Advertisement
E-Paper

একা ‘কুম্ভ’ তৃণমূল, নকল গড়ে অন্যেরা

জমি প্রায় প্রস্তুত। তাই জেতা নিয়েই তেমন কোনও সংশয় নেই শাসক দল তৃণমূলের। গত বারের পুর-নির্বাচন থেকে শুরু করে বিধানসভা, লোকসভার ফলের নিরিখে শাসক দল কয়েক কদম এগিয়ে থাকার কারণেই হয়তো প্রধান বিরোধী দল বামফ্রন্টও এই তত্ত্বে সে ভাবে আপত্তি করছে না। চিরকালই ‘লাল দুর্গ’ বলে পরিচিত খড়দহ পুরসভা চল্লিশ বছরের বেশি সময় ধরে ছিল বামেদের দখলে। ২০১০ সালের পুরভোটে সেখানে প্রথম আঘাত হানে তৃণমূল।

শান্তনু ঘোষ ও বিতান ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০১৫ ০১:৪৩

জমি প্রায় প্রস্তুত। তাই জেতা নিয়েই তেমন কোনও সংশয় নেই শাসক দল তৃণমূলের। গত বারের পুর-নির্বাচন থেকে শুরু করে বিধানসভা, লোকসভার ফলের নিরিখে শাসক দল কয়েক কদম এগিয়ে থাকার কারণেই হয়তো প্রধান বিরোধী দল বামফ্রন্টও এই তত্ত্বে সে ভাবে আপত্তি করছে না।

চিরকালই ‘লাল দুর্গ’ বলে পরিচিত খড়দহ পুরসভা চল্লিশ বছরের বেশি সময় ধরে ছিল বামেদের দখলে। ২০১০ সালের পুরভোটে সেখানে প্রথম আঘাত হানে তৃণমূল। মোট ২২টি আসনের মধ্যে প্রথমে ১৩টি আসনে জয়ী হয়ে পুরসভার ক্ষমতায় আসে তারা। ৭টি আসন পায় বামেরা। বাকি ২টি আসনে জয়ী হন নির্দল প্রার্থী। পরে এক জন নির্দল কাউন্সিলর তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় পুর-বোর্ডে শাসক দলের আসন বেড়ে দাঁড়ায় ১৪।

ফের আঘাত আসে ২০১১-এর বিধানসভা নির্বাচনে। ১৯৬২ থেকে ২০১১ টানা ৪৯ বছর বামেদের দখলে থাকা খড়দহ বিধানসভায় ঘাসফুল ফোটান তৃণমূলের বর্তমান অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। শেষ ২৪ বছরের সিপিএম বিধায়ক তথা রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অসীম দাশগুপ্তকে প্রায় ২৬ হাজার ভোটে হারান তিনি। ২০১৪ এর লোকসভা ভোটে খড়দহ পুরসভার নিরিখে প্রায় ৭ হাজার ভোটে জয়ী হয় তৃণমূল। এখানেও পরাজিত হন অসীমবাবু। টানা ২৪ বছর এলাকার সিপিএম বিধায়ক হওয়া সত্ত্বেও দমদম লোকসভা ভোটের প্রার্থী হয়ে খড়দহের একটিমাত্র ওয়ার্ডে জয়ী হন তিনি।

এ বারের পুরভোটে কি তেমন কোনও ছাপ ফেলতে পারবে বামেরা?

সদুত্তর না মিললেও এলাকার ছোট-বড় সব বাম নেতাই পুরভোটে আইনশৃঙ্খলার প্রশ্ন তুলে বলছেন, ‘‘অবাধ ভোট হলে বামেরাই ক্ষমতায় আসবে।’’ সিপিএমের খড়দহ-টিটাগড় আঞ্চলিক কমিটির সম্পাদক তথা উত্তর ২৪ পরগনার জেলা কমিটির সদস্য কল্যাণ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মানুষ ভোট দিতে পারলে বামেরাই জয়ী হবে।’’ কিন্তু স্থানীয় রাজনৈতিক মহলে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে, খড়দহে বামেদের শক্ত ঘাঁটিতে এখন প্রধান সমস্যা সংগঠনের দুর্বল নেতৃত্ব।

বরাবর খড়দহ পুরসভা বামেদের দখলে থাকলেও একটিমাত্র ওয়ার্ডে (আগেকার ৭ নম্বর, বর্তমান ১৩ নম্বর) ১৯৮৬ সাল থেকেই জয়ী হয়ে আসছেন নির্দল প্রার্থী। এ বারও সেখানে তির-ধনুক চিহ্নে নাগরিক অধিকার রক্ষা কমিটির হয়ে পুর-যুদ্ধে নেমেছেন এক সময়ের সিপিএম কর্মী স্বপন সাহা। এ বারের ভোটে নির্দল প্রার্থীর সংখ্যা ৫। এর মধ্যে এক মহিলা প্রার্থী তৃণমূলের বিদায়ী কাউন্সিলর। আর এক জন নির্দল গত বার তৃণমূলের সমর্থনে জিতেছিলেন।

প্রতিটি ওয়ার্ডে প্রার্থী দিলেও সংগঠনগত ভাবে এখনও তাঁরা দুর্বল বলেই মনে করেন বিজেপি নেতৃত্বও। তবে উত্তর শহরতলির জেলা সভাপতি গোপাল সরকার বলেন, ‘‘দুর্বল হলেও বিজেপি অন্তত ২টি আসন পাবেই।’’ ১৫টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে কংগ্রেস। জেলা সভাপতি তাপস মজুমদার বলেন, ‘‘তৃণমূলের সন্ত্রাসের জন্য কতটা অবাধ ভোট হবে, তা নিয়েই সংশয় রয়েছে।’’

তবে পুরভোটে কোনও লড়াই থাকবে না তেমনটাও কিন্তু নয়। আসলে খড়দহ পুরভেটের ‘ঠান্ডা লড়াই’টা অন্য জায়গায়। আর সেটা চলছে খোদ তৃণমূলের অন্দর মহলেই। নিজেদের জয়ের সম্ভবনা একশো শতাংশ ধরে নিয়েই পুর বোর্ডের প্রধান কে হবেন তা নিয়েই শুরু হয়েছে বিভিন্ন নেতার লড়াই। যদিও প্রকাশ্যে দলের জেলা পর্যবেক্ষক নির্মল ঘোষের বক্তব্য: ‘‘এ সব বাজে প্রচার। দল যা ঠিক করবে, তাই হবে। আমাদের প্রধান লক্ষ্য নিজেদের আসন বৃদ্ধি করা।’’

shantanu ghosh bitan bhattacharya Southbengal Municipal election trinamool TMC CPM congress bjp loksava election
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy