Advertisement
E-Paper

ধর্ষণ নিয়েই অভিযোগই আসছে না মহিলা থানায়

সঠিক প্রচার এবং ন্যূনতম পরিকাঠামোর অভাবে ব্যাহত হচ্ছে ডায়মন্ড হারবার মহিলা থানার কাজের গতি। নারী নির্যাতন ও নারী পাচারে প্রথম সারিতে থাকা দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় থাকলেও গত চার মাসে থানায় ধর্ষণের ঘটনা নথিভুক্ত করতে বা অভিযোগ জানাতে আসেননি কোনও ধর্ষিতা বা তাঁর পরিবার।

শান্তশ্রী মজুমদার

শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০১৪ ০২:০৭
এখনও মানুষের আস্থা অর্জন করতে পারল না এই থানা।

এখনও মানুষের আস্থা অর্জন করতে পারল না এই থানা।

সঠিক প্রচার এবং ন্যূনতম পরিকাঠামোর অভাবে ব্যাহত হচ্ছে ডায়মন্ড হারবার মহিলা থানার কাজের গতি। নারী নির্যাতন ও নারী পাচারে প্রথম সারিতে থাকা দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় থাকলেও গত চার মাসে থানায় ধর্ষণের ঘটনা নথিভুক্ত করতে বা অভিযোগ জানাতে আসেননি কোনও ধর্ষিতা বা তাঁর পরিবার।

দিল্লিতে নির্ভয়া কাণ্ডের পর রাজ্যে বেশ ঘটা করে চালু হয়েছিল বেশ কিছু মহিলা থানা। গত ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ডায়মন্ড হারবারেও কাজ শুরু করে সম্পূর্ণ মহিলা পুলিশকর্মীদের দ্বারা পরিচালিত থানা।

মহকুমার ৫টি থানা এলাকায় মহিলাদের উপর শারীরিক নির্যাতন, ধর্ষণ, পাচার এবং বধূ নির্যাতনের মতো অপরাধের বিরুদ্ধে আরও গভীর ও সংবেদনশীল ভাবে লড়াইয়ের কথা ছিল মহিলা থানার। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, গত ৫ মাসে মহকুমার অন্য পাঁচ থানায় প্রায় ১৫টি ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের হয়েছে, অথচ মহিলা থানায় আসেননি কেউই।

অপ্রাপ্তবয়স্ক মহিলাদের উপরে হওয়া যে-কোনও অপরাধের বিরুদ্ধে কাজ করছে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। তার ডায়মন্ড হারবার ইউনিটের প্রধান আশুতোষ মল্লিক বলেন, “আমরা কাজ করতে গিয়ে দেখেছি, সাধারণ মানুষের মধ্যে মহিলা থানা সম্পর্কে সচেতনতার অভাব রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আরও প্রচার দরকার। মানুষ জানলে তবে তো অভিযোগ দায়ের হবে।”

মহকুমার মহিলা থানায় অভিযোগ যে দায়ের হচ্ছে না, তা নয়। তবে যেগুলি হচ্ছে তা ধর্ষণ বা পাচারের মতো ভয়ংকর নয়। জেলা পুলিশ সূত্র বলছে, গত ৫ মাসে প্রায় ১০টি বাড়ি থেকে পালানোর অভিযোগ দায়ের হয়েছে থানায়। ন্যূনতম পরিকাঠামো নিয়েই প্রতিটি ঘটনায় দ্রুততা এবং তৎপরতার সঙ্গে উদ্ধার করা হয়েছে নাবালিকাদের। পুলিশের দাবি, ঘটনা নথিভুক্ত হওয়ার ১-৪ দিনের মাথায় কিনারা হয়েছে এই সব ঘটনার। বধূ নির্যাতন, মহিলাদের মধ্যে মারামারি, শ্লীলতাহানির মতো আরও প্রায় ৩০টি ঘটনার তদন্ত চলছে। কিন্তু অপহরণ এবং ধর্ষণের ঘটনা আসছে না থানায়। তবে এর জন্য পরিকাঠামোকেও দায়ী করছেন জেলা পুলিশ কর্তাদের একটি অংশ। সূত্রের খবর, পুরো একটি থানা চলছে ৩ জন অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব ইন্সপেক্টরের নেতৃত্বে।

তাঁদের দুজনের যদিও এখনও শিক্ষানবিশ পর্ব শেষ হয়নি। মহিলা কনস্টেবল ৫ জন, মহিলা হোমগার্ড ২ জন আছেন এখানে। তাঁরা নির্দিষ্ট সময় মতো ছুটিছাটা পান না। থানার গাড়ি একটি। টহলদারির কোনও ব্যবস্থা নেই। মহিলা লকআপ তৈরি হয়নি এখনও এই থানায়। মহিলা অভিযুক্তদের রাখতে হয় ডায়মন্ড হারবার থানায়। হঠাৎ রাতে তদন্তের জন্য বের হতে হলে ডায়মন্ড হারবার থানা থেকে পুরুষ পুলিশকর্মীদের সঙ্গে নিতে হয়।

স্বাবলম্বী হওয়ার পথে কবে পা বাড়াবে এই থানা?

জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পশ্চিম) এ রবীন্দ্রনাথ বলেন, “আমরা খুব প্রাথমিক ভাবে এই থানার কাজ শুরু করেছি। পরিকাঠামো বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে। ধাপে ধাপে করা হবে।” ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের না হওয়া প্রসঙ্গে ওই পুলিশকর্তা বলেন, “সচেতনতা বাড়েনি এ কথা বলব না। তবে এখন প্রতিটি থানায় মহিলা হেল্প ডেস্ক রয়েছে। সেগুলিতেই অভিযোগকারীরা সাহায্য পেয়ে যাচ্ছেন ধর্ষণের মতো ঘটনা নথিভুক্ত করার জন্য।”

ডায়মন্ড হারবার থানা এবং সংলগ্ন এলাকার ঘটনাগুলিই নথিভুক্ত হচ্ছে মহিলা থানায়। কুলেশ্বর, বুনোর হাট, আবদালপুর, পাতড়ার লস্করপাড়া, কামারপোল, চাঁদনগর এলাকার কেস নথিভুক্ত হয়েছে মহিলা থানায়। কুলপি, রায়দিঘি, মথুরাপুর এবং মন্দিরবাজারের মতো এলাকাগুলি মহিলা থানার আওতাভুক্ত হলেও এখনও সেই সব এলাকা থেকে ধর্ষণ বা অন্যান্য অপরাধের ঘটনা মহিলা থানায় আসেনি।

southbengal shantashri majumdar diamond harbour women at police station rape allegations
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy