E-Paper

স্থায়ী শিক্ষকপদে দু’বার ইন্টারভিউ দিয়েও ধর্নামঞ্চে

উচ্চ প্রাথমিক এবং নবম-দশমের শিক্ষক হতে আবেদন করেছিলেন তিনি। নবম-দশমের নিয়োগে ইন্টারভিউয়ে ডাক পাননি। উচ্চ প্রাথমিকে দু’বার ইন্টারভিউ দিয়েছেন।

আর্যভট্ট খান

শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৮:১২
Representational image of protest.

বীরভূমের নলহাটির হাঁসাপুর গ্রামের সিদ্ধার্থ অঙ্কে এমএসসি। প্রতীকী ছবি।

আংশিক সময়ের শিক্ষকের পদে আট বার ইন্টারভিউ দিয়ে আট বারই সফল। কিন্তু উচ্চ প্রাথমিকে পূর্ণ সময়ের শিক্ষকপদের ইন্টারভিউয়ে দু’বার বসেও সিদ্ধার্থকুমার মালের ঠিকানা এখনও ধর্নামঞ্চ! বীরভূমের নলহাটির হাঁসাপুর গ্রামের সিদ্ধার্থ অঙ্কে এমএসসি। আছে বিএড ডিগ্রিও। উচ্চ প্রাথমিক এবং নবম-দশমের শিক্ষক হতে আবেদন করেছিলেন তিনি। নবম-দশমের নিয়োগে ইন্টারভিউয়ে ডাক পাননি। উচ্চ প্রাথমিকে দু’বার ইন্টারভিউ দিয়েছেন। মেধা-তালিকার দেখা নেই।

২০১৪ সালের ৩০ জানুয়ারি উচ্চ প্রাথমিকের শিক্ষকপদে যোগ্যতা নির্ধারক পরীক্ষা টেটের বিজ্ঞপ্তি বেরোয়। পরীক্ষা হয় পরের বছর ১৬ অগস্ট। ফল প্রকাশিত হয় ২০১৬-র ১৪ সেপ্টেম্বর। সেই বছরেরই ২০ সেপ্টেম্বর আবার উচ্চ প্রাথমিকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি বেরোয়। ১৪,৩৩৯টি শূন্য পদের জন্য ২০১৯-এর জুলাইয়ে প্রথম ইন্টারভিউ হয়। সেই বছরেরই ৪ অক্টোবর মেধা-তালিকা প্রকাশিত হয়। তার পর থেকেই চলছে গন্ডগোল।

সেই মেধা-তালিকা ঘিরে স্বচ্ছতার অভাবের অভিযোগ ওঠে। কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে ২০২০-র ১১ ডিসেম্বর সেই নিয়োগ তালিকা বাতিল হয়ে যায়। আবার নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করে ২০২১-এর ৩১ জুলাই তা সম্পন্ন করার নির্দেশ দেয় আদালত। ২০২১-এর জুলাইয়ে দ্বিতীয় বারের ইন্টারভিউ সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও মেধা-তালিকা প্রকাশ করা হয়নি।

২০১৪ থেকে ২০২২ পর্যন্ত আটটি সরকার পোষিত স্কুলে স্থায়ী শিক্ষকর ‘ডেপুটেশন লিভ ভ্যাকেন্সি’-তে শিক্ষকতা করেছেন সিদ্ধার্থ। তাঁর কথায়, ‘‘হয়তো কোনও স্কুলের স্থায়ী শিক্ষক এক বছরের জন্য বিএড পড়তে গিয়েছেন বা কোনও শিক্ষক দীর্ঘ ছুটি নিয়েছেন অসুস্থতার কারণে। সরকারি পদ্ধতিতে ইন্টারভিউয়ের মাধ্যমে আমি তাঁদের জায়গায় আংশিক সময়ের শিক্ষক হিসেবে পড়ানোর সুযোগ পেয়েছি। এ ছাড়া বেসরকারি স্কুলেও শিক্ষকতা করেছি। কিন্তু এখনও পর্যন্ত পূর্ণ সময়ের শিক্ষক হয়ে উঠতে পারলাম না।’’

নবম-দ্বাদশ স্তরে শিক্ষকতার স্বপ্ন দেখেছিলেন সিদ্ধার্থ। বললেন, ‘‘নবম থেকে দ্বাদশের শিক্ষকপদে নিয়োগের লিখিত পরীক্ষা ভাল ভাবে দিয়েও পাশ করতে না-পারায় ইন্টারভিউয়ে ডাক পাইনি। এখন হাই কোর্টের নির্দেশে নবম-দশমের ‘ওএমআর শিট’ বা উত্তরপত্র প্রকাশিত হয়েছে। দেখছি, সাদা খাতা জমা দিয়ে অনেকেই চাকরি পেয়ে গিয়েছেন!’’

এখন একটি বেসরকারি স্কুলে পড়াচ্ছেন সিদ্ধার্থ। পড়ানোর ফাঁকেই উচ্চ প্রাথমিকের কর্মপ্রার্থীদের আন্দোলনে যোগ দেন তিনি। কলকাতা ময়দানে মাতঙ্গিনী হাজরার মূর্তির নীচে উচ্চ প্রাথমিকের বিক্ষোভ মঞ্চেও প্রতিবাদে শামিল হয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গ আপার প্রাইমারি চাকরিপ্রার্থী মঞ্চের নেতা সুশান্ত ঘোষ বলেন, ‘‘সম্প্রতি আমরা দ্রুত নিয়োগ নিয়ে একটা পথনাটিকা করি। সেখানে পড়ুয়ার অভিভাবক সেজেছিলেন সিদ্ধার্থ। ওর মতো যোগ্য প্রার্থীদের আর কত দিন অপেক্ষা করতে হবে?’’

এসএসসি বা স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদারের আশ্বাস, ‘‘উচ্চ প্রাথমিকে নিয়োগের মেধা-তালিকা ভাল ভাবে যাচাই করে দিন দশেকের মধ্যে আদালতে পেশ করা হবে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Protest Teacher

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy