চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, বাসন্তী ব্লকে বহু মানুষের মধ্যে সচেতনতার বার্তা এখনও সঠিক ভাবে পৌঁছয়নি। দ্বিতীয়ত, এই এলাকায় প্রচুর নাবালিকা বিয়ের পর মা হচ্ছেন, ফলে প্রশাসনিক ঝঞ্ঝাট এড়াতেই সরকারি হাসপাতালে যেতে চাইছেন না তারা। তৃতীয়ত, সরকারি হাসপাতালে শয্যার অপ্রতুলতা। ৩০ শয্যা বিশিষ্ট বাসন্তী হাসপাতালে সব সময় প্রায় শতাধিক রোগী চিকিৎসার জন্য ভর্তি থাকেন। ফলে প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে হাসপাতালে এলেও অনেক সময় শয্যা পান না অন্তঃসত্ত্বা মহিলারা। সেই কারণেও অনেকেই হাসপাতালে আসতে চান না।
তা ছাড়া গ্রামে এখনও দাইমাদের হাতে প্রসবেই অনেকে বিশ্বাস করেন। তাই হাসপাতালমুখো হন না তাঁরা। বাসন্তীর ৬ নম্বর সোনাখালি গ্রামের বাসিন্দা রুবিনা মোল্লা, হায়তুন লস্কররা বলেন, “আমরা ছোট থেকে দেখে এসেছি দাইমাই প্রসব করাচ্ছেন। এখনও আমরা তাঁদের উপরেই ভরসা করি।’’
কিছু কিছু স্বাস্থ্যকর্মীদের নিজেদের কাজ সঠিকভাবে না করার কারণেই একশো শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক প্রসব এখনও সম্ভব হয়নি এই ব্লকে।
তবে এই সব প্রতিবন্ধকতাকে কাটিয়েও অন্তঃসত্ত্বারা যাতে প্রসবের জন্য সরকারি হাসপাতালেই আসেন সে বিষয়ে বাসন্তী ব্লক স্বাস্থ্য দফতরের তরফ থেকে প্রতিনিয়ত আশাকর্মীদের দিয়ে বাড়ি বাড়ি প্রচার চালানো হচ্ছে। গর্ভবতী মহিলাদের স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখা হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এমনকী, বাড়িতে দাইমাদের কাছে বা গ্রামীণ চিকিৎসকদের কাছে প্রসব বন্ধ করতে বিডিও, বিএমওএইচ সকলে মিলে গ্রামে গ্রামে অভিযানও চালাচ্ছেন। বেশ কিছু বেসরকারি নার্সিংহোম যাদের পরিকাঠামো ঠিক মতো নেই স্বাস্থ্য দফতরের তরফ থেকে সেগুলির লাইসেন্সও বাতিল করা হচ্ছে।
এ সব কিছুই করা হচ্ছে একশো শতাংশ প্রসব প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে করার লক্ষ্যে। বাসন্তী ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক সৈকত বেরা বলেন, ‘‘আমরা প্রতিনিয়ত চেষ্টা করছি, আশা করি সাধারণ মানুষ সমস্যার কথা বুঝতে পারবেন ও আমরা দ্রুতই একশো শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক প্রসবের লক্ষ্যমাত্রা ছুঁতে পারব।’’
এ বিষয়ে বাসন্তীর বিডিও সৌগত সাহা বলেন, “ব্লক স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে যৌথভাবে এ বিষয়ে ব্লক প্রশাসন কাজ করছে। আমরাও চাই দ্রুত এই সমস্যার সমাধান হোক।’’