পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রেখে দূষণ কমিয়ে রাস্তা তৈরির ক্ষেত্রে বিটুমিনের তুলনায় প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবহারের উপর জোর দেওয়ার কথা আগেই বলেছিলেন বাস্তুকারেরা। প্রায় ৩ টন প্লাস্টিক বর্জ্যের টুকরো দিয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিং ২ ব্লকের তাম্বুলদহ ২ পঞ্চায়েতের গোবিন্দনগর মোড় থেকে পলতা, তালতলা হয়ে নাগরতলা পর্যন্ত ৪.৮৫ কিমি পিচ রাস্তার মেরামতিকরণের কাজ শুরু হয়েছে প্রায় ৮০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে। শনিবার দুপুরে ওই রাস্তার কাজের আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন জেলাশাসক সুমিত গুপ্ত ও ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক সওকাত মোল্লা, অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) সৌমেন পাত্র, এসআরডিএর এগজ়িকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার অনিন্দ্য গুহ, ক্যানিং ২ ব্লক ও সাগরের বিডিও-সহ অন্য আধিকারিকেরা।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, এই ‘পরিবেশবান্ধব’ প্রক্রিয়াটি ব্যবহার করে আরও ভাল করে রাস্তা নির্মাণ ও মেরামত করা সম্ভব। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, বিটুমিনের ওজনের ৬-৮ শতাংশ অংশ প্লাস্টিক বর্জ্য দিয়ে প্রতিস্থাপন করে সুদৃঢ়, মজবুত, স্থিতিশীল রাস্তা নির্মাণ বা মেরামত সম্ভব। এই প্লাস্টিক টুকরোর মাপ ২.৩৬ মিমি থেকে ৬০০ মাইক্রন এবং অনধিক ২ মিমি চওড়া হতে হবে। শুধুমাত্র বিটুমিন দিয়ে এই রাস্তা করা হলে ২৬.৫৫ টন বিটুমিন প্রয়োজন হত। কিন্তু এ ক্ষেত্রে ৮ শতাংশ প্লাস্টিক বর্জ্য অর্থাৎ ২.১২ টন প্লাস্টিক ব্যবহার করার ফলে ২৪.৪৩ টন বিটুমিনেই রাস্তার কাজ করা গিয়েছে।
জেলাশাসক বলেন, ‘‘প্লাস্টিক ব্যবহারের ফলে পরিবেশ যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তেমনই বাস্তুতন্ত্র নষ্ট হচ্ছে। আমরা বিভিন্ন ভাবে চেষ্টা করছি প্লাস্টিকের ব্যবহার যতটা সম্ভব কম করার। এই পদ্ধতিতে রাস্তার কাজ হলে পরিবেশের ভারসাম্য অনেকংশে রক্ষা করা সম্ভব হবে।’’ সওকাতের কথায়, ‘‘জেলার মধ্যে প্রথম এখানে এ ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করে রাস্তার কাজ শুরু হয়েছে। আমরা আশা করছি, এর ফলে রাস্তা অনেক মজবুত হবে। আগামী দিনে সমস্ত জেলা তথা রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে এই প্রযুক্তিতে রাস্তা হবে।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)