Advertisement
E-Paper

সিপিএম-খুনে ধৃত তৃণমূল নেতা

বাপুজি এলাকার সিপিএম কর্মী নরোত্তম মণ্ডল খুন হওয়ার পরেই এলাকা ছেড়ে গা ঢাকা দিয়েছিলেন তৃণমূলের বাপুজি অঞ্চল সভাপতি তথা ঘটনায় মূল অভিযুক্ত বিশ্বনাথ পাত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০১:৫১
বিশ্বনাথ পাত্র।

বিশ্বনাথ পাত্র।

বাপুজি এলাকার সিপিএম কর্মী নরোত্তম মণ্ডল খুন হওয়ার পরেই এলাকা ছেড়ে গা ঢাকা দিয়েছিলেন তৃণমূলের বাপুজি অঞ্চল সভাপতি তথা ঘটনায় মূল অভিযুক্ত বিশ্বনাথ পাত্র। পুলিশের দাবি, মোবাইলের সিম কার্ড পাল্টে কাকদ্বীপ থেকে হলদিয়া হয়ে পাড়ি দিয়েছিলেন ওড়িশায় কোনও এক আত্মীয়ের বাড়িতে। কিন্তু লুকিয়ে এলাকায় ফিরতেই বুধবার সন্ধ্যায় ধরা পড়ে গেলেন তিনি। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘আমরা অভিযুক্তের পুরনো মোবাইলের আইএমইআই নম্বর জোগাড় করে ট্র্যাক করছিলাম। অনেকবারই খুব কাছে এসেও হাতছাড়া হয়ে যান বিশ্বনাথ। কিন্তু এ বার খবর পেতেই চার দিক থেকে ঘিরে ফেলা হয় এলাকা।’’

নিহত সিপিএম কর্মীর স্ত্রী প্রমীলাদেবী বলেন, ‘‘মূল অভিযুক্ত বিশ্বনাথ-সহ আরও দু’তিন জন। তাদের সকলের দৃষ্টান্তমূলক সাজা চাই।’’

২০ জুলাই সকালে কাকদ্বীপের বাপুজি অঞ্চলের সিপিএম সমর্থক নরোত্তম মণ্ডলকে ১৩ নম্বর চণ্ডীপুর বাজারে তৃণমূল পার্টি অফিসের সামনে ধরে পিটিয়ে মারে কিছু লোক।

২১ জনের নামে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন প্রমীলাদেবী। অভিযোগের কেন্দ্রে ছিলেন বিশ্বনাথ পাত্র এবং আর এক তৃণমূল নেতা সুভাষচন্দ্র গুড়িয়া। যদিও কাকদ্বীপের তৃণমূল নেতা তথা সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী মন্টুরাম পাখিরা দাবি করেছিলেন, সুভাষবাবু ঘটনার দিন নামখানায় ছিলেন। বিশ্বনাথের গ্রেফতার প্রসঙ্গে মন্টুবাবু এ দিন বলেন, ‘‘আইন আইনের পথে চলবে। তবে ওই মামলায় এ রকম অনেকের নাম জড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।’’ তাঁদের মধ্যে বিশ্বনাথ আছেন কিনা, তা অবশ্য স্পষ্ট করেননি মন্ত্রী।

দলে বিশ্বনাথের ঘনিষ্ঠ একটি অংশের দাবি, ঘটনার সময়ে বিশ্বনাথ এলাকায় ছিলেন না। বরং পরে খবর পেয়ে এসে মুমূর্ষু নরোত্তমকে ভ্যানে করে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন।

এই নিয়ে এফআইআরে নাম থাকা তিন জন গ্রেফতার হল। আগে আরও দুই অভিযুক্ত এবং তৃণমূল সমর্থক নিমাই হালদার এবং রেজাউল লস্করকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সকলের বিরুদ্ধে মারধর, আঘাত করা এবং খুনের মামলা রুজু হয়েছে। দলের একটি অংশ দাবি করছে, বাপুজি এলাকায় এক সময়ে ভ্যান চালাতেন বিশ্বনাথ। সে সময়েই ছোটখাট অপরাধে হাত পাকানো শুরু তাঁর। তৎকালীন সিপিএম সমর্থক বিশ্বনাথকে এলাকার তৃণমূল নেতারা ‘মাসলম্যান’ হিসেবে নিয়োগ করে ২০০৮ সাল থেকে। তখন থেকেই তাঁর উত্থান শুরু। কাকদ্বীপ থানায় বিশ্বনাথের নাম ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’-এর তালিকায় ছিল তৃণমূল ক্ষমতায় আসার আগে পর্যন্ত। পুলিশ পেটানোর অভিযোগও উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে।

২০১৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে টিকিট পাওয়ার পরে জিতে কাকদ্বীপ পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য হন তিনি। অভিযোগ, পদ পাওয়ার পরেই হিংস্র আর প্রভাবশালী হয়ে ওঠেন বিশ্বনাথ। প্রমীলাদেবী বলেন, ‘‘কেউ কিছু করলেই চণ্ডীপুরে দলীয় অফিসে নিয়ে গিয়ে প্রচণ্ড মারধর করা হতো। এলাকায় বিরোধীদের থেকে ২-৫ লক্ষ টাকা করে জরিমানা আদায়, সামাজিক বয়কটের ফতোয়া বিশ্বনাথই দিত।’’ বিভিন্ন ঝামেলার সালিশি করে, চাপ দিয়ে টাকা আদায়, পুজো অনুষ্ঠান উপলক্ষে এলাকার স্কুলের শিক্ষকদের কাছ থেকেও মোটা টাকার চাঁদা আদায়ের ঘটনায় নাম জড়িয়েছে বিশ্বনাথের। আর এ ভাবেই এক সময়ের ভ্যান চালক বিশ্বনাথ কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি করেছেন নিজের নামে।

CPM TMC leader Murder Police arrest
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy