Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪
Barasat Accident

বাগুইআটিতে বাস থেকে পড়ে মৃত্যু একাদশের পড়ুয়ার, বারাসত হাসপাতালে বিক্ষোভ পরিবারের

স্কুল থেকে ফেরার পথে বাগুইআটিতে বাস থেকে পড়ে মৃত্যু হয় একাদশ শ্রেণির পড়ুয়ার। সেখান থেকে তাকে বারাসত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অভিযোগ, পরিবারকে খবর দেওয়া হয়নি।

(বাঁ দিকে) মৃত পড়ুয়া অঙ্গীকার দাশগুপ্ত। মৃতের পরিবার (ডান দিকে)।

(বাঁ দিকে) মৃত পড়ুয়া অঙ্গীকার দাশগুপ্ত। মৃতের পরিবার (ডান দিকে)। — নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
বারাসত শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০২৪ ১৬:৩০
Share: Save:

বাগুইআটিতে স্কুল থেকে ফেরার পথে বাস থেকে পড়ে মৃত্যু হল একাদশ শ্রেণির পড়ুয়ার। তাঁকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বারাসত হাসপাতালে। খবর পেয়ে সেখানে যায় মৃত ছাত্রের পরিবার। তাঁরা হাসপাতালে গিয়ে বিক্ষোভ দেখান। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়।

বাগুইআটির হলদিরামসের কাছে বাস থেকে পড়ে যায় একাদশ শ্রেণির অঙ্গীকার দাশগুপ্ত। স্কুল থেকে ফেরার জন্য বাস ধরেছিল সে। তাকে গুরুতর জখম অবস্থায় উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে নিয়ে যাওয়া হয় বারাসত হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসকেরা কিশোরকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। অভিযোগ, পুলিশ বা হাসপাতালের তরফে পরিবারকে এই দুর্ঘটনার খবর দেওয়া হয়নি। পরিবারের সদস্যেরা দুর্ঘটনার কথা জানতেনই না। যত ক্ষণে তাঁরা খবর পেয়ে হাসপাতালে পৌঁছন, তত ক্ষণে কিশোরের দেহ পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে হাসপাতালের মর্গে।

বারাসত হাসপাতালে গিয়ে কিশোরের খোঁজ করেন পরিবারের সদস্যেরা। দেহ পরিবারকে না দেখিয়েই মর্গে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে শুনে ক্ষোভে ফেটে পড়েন সন্তানহারা বাবা-মা। হাসপাতালে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। বারাসত থানা থেকে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করে। অভিযোগ, এই সময়ে পুলিশকে ঘিরেও বিক্ষোভ দেখান মৃতের পরিবারের সদস্যেরা। তাঁদের বারাসত থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। পরে অবশ্য তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

বাগুইআটির হলদিরামসের কাছে দুর্ঘটনার পর কেন বারাসতে নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন হল ছাত্রকে, তার ব্যাখ্যা মেলেনি। পরিবারেরও অসন্তোষ মূলত এই বিষয়টিকে কেন্দ্র করেই। তাঁদের বক্তব্য, বাগুইআটিতে কাছাকাছি এত হাসপাতাল থাকতে কেন বারাসতে নিয়ে যাওয়া হল? কেনই বা খবর দেওয়া হল না পরিবারকে?

মৃতের মা বলেন, ‘‘স্কুল থেকে বেরিয়ে ও ফোন করেছিল। পরে রিকশাওয়ালার কাছ থেকে শুনলাম, দুর্ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় হাসপাতালে ছুটে গিয়েছিলাম, সেখানেও ওকে পেলাম না। পুলিশকে জিজ্ঞাসা করলাম, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জিজ্ঞাসা করলাম, কেউ কিছু বলল না। পরে শুনলাম বারাসত হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছে। এত হাসপাতাল থাকতে কেন এত দূরে নিয়ে এল? বারাসত হাসপাতাল থেকে আমাদের বলা হয়েছে, পুলিশ নাকি ওকে বাইরে ফেলে দিয়ে চলে গিয়েছে।’’

মৃতের পরিবারের এক সদস্য বলেন, ‘‘পুলিশ আমাদের কোনও খবর দেয়নি। ছেলের স্কুলের পরিচয়পত্র ওর সঙ্গেই ছিল। পুলিশের উচিত ছিল সেই পরিচয়পত্র দেখে প্রথমেই বাবা-মাকে খবর দেওয়া। তা তারা করেনি। আমরা রিকশাওয়ালার কাছ থেকে দুর্ঘটনার খবর পাই। গিয়ে শুনি, স্থানীয় হাসপাতালে যখন ওকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, তখনও বেঁচে ছিল। বারাসত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরে ও মারা যায়। হাসপাতালের কাছ থেকে সদুত্তর মেলেনি।’’

বারাসত পুলিশ জানিয়েছে, হলদিরামসের কাছ থেকে ট্র্যাফিক পুলিশ কিশোরকে বারাসত হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিল। সেখানে মৃতদেহ মর্গে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। তা নিয়ে পরিবারের সঙ্গে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বচসা হয়েছে। পরে পুলিশের সঙ্গে মর্গে গিয়ে ছেলের দেহ দেখে এসেছেন পরিবারের লোকজন।

পুলিশ আরও জানিয়েছে, মৃতের পরিবারের সদস্যদের মারধর, হেনস্থার যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে, তা ভুল। বরং, হাসপাতালে পুলিশ পৌঁছলে সন্তানহারা বাবা-মা তাদের আধিকারিকদের উপরেই চড়াও হয়েছিলেন। সে সময়ে পুলিশের অন্য একটি দল সেখানে পৌঁছে তাঁদের থানায় নিয়ে যায়। থানা থেকে পরিবারের অন্য সদস্যদের ডেকে পাঠানো হয় এবং তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হয় শোকস্তব্ধ বাবা এবং মাকে।

অন্য বিষয়গুলি:

Barasat Agitation Baguiati Student Death
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE