প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারপর্বেই গ্রিনল্যান্ডকে আমেরিকায় অন্তর্ভুক্ত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনি। ভোটে জয়ের পরে দিয়েছেন বলপ্রয়োগের হুঁশিয়ারিও। ডোনাল্ড ট্রাম্পের সেই ‘রক্তচক্ষু’ উপেক্ষা করেই এ বার গ্রিনল্যান্ডের আঞ্চলিক পার্লামেন্টের ভোটপর্ব শুরু হল। ইউরোপের দেশ ডেনমার্কের তত্ত্বাবধানেই মঙ্গলবার ‘গ্রিনল্যান্ড স্বশাসিত অঞ্চলের’ আইনসভার নির্বাচন চলছে।
ডেনমার্কের মূল ভূখণ্ড থেকে প্রায় ৩০০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ‘বিশ্বের বৃহত্তম দ্বীপ’ প্রায় ৩০০ বছর ধরে কোপেনহাগেনের নিয়ন্ত্রণে। অভ্যন্তরীণ বিষয়গুলি পরিচালনা ও উন্নয়ন সংক্রান্ত দায়িত্ব পালন করেন দ্বীপটির স্বায়ত্তশাসিত কর্তৃপক্ষ। আর বিদেশ এবং প্রতিরক্ষানীতি সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেয় ডেনমার্ক সরকার। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প গত কয়েক মাসে একাধিক বার ডেনমার্ক দখলের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। সেই প্রেক্ষিতে এই ভোটপর্ব ‘তাৎপর্যপূর্ণ’।
আরও পড়ুন:
৩১ আসনের গ্রিনল্যান্ড পার্লামেন্টে চার বছর অন্তর নির্বাচন হয়। দ্বীপের মোট জনসংখ্যা ৫৬ হাজার। ভোটারের সংখ্যা প্রায় ৪৪ হাজার। পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের ‘জাদু সংখ্যা’ ১৬ আসন। এ বারে নির্বাচনে মোট ছ’টি দলের প্রার্থীরা লড়ছেন। ঘটনাচক্রে, তার মধ্যে পাঁচটি দলই ডেনমার্ক থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গ্রিনল্যান্ডের পূর্ণ স্বাধীনতার পক্ষে। নির্বাচনের ফলাফল বুধবার জানা যাবে। গ্রিনল্যান্ডে বর্তমানে ক্ষমতায় আছে কমিউনিটি অব দ্য পিপল (আইএ) এবং ফরোয়ার্ড (এস) দলের জোট সরকার। গ্রিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পদে রয়েছেন মিউটে এগেদে।
প্রথম দফায় আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হয়েই কানাডার উত্তর-পূর্বে অবস্থিত বিশ্বের বৃহত্তম দ্বীপ গ্রিনল্যান্ডকে কিনতে চেয়েছিলেন ট্রাম্প। কিন্তু ওই ‘স্বশাসিত’ দ্বীপের উপর ইউরোপীয় দেশ ডেনমার্কের অধিকার আন্তর্জাতিক ভাবে স্বীকৃত। কয়েক মাস আগে ট্রাম্প সমাজমাধ্যমে লিখেছিলেন, ‘‘সারা বিশ্বের নিরাপত্তা এবং স্বাধীনতার স্বার্থে আমেরিকা মনে করে, গ্রিনল্যান্ডের মালিকানা এবং নিয়ন্ত্রণ এই মুহূর্তে অপরিহার্য।’’ পত্রপাঠ সেই দাবি খারিজ করেছিল ডেনমার্ক। কিন্তু এর পর সরাসরি বলপ্রয়োগের বার্তা আসে হোয়াইট হাউসের বাসিন্দার তরফে।
আরও পড়ুন:
এ বার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ের পরে ফ্লোরিডা রিসর্টে সাংবাদিক বৈঠকে ট্রাম্পের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, আগামী ২০ জানুয়ারি প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়িত্ব নেওয়ার পরে পানামা এবং গ্রিনল্যান্ডের ক্ষেত্রে সামরিক ও অর্থনৈতিক বলপ্রয়োগ করবেন না, বিশ্বকে তিনি এমন নিশ্চয়তা দিতে পারবেন কি না। জবাবে রিপাবলিকান নেতা বলেন, ‘‘না, ওই দু’টি ক্ষেত্রের কোনওটির বিষয়েই আমি আপনাদের কোনও নিশ্চয়তা দিতে পারব না। তবে আমি এটা বলতে পারি, অর্থনৈতিক নিরাপত্তার জন্য আমাদের ওই দু’টিকেই (পানামা খাল এবং গ্রিনল্যান্ড) প্রয়োজন।