তার প্রতিবাদ করেছেন।’’

জেলা তৃণমূল কো-অর্ডিনেটর তথা পুরপ্রশাসক গোপাল শেঠের কথায়, ‘‘গোটা বিষয়টি দলের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ দেখছেন। আইন আইনের পথে চলবে।’’

গোটা ঘটনাটি বনগাঁ শহরে তৃণমূলের কোন্দল বলেই দাবি করেছে বিজেপি। দলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক দেবদাস মণ্ডল বলেন, ‘‘বনগাঁ শহরে প্রাক্তন পুরপ্রশাসকের সঙ্গে বর্তমান পুরপ্রশাসকের লড়াই শুরু হয়েছে। একজন অপরাধীকে ছাড়ানোর জন্য বনগাঁ স্তব্ধ করে দেওয়া হল। এই নোংরা রাজনীতি বন্ধ হোক।’’

দলের জেলা সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘‘অন্যায় করলে দল কাউকে রেয়াত করবে না। পুলিশকে বলা হয়েছে, উপযুক্ত পদক্ষেপ করতে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Agitation TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE