Advertisement
E-Paper

অস্ট্রেলিয়ার ঘাসপেঁচার খোঁজ মিলে গেল মালদহে গঙ্গার চরে! রাজ্যে এই প্রথম বার হল ক্যামেরাবন্দি

মালদহ বনবিভাগের তরফে পক্ষী পর্যবেক্ষণকারী সংগঠন ‘গ্রিন পিপলস ইন্ডিয়া’ এবং ‘বার্ড ওয়াচার্স সোসাইটি’র সহায়তায় গঙ্গা ও ফুলহার নদী সংলগ্ন অঞ্চলে পাখি সমীক্ষার সময়ই মিলেছে এই সাফল্য।

ফরাক্কায় মেলা অস্ট্রেলেশিয়ান গ্রাস আউল।

ফরাক্কায় মেলা অস্ট্রেলেশিয়ান গ্রাস আউল। ছবি: বন দফতর সূত্রে পাওয়া।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০২৫ ১৯:৩১
Share
Save

আদতে তারা এ দেশে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের তৃণভূমির বাসিন্দা। পক্ষীবিজ্ঞানীদের নথিতে ‘পরিযায়ী প্রজাতি’ হিসেবেও চিহ্নিত নয়। সেই অস্ট্রেলেশিয়ান গ্রাস আউল (ইস্টার্ন গ্রাস আউল) প্রথম বার ক্যামেরাবন্দি হল বাংলায়। সৌজন্যে, রাজ্য বন দফতর এবং রাজ্যের দুই পাখি পর্যবেক্ষণ সংগঠন। মঙ্গলবার রাজ্যের বনমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা জানিয়েছেন, ফরাক্কা ব্যারেজ লাগোয়া গঙ্গার একটি চরে রবি থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত তিনটি ঘাসপেঁচা ক্যামেরাবন্দি হয়েছে।

মালদহ বনবিভাগের তরফে গত চার মাস ধরে পক্ষী পর্যবেক্ষণকারী সংগঠন ‘গ্রিন পিপলস ইন্ডিয়া’ এবং ‘বার্ড ওয়াচার্স সোসাইটি’র সদস্যদের সহায়তায় গঙ্গা ও ফুলহার নদী এবং তার অববাহিকা অঞ্চলে পাখি সমীক্ষার কাজ চলছিল। মালদহের বিভাগীয় বনাধিকারিক জিজু জেসপার জানিয়েছেন, ডিসেম্বর থেকে ফরাক্কা গুরুত্বপূর্ণ পক্ষী বিচরণক্ষেত্র (ইম্পট্যান্ড বার্ড এরিয়া বা আইবিএ)-কে চার ভাগে ভাগ করে চলছিল কাজ। গত রবিবার (৯ মার্চ) বনবিভাগের একটি দলের সঙ্গে তিন পাখি সমীক্ষক, সন্দীপ দাস, স্বরূপ সরকার এবং সৈকত দাস পঞ্চানন্দপুর-ফরাক্কা জলপথে গঙ্গার মাঝে জেগে ওঠা একটি চরের ঘাসবনে তিনটি অস্ট্রেলিয়ান গ্রাস আউল দেখতে পান। পক্ষী বিশারদ সন্দীপ জানিয়েছেন, তাদের মধ্যে একটি অপরিণত পেঁচাও ছিল।

সংগঠন ‘গ্রিন পিপলস ইন্ডিয়া’র শুভাশিস সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘রবিবার আমাদের মোট চারটি দল বন দফতরের কর্মীদের সঙ্গে নৌকায় পরিযায়ী ও স্থানীয় পাখি সমীক্ষার কাজ করছিল। সে সময়ই একটি দল অস্ট্রেলেশিয়ান গ্রাস আউল ক্যামেরাবন্দি করেছে।’’ তিনি জানান, এর আগে পক্ষীবিদ অজয় হোম আশির দশকের গোড়ায় বীরভূমের শান্তিনিকেতনের কাছে একটি ঘাসপেঁচা দেখেছিলেন। তার পর এ বাংলায় আর তাদের সন্ধান মেলেনি। বাংলার পড়শি রাজ্য অসমের মানস জাতীয় উদ্যানে অস্ট্রেলেশিয়ান গ্রাস আউলের দর্শন মেলে। সেটি তাদের প্রজননক্ষেত্র। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং অস্ট্রেলিয়াতেও এই প্রজাতির পেঁচা রয়েছে।

চেহারায় পরিচিত লক্ষ্মীপেঁচার (বার্ন আউল) সঙ্গে অনেকটা মিল থাকলেও ঘাসপেঁচাদের পিঠের অংশ পাঠকিলে। লক্ষ্মীপেঁচার মতো সোনালি-ধূসর নয়। সাদা পেটে রয়েছে সুক্ষ সুক্ষ বাদামি ফুটকি। মুখের সাদা গোল চাকতিকে ঘিরে পাটকিলে গলাবন্ধও এদের শনাক্ত করতে সাহায্য করে। কিন্তু উত্তর-পূর্বাঞ্চল থেকে কী ভাবে ঘাসপেঁচারা চলে এল মালদহ জেলায় গঙ্গার চরে? ‘বার্ডওয়াচার্স সোসাইটি’র সদস্য, পাখি বিশারদ কণাদ বৈদ্য জানিয়েছেন, সম্ভবত ওই তৃণভূমিতে আগে থেকেই তাদের বসত ছিল। বন দফতরের সহযোগিতায় ধারাবাহিক সমীক্ষাপর্বে সেই আবাসক্ষেত্রে চিহ্নিত করা সম্ভব হয়েছে। তিনি জানান, অজয় হোমের আগে ১৯২০ সালে ব্রিটিশ পাখি পর্যবেক্ষক সিএম ইংলিশ জলপাইগুড়ি জেলায় ঘাসপেঁচার সন্ধান পেয়েছিলেন।

Farakka Barrage Malda Ganges Farakka Dam owl Bird West Bengal Forest Department

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}