E-Paper

‘রাস্তাটা করে দিন’, পা জড়িয়ে আর্জি গ্রামবাসীর

গত শুক্রবার এই গ্রামের বাসিন্দা মামনি রায় মারা যান। কোনও গাড়ি না পেয়ে নিরুপায় তাঁর স্বামী ও দেওর তাঁকে খাটিয়ায় চাপিয়ে নিয়ে যান সাড়ে চার কিলোমিটার। হাসপাতালে পৌঁছলে মামনির মৃত্যু হয়।

জয়ন্ত সেন 

শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০২৩ ০৬:০৮
মালদহ জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতির পা জড়িয়ে ধরলেন গ্রামবাসী।

মালদহ জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতির পা জড়িয়ে ধরলেন গ্রামবাসী। —নিজস্ব চিত্র।

কুড়ি বছরেও হাল ফেরেনি পথের। এই দু’দশকের ব্যবধানে একই রাস্তার জন্য প্রাণ গিয়েছে মা ও মেয়ের। অসুস্থ হলেও সময় মতো হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া যায়নি। মালদহ জেলার বামনগোলায় সেই মালডাঙা গ্রামে পৌঁছতে এ দিন জেলা তৃণমূল সভাপতি আব্দুর রহিম বক্সীর পা জড়িয়ে ধরলেন স্থানীয় এক বৃদ্ধ। তাঁর একটাই আর্জি, রাস্তাটা পাকা করিয়ে দিন।

গত শুক্রবার এই গ্রামের বাসিন্দা মামনি রায় মারা যান। কোনও গাড়ি না পেয়ে নিরুপায় তাঁর স্বামী ও দেওর তাঁকে খাটিয়ায় চাপিয়ে নিয়ে যান সাড়ে চার কিলোমিটার। হাসপাতালে পৌঁছলে মামনির মৃত্যু হয়। রবিবার হবিবপুরের বিধায়ক জোয়েল মুর্মুকে সঙ্গে নিয়ে এলাকায় গিয়েছিলেন মালদহ উত্তরের সাংসদ খগেন মুর্মু। তিনি সাংসদ তহবিলের টাকায় রাস্তা করে দেবেন বলে জানান। তার পরে সোমবার বিকেলে মামনির পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যান রহিম বক্সী। তিনি যখন বেরোচ্ছেন, তাঁর পা জড়িয়ে ধরে গ্রামের রাস্তা পাকা করার আর্জি জানান মালডাঙার বাসিন্দা ষাটোর্ধ্ব ধীরেন রায়। বলেন, ‘‘বাবা, ঠাকুরদা মারা গিয়েছেন। আমারও বয়স হয়েছে। তিন পুরুষ চলে গেলেও রাস্তার হাল বদলাল না। রাস্তা এতটাই বেহাল হয়, যে এখনও বৃষ্টি হলে, মালডাঙা থেকে গঙ্গাপ্রসাদ কলোনিতে যেতে দু’টি করে কাপড় নিতে হয়। চপ্পল ব্যাগে রাখতে হয়। হাঁটাই দায় হয়ে পড়ে। রাস্তাটা করে দিন। রাস্তাটা নতুন করে গড়ার প্রকল্পের উদ্বোধন করুন।’’ ধীরেন পা জড়িয়ে ধরায় অপ্রস্তুত হয়ে পড়েন রহিম। বলেন, ‘‘এই রাস্তা সরকারি ভাবে হবে। পথশ্রী প্রকল্পে রাস্তার কথা ধরা আছে। কথা দিয়ে যাচ্ছি, আগামী তিন মাসের মধ্যে এ রাস্তার কাজ শুরু হবে।’’

যদিও পরে দলীয় সভা থেকে কেন্দ্রীয় সরকারের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলে রহিম বলেন, ‘‘কেন্দ্র গত দু’বছর প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ সড়ক যোজনায় রাস্তার কাজও আটকে রেখেছে। না হলে কবেই এই মালডাঙার রাস্তা হয়ে যেত!’’ খগেন মুর্মুকে দুষে তাঁর আরও দাবি, ‘‘খগেন মুর্মু তিন বার হবিবপুরের বিধায়ক ছিলেন। এখন সাংসদ। সব মিলিয়ে এলাকা উন্নয়ন তহবিলের মোট ৩২ কোটি টাকার হিসাব কোথায়?’’

পাল্টা খগেন মুর্মু বলেন, ‘‘রাস্তা কেন হয়নি, তা নিয়ে রাজনীতি হচ্ছে।’’ তাঁর আরও বক্তব্য ‘‘তৃণমূলের জেলা সভাপতি হিসাব চাওয়ার কে? জনগণ জানেন, বিধায়ক ও সাংসদ হয়ে আমি এলাকায় কী-কী কাজ করেছি।’’ একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘কেন্দ্র থেকে পাঠানো সরকারি প্রকল্পের টাকার হিসেব দেয় না তৃণমূল। তাই সে সব প্রকল্পের টাকা দেওয়া বন্ধ। হিসেব দিলেই টাকা পাবে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

TMC

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy