Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Crime

অপহরণ করে ‘খুন’ বালককে, ভাঙচুর বর্ধমানে

পেশায় দিনমজুর বুদ্ধদেবের মোবাইলে ছেলের মুক্তিপণ হিসেবে সাত লক্ষ টাকা চেয়ে ফোন আসে বুধবার রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ।

ধৃতদের বাড়িতে ভাঙচুর। শুক্রবার বর্ধমানের গলসিতে। নিজস্ব চিত্র

ধৃতদের বাড়িতে ভাঙচুর। শুক্রবার বর্ধমানের গলসিতে। নিজস্ব চিত্র

কাজল মির্জা
গলসি শেষ আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৪:২৪
Share: Save:

এক পঞ্চায়েত সদস্যের ‘অপহৃত’ ছেলের মৃতদেহ উদ্ধার হতে শুক্রবার ধুন্ধুমার বাধল পূর্ব বর্ধমানের গলসিতে।

বুধবার সন্ধ্যায় সাঁকো গ্রামের বাড়ি থেকে বাজি কিনতে বেরিয়েছিল সন্দীপ দলুই (৯)। তার বাবা বুদ্ধদেব দলুই গলসি ২ পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন কর্মাধ্যক্ষ তথা সাঁকো পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য। পেশায় দিনমজুর বুদ্ধদেবের মোবাইলে ছেলের মুক্তিপণ হিসেবে সাত লক্ষ টাকা চেয়ে ফোন আসে বুধবার রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ। পরে তা কমিয়ে তিন লক্ষ টাকা চাওয়া হয়। রাতেই পুলিশের কাছে অভিযোগ হয়।

বৃহস্পতিবার রাতে সুব্রত মাঝি ওরফে বাদশা, জয়ন্ত বাগ ওরফে নিরঞ্জন এবং মঙ্গলদীপ দলুই ওরফে বাবু নামে গ্রামেরই তিন যুবক ধরা পড়ে। পুলিশের দাবি, ধৃতেরা জেরায় তাদের বলেছে, বুধবার রাতে হাত-পা বেঁধে সেচখালে ফেলে দেওয়া হয়েছে ওই বালককে। এ দিন সকাল সাড়ে ৬টা নাগাদ খালে দেহ মেলে সন্দীপের। জানাজানি হতে ধৃতদের বাড়িতে চড়াও হয় জনতা। লাঠি, হাতুড়ি দিয়ে তাদের বাড়ি-গাড়ি ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ। তিনটি পরিবারই গ্রামছাড়া।

জেলার পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, “ধৃতদের ১০ দিন পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে, টাকার জন্যই এ ঘটনা ঘটিয়েছে ওরা।’’

বুদ্ধদেববাবু বলেন, ‘‘জয়ন্ত গ্রিল-মিস্ত্রি। আমাদের খুব পরিচিত। ওর মোবাইলে কিছু গেম খেলতে ভালবাসত সন্দীপ। সে সব আমার মোবাইলে নেই।’’ পুলিশের দাবি, বুধবার জয়ন্তই সন্দীপকে রাস্তা থেকে ডেকে ফাঁকা জায়গায় নিয়ে যায়। পরে বাচ্চাটিকে কিছু খাইয়ে বেহুঁশ করে সেচখালের ধারে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে বুদ্ধদেববাবুকে ফোন করা হয়। বুধবার রাতেই যে নম্বর থেকে মুক্তিপণ চাওয়া হয়েছিল, তার মালিকের সন্ধান পায় পুলিশ। কিন্তু জানা যায়, তাঁর সিম-কার্ডটি চুরি হয়েছে। পুলিশের ধারণা, বাদশা সিম-কার্ডটি চুরি করে। বাবুর মোবাইল থেকে কল করা হয়। কিন্তু মুক্তিপণ না পেয়ে মারা হয় সন্দীপকে।

সাঁকো পঞ্চায়েতের প্রধান তৃণমূলের মহম্মদ আলি মোল্লার দাবি, “ধৃতেরা বিজেপি কর্মী। স্রেফ তৃণমূল করেন বলে বুদ্ধদেববাবুর উপরে রাগ মেটাতে ওঁর ছেলেকে মারা হল।’’ বিজেপির জেলা সহ সম্পাদক জয়দীপ চট্টোপাধ্যায়ের অবশ্য বক্তব্য, “বিজেপিকে বদনাম করতে এমন অভিযোগ।’’ তবে বুদ্ধদেববাবু বলছেন, ‘‘খড়ের চালের দু’কামরার বাড়ি। স্বামী-স্ত্রী মজুর খেটে সংসার চালাই। কী কারণে ছেলেকে মারা হল, বুঝতে পারছি না!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Abduction Murder
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE