Advertisement
০৩ মে ২০২৪
Joynagar Murder

‘আমার কাজ হয়ে গেছে’! সইফুদ্দিনকে খুনের পর ফোন করেন সেই শাহরুল, নতুন তথ্য জয়নগরকাণ্ডে

জয়নগরকাণ্ডে ধৃত ওই যুবকের কাছ থেকে আগ্নেয়াস্ত্র, ব্যবহার হওয়া কার্তুজ এবং তৃণমূল নেতা সইফুদ্দিনের ছবি মিলেছে। পুলিশ বলছে, ‘টার্গেট’ যাতে ‘মিস’ না হয়, সে জন্য তাঁকে ওই ছবি দেওয়া হয়েছিল।

জয়নগরকাণ্ডে ধৃত শাহরুল শেখ।

জয়নগরকাণ্ডে ধৃত শাহরুল শেখ। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
জয়নগর শেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০২৩ ২১:১৩
Share: Save:

তৃণমূল নেতা সইফুদ্দিন লস্করকে তিনি গুলি করেননি। গ্রেফতারির পর এমনটাই দাবি করেছিলেন শাহরুল। কিন্তু তদন্ত যত এগোচ্ছে, ততই শাহরুলের ভূমিকা স্পষ্ট হচ্ছে। পুলিশের দাবি, শাহরুলই গুলি চালিয়েছিলেন। এমনকি, গত ১৩ নভেম্বর সকালে সইফুদ্দিনকে গুলি করে জয়নগরকাণ্ডের ‘মূল অভিযুক্ত’ আনিসুর লস্করকে এক বার ফোনও করেন তিনি।

১০ দিনের পুলিশি হেফাজত শেষে শুক্রবার বারুইপুর আদালতে তোলা হয় শাহরুলকে। তদন্তকারীদের দাবি, ধৃতের কাছ থেকে যে সব জিনিস পাওয়া গিয়েছে, সেখান থেকে স্পষ্ট হচ্ছে যে, খুনের ঘটনায় তিনি সরাসরি জড়িত। জয়নগরকাণ্ডে ধৃত ওই যুবকের কাছ থেকে একটি মানিব্যাগ পাওয়া যায়। তা ছাড়াও, আগ্নেয়াস্ত্র মিলেছে। পাওয়া গিয়েছে ব্যবহার হওয়া কার্তুজ এবং তৃণমূল নেতা সইফুদ্দিনের ছবি। পুলিশ মনে করছে ‘টার্গেট’ যাতে ‘মিস’ না হয়, সে জন্য আগে থেকেই ওই ছবি দেওয়া ছিল শাহরুলকে। ধৃতের মানিব্যাগে মিলেছে তাঁর আধার এবং প্যানকার্ডও।

পুলিশ সূত্রে খবর, গত ১৩ নভেম্বর তৃণমূল নেতা সইফুদ্দিনকে খুন করার জন্য দু’টি বাইকে মোট পাঁচ জন এসেছিলেন। আর তাঁদের মধ্যে ধৃত শাহরুলই গুলি চালান। খুনের পর তিনি আনিসুরকে ফোন করে জানান যে তাঁর কাজ হয়ে গিয়েছে। উল্লেখ্য, ওই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত সব মিলিয়ে তিন জন পলাতক। তাদের খোঁজে নানা জায়গায় তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ। অন্য দিকে, যে আনিসুরকে শাহরুল ফোন করেছিলেন, তাঁকে নদিয়ার হরিণঘাটা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁকেই এই খুনের ‘মাস্টারমাইন্ড’ বলা হচ্ছে। আদতে জয়নগরের দলুয়াখাকির বাসিন্দা। নিহত তৃণমূল নেতার পরিবারের পক্ষ থেকে যে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে, সেখানেও নাম রয়েছে আনিসুরের। পুলিশ সূত্রে খবর, জয়নগরকাণ্ডে ধৃত শাহরুল যে ‘বড়ভাই’-এর কথা সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছিলেন, তাঁর নাম আলাউদ্দিন সাঁপুই। তিনি মন্দিরবাজার থানা এলাকার টেকপাঁজা গ্রামের বাসিন্দা। এলাকায় আলাউদ্দিন সিপিএম নেতা হিসাবে পরিচিত।

তদন্তকারীদের একটি সূত্রের মত, প্রত্যেকের দায়িত্ব ভাগ করা ছিল। কেউ খুনের ছক কষেছেন, কেউ কেউ আবার সেই পরিকল্পনায় অর্থ দিয়ে সাহায্য করেছেন। সইফুদ্দিনের উপর দিনের পর দিন নজর রাখার দায়িত্ব ছিল শাহরুলের উপর। সাহাবুদ্দিনের দায়িত্ব ছিল তৃণমূল নেতাকে গুলি করার। সাহাবুদ্দিন ও শাহারুলকে খুনের বরাত দিয়েছিল নাসির এবং সেই ‘বড় ভাই’। আর এই গোটা পরিকল্পনার পিছনে ছিলেন আনিসুর ও কামালউদ্দিন। আর টাকাপয়সার জোগান দিয়ে সাহায্য করেছেন অন্তত দুই-তিন জন। তাঁদের মধ্যে এক সইফুদ্দিনের নিকটাত্মীয়ও রয়েছেন বলেও মনে করছে তদন্তকারীদের ওই অংশ। এ ব্যাপারে অবশ্য পুলিশের তরফে সরকারি ভাবে কিছু জানানো হয়নি। খুনের ঘটনায় বারুইপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পার্থ ঘোষের নেতৃত্বে একটি দল গঠন করা হয়েছে। মোট ১১ জন পুলিশ অফিসার আছেন এই দলে। পুলিশ সূত্রে দাবি, পরিকল্পনামাফিকই হয়েছে গোটা অপারেশন। এর জন্য সব মিলিয়ে পাঁচ লক্ষ টাকা খরচ করা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Joynagar Murder joynagar TMC leader murder arrest
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE