বাড়ির পুজোয় গ্রামের প্রান্তিক মানুষেরা নবপত্রিকার চর্তুদোলা বহন করুন। যোগ দিন অন্য কাজকর্মেও। এমনটাই চেয়েছিলেন বীরভূমের রামপুরহাট কলেজের ইংরেজির শিক্ষক সুকৃত মণ্ডল। কিন্তু সে প্রস্তাবে সাড়া দেননি পরিবারের অনেকে। তাই রামপুরহাটের তেলডাহা গ্রামে প্রান্তিক মানুষদের নিয়ে নিজের খরচে নতুন পুজো শুরু করলেন সুকৃত। নাম দিয়েছেন ‘আরশিনগর’। পরিবারের তরফে তাতে বাধা আসেনি, জানান সুকৃত।
তেলডাহা গ্রামে আজ, সপ্তমীতে প্রান্তিক মানুষেরাই নবপত্রিকার চর্তুদোলা বহন করবেন। দেবীঘট ভরবেন গ্রামের মহিলার। খুশি গ্রামের রবিদাস, বাগদি ও লেট সম্প্রদায়ের মানুষেরা। তাঁরা জানান, ইচ্ছে থাকলেও এত দিন পুজোর এ সব কাজ করতে পারেননি। সুকৃত জানান, একবার তাঁর পূর্বপুরুষদের পুজোর ডালাও ফেরত পাঠানো হয়েছিল এক পুজো থেকে। তখন তাঁরা নতুন পুজো চালু করেন। এখন যাতে গ্রামের সকলে পুজোয় যোগ দিতে পারেন, তাই গত বার তিনি ওই প্রস্তাব দিয়েছিলেন। সাড়া না পেয়ে নতুন পুজো শুরু করলেন এ বারে।
গ্রামের মনোজ দাস বলেন, ‘‘নবপত্রিকার চর্তুদোলা কাঁধে নেওয়ার সুযোগ পাব, ভেবেই ভাল লাগছে।’’ অসীমা মণ্ডলের কথায়, ‘‘প্রথা ভেঙে আজ দেবীঘট ভরতে যাব।’’ সুকৃত বলেন, ‘‘বাড়ির পুজোতেও থাকব, এখানেও থাকব। ধর্ম যাঁর যাঁর, পুজো সবার। তাই নাম দিয়েছি আরশিনগর।’’
স্থানীয় কাষ্ঠগড়া পঞ্চায়েতের বিজেপি সদস্য সন্তোষী বাগদি বলেন, ‘‘উৎসবে বিভেদ ঠিক না। আমরা ওঁর পাশে আছি।’’ সুকৃতের এক শরিক মদনমোহন মণ্ডল বলছেন, ‘‘আজ না হয় কাল, এ সব রীতি উঠতে বাধ্য। সুকৃত খুব ভাল করেছে।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)