Advertisement
E-Paper

ভরা মরসুমে বাজারে ইলিশের আকাল, চিন্তায় মৎস্যজীবীরা

কিছু দিন আগে টানা প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে সমুদ্র থেকে বন্দর ও ঘাটে খালি ট্রলার ফিরিয়ে আনতে হয়েছিল মৎস্যজীবীদের। দুর্যোগ কাটার পরেও রূপালি মাছের খোঁজে গভীর সমুদ্রে পাড়ি দিয়ে ফেরা মৎস্যজীবীদের মাথায় হাত। চিন্তায় ট্রলার মালিকেরাও। প্রশ্ন একটাই, ভরা মরসুমে এই সামান্য সংস্থানে বাঙালির পাতে ইলিশ চাহিদা মতো জুটবে তো?

দিলীপ নস্কর

শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৩:০১
নামখানা থেকে এই সব ট্রলারই যায় সমুদ্রে। নিজস্ব চিত্র।

নামখানা থেকে এই সব ট্রলারই যায় সমুদ্রে। নিজস্ব চিত্র।

কিছু দিন আগে টানা প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে সমুদ্র থেকে বন্দর ও ঘাটে খালি ট্রলার ফিরিয়ে আনতে হয়েছিল মৎস্যজীবীদের। দুর্যোগ কাটার পরেও রূপালি মাছের খোঁজে গভীর সমুদ্রে পাড়ি দিয়ে ফেরা মৎস্যজীবীদের মাথায় হাত। চিন্তায় ট্রলার মালিকেরাও। প্রশ্ন একটাই, ভরা মরসুমে এই সামান্য সংস্থানে বাঙালির পাতে ইলিশ চাহিদা মতো জুটবে তো?

প্রাকৃতিক দুর্যোগে খালি হাতে ফেরার কয়েক দিন পরে ফের গভীর সমুদ্রে ট্রলার ভাসিয়েছিলেন মৎস্যজীবীরা। কিন্তু সপ্তাহ খানেক সমুদ্রে থেকেও কোনও ট্রলারে ৪০ কেজি, কোনওটাতে বা ৫০ কেজি ইলিশ নিয়ে তাঁরা গভীর সমুদ্র থেকে ফিরেছেন। সমুদ্রে ইলিশ না থাকার কারণ হিসেবে তাঁদের ব্যাখা, ইলিশ মূলত বাংলাদেশ-মায়ানমারের দিকে মিঠে জলে জন্মায় ও বড় হয়। বর্ষায় পূবালি বাতাসে মিঠে জলের সঙ্গে মাছের ঝাঁকও চলে আসে এ দিককার সমুদ্রে। কিন্তু সাম্প্রতিক দুর্যোগের পর থেকে উত্তর ও পশ্চিমি বাতাস হওয়ায় এ দিকে মাছ ঢুকতে পারছে না। এমনকী হুগলি, কোলাঘাট, রূপনারায়ণ নদীগুলিতেও একই কারণে নোনা মাছ পাচ্ছেন না মৎস্যজীবীরা। ফলে যত দিন না উত্তুরে বাতাস ও ঝিরঝিরে বৃষ্টি হবে, ততো দিন সমুদ্র ও নদীতে মাছের আকাল থাকবে বলেই মনে করছেন তাঁরা।

এ দিকে, নদী বা সমুদ্রে মাছ কমতে থাকায় সমস্যায় পড়েছেন ট্রলার মালিক ও মৎস্যজীবীরা। কারণ ট্রলারের জ্বালানি, বরফ, ট্রলারের ১৫-১৬ জন মৎস্যজীবীর খাবার, সব মিলিয়ে গভীর সমুদ্রে যেতে একটি ট্রলারের জন্য প্রায় ১ লক্ষ টাকা ব্যয় হয়। গভীর সমুদ্রে ৭-৮ দিন থেকে সামান্য মাছ নিয়ে ফেরায় সমস্যায় পড়েছেন সকলেই। কারণ লোকসান তো হচ্ছেই, আবার ট্রলার বেশি দিন বন্দর বা ঘাটে রাখলে অনেক মৎস্যজীবী অন্য কাজের খোঁজে বাড়িই ফিরে আসেন। সে ক্ষেত্রে পরে ট্রলার সমুদ্রে গেলে কর্মী সমস্যা তৈরি হয়।

কাকদ্বীপ মৎস্যজীবী কল্যাণ সমিতির সভাপতি বিজন মাইতি বলেন, “সমুদ্রে মাছ না ঢোকায় প্রায় খালি হাতে ফিরছে ট্রলারগুলি। সপ্তাহ খানেক আগে ডায়মন্ড হারবার ও কাকদ্বীপ মিলিয়ে প্রায় ৬ হাজার ট্রলার গভীর সমুদ্রে গিয়েছিল। দিন দু’য়েক আগে প্রায় সব ট্রলার ফিরে এসেছে। ট্রলারে ইলিশ এসেছে কোনওটাতে ৪০ কেজি কোনওটাতে একটু বেশি। ফলে এক-এক জন ট্রলার মালিকের ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৬০-৭০ হাজার টাকা।” তিনি আরও জানান, একই অবস্থা ছোট ছোট নদীগুলিতেও। সমুদ্র বা নদী থেকে যে মাছ মিলছে না, তা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন আড়তদারেরাও। সুন্দরবনের প্রায় সমস্ত নদী ও সমুদ্রে মাছ কেনা বেচার জন্য রয়েছে ডায়মন্ড হারবারের নগেন্দ্রবাজার মৎস্য আড়ত। এক আড়তদার জানালেন, মাছের গাড়ি আড়তে আশা প্রায় বন্ধ। ইলিশের মরসুমে প্রথমের দিকে ভাল মাছ এলেও এখন তা নেই। সব মিলিয়ে কবে পূবালি বাতাস আর ঝিরঝিরে বৃষ্টি হবে, তার অপেক্ষায় থাকতে হবে মৎস্যজীবীরা।

southbengal dilip naskar hilsa hilsha crisis hilsha
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy