Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Manipur

Manipur landslide: চোখের জলে, গান স্যালুটে শেষ বিদায় দুই জওয়ানকে

সকাল থেকেই এ দিন তিলধারণের জায়গা ছিল না ঘোড়ারাসের উত্তরপাড়ায় মহিউদ্দিনের বাড়ির আশেপাশে।

সেনার তরফে শেষ শ্রদ্ধা সন্তুকে (বাঁ দিকে)। গান স্যালুট মহিউদ্দিনকে (ডান দিকে)।

সেনার তরফে শেষ শ্রদ্ধা সন্তুকে (বাঁ দিকে)। গান স্যালুট মহিউদ্দিনকে (ডান দিকে)। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক, নির্মল বসু

নিজস্ব সংবাদদাতা
বসিরহাট, বনগাঁ শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২২ ০৭:৫৭
Share: Save:

মণিপুরে ধসে মৃত উত্তর ২৪ পরগনার দুই জওয়ানের দেহ ফিরল এলাকায়। রবিবার চোখের জলে তাঁদের বিদায় জানালেন আত্মীয়-পরিজন, গ্রামবাসীরা। সেনার তরফে দেওয়া হয় গান স্যালুট।

বুধবার মণিপুরের টুপুলে সেনা ব্যারাকের উপরে ধস নামে। তাতে তলিয়ে যান বহু সেনা। বেশ কয়েকজনের দেহ উদ্ধার হয়। মৃতদের মধ্যে রয়েছেন গোপালনগরের বারাকপুরের বাসিন্দা সন্তু বন্দ্যোপাধ্যায় ও মাটিয়ার ঘোড়ারাস এলাকার বাসিন্দা শেখ মহিউদ্দিন আহমেদ। দু’জনেই ভারতীয় সেনাবাহিনীর গোর্খা রেজিমেন্টে কর্মরত ছিলেন। রবিবার দুপুরে কলকাতা বিমানবন্দরে পৌঁছয় দুই সেনার দেহ।

এ দিন বেলা ৩টে ২০ মিনিট নাগাদ শববাহী গাড়িতে কফিনবন্দি হয়ে সন্তুর দেহ পৌঁছয় বারাকপুরে। সকাল থেকে পাড়ার ছেলের ফেরার অপেক্ষায় ছিলেন গ্রামবাসীরা। অনেকের বাড়িতে হাঁড়ি চড়েনি। শববাহী গাড়ি গ্রামের রাস্তায় ঢুকতেই প্রতিটি বাড়ির সামনে, রাস্তার দু’পাশে মহিলা-পুরুষেরা জড়ো হয়ে যান। অনেকে বাড়ির ছাদেদাঁড়িয়ে ছিলেন।

সন্তুর বাড়ির সামনে উপচে পড়ছিল ভিড়। আশপাশের গ্রাম থেকেও শ’য়ে শ’য়ে মানুষ জড়ো হয়েছিলেন। গাড়ি থেকে কফিনবন্দি দেহ নামতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন সন্তুর বাবা গোপাল, মা সন্ধ্যা, স্ত্রী জয়া। চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি আত্মীয়, পরিজন, প্রতিবেশীরাও।

বনগাঁর পুরপ্রধান গোপাল শেঠ এ দিন সকালেই পৌঁছে যান সন্তুর বাড়িতে। সঙ্গে ছিলেন বনগাঁ পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সৌমেন দত্ত, জেলাপরিষদ সদস্য শ্যামল রায়। পরে সন্তুর বাড়িতে যান কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর এবং বনগাঁ উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক অশোক কীর্তনীয়া। শান্তনু বলেন, “সমবেদনা জানানোর ভাষা নেই। আমরা পরিবারটির পাশে আছি।” বনগাঁ জেলা পুলিশের পক্ষ থেকেও শ্রদ্ধা জানানো হয় সন্তুকে। বিকেলে দেহ আনা হয় বনগাঁ শ্মশানে। পুরসভার উদ্যোগে সন্তুর ছবি দেওয়া কাটআউটে সাজানো ছিল শ্মশান। সেখানেই সন্তুকে গান স্যালুট দেওয়া হয় সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে।

আর এক জওয়ান মহিউদ্দিনের দেহও ঘোড়ারাস গ্রামে পৌঁছয় সাড়ে ৩টে নাগাদ। ঘোড়ারাস বাজার থেকে কফিন কাঁধে প্রায় এক কিলোমিটার হেঁটে মহিউদ্দিনের বাড়িতে পৌঁছন সেনারা। সকাল থেকেই এ দিন তিলধারণের জায়গা ছিল না ঘোড়ারাসের উত্তরপাড়ায় মহিউদ্দিনের বাড়ির আশেপাশে। গ্রামের ছেলেকে শেষ দেখা দেখতে শ’য়ে শ’য়ে মানুষ জড়ো হয়েছিলেন। কফিনবন্দি দেহ এলাকায় পৌঁছতেই বাঁধ ভাঙে ভিড়। দেহ বাড়িতেঢুকতেই বছর দেড়েকের ছেলেকে কোলে নিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন মহিউদ্দিনের স্ত্রী। পরে স্থানীয় স্কুল মাঠে জানেজার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় দেহ। সেখান থেকে দেহ নিয়ে যাওয়া হয় কবরস্থানে। গান স্যালুট সহযোগে কবরস্থ হয় জওয়ানের দেহ। এ দিন শ্রদ্ধা জানাতে উপস্থিত ছিলেন বসিরহাট ২ বিডিও জয়দীপ চক্রবর্তী, সাউথ বেঙ্গল স্টেট ট্রাসপোর্ট দফতরের ডিরেক্টর এটিএম রনি, মাটিয়ার এসডিপিও অভিজিৎ সিংহ মহাপাত্র, তৃণমূলের জেলা সভাপতি তাপস ঘোষ-সহ অনেকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Manipur landslide
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE