অধীর চৌধুরী।
দ্বিতীয় বারের জন্য প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি হলেন অধীর রঞ্জন চৌধুরী। এখন তিনি লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা। দিল্লির সঙ্গেই এ বার বাংলায় প্রদেশ কংগ্রেসের দায়িত্বও যুক্ত হল।
প্রথম বার অধীরবাবুকে যখন প্রদেশ কংগ্রেসের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচন তখন অদূরে। দু’বছর আগে এই সেপ্টেম্বর মাসেই অধীরবাবুকে পদ থেকে সরিয়ে আচমকা সোমেন মিত্রকে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি করেছিল এআইসিসি। কেন সোমেনবাবুকে তখন ফিরিয়ে আনা হয়েছিল, তার কারণ রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের কাছে খুব পরিষ্কার হয়নি। তেমনই আবার বুধবার বেশি রাতে কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীর নির্দেশে অধীরবাবুকে প্রদেশ সভাপতির দায়িত্ব দেওয়ার বিজ্ঞপ্তি এআইসিসি-র সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) কে সি বেণুগোপাল যখন জারি করেছেন, তখনও কংগ্রেসের অন্দরে রয়ে গিয়েছে একটি রহস্য। প্রদেশ সভাপতি হিসেবে সোমেনবাবু প্রয়াত হয়েছেন জুলাইয়ের শেষে। অধীরবাবুকেই যখন তাঁর জায়গায় সভাপতি করা হল, তা হলে এত দিন সময় লাগল কেন— সেই রহস্য এ দিন রাত পর্যন্ত ভেদ করতে পারেননি কংগ্রেস নেতৃত্ব!
সংসদের অধিবেশনের আগে দিল্লি যাবেন বলে এ দিনই বহরমপুর ছেড়েছিলেন অধীরবাবু। কিন্তু কলকাতায় এসে জানতে পেরেছেন দিল্লির সিদ্ধান্ত। রাতে রয়ে গিয়েছেন শহরেই। ঠিক হয়েছে, আজ, বৃহস্পতিবারই বিধান ভবনে গিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রদেশ সভাপতির দায়িত্ব নিয়ে তার পরে দিল্লি যাবেন বহরমপুরের সাংসদ। অধীরবাবুর বক্তব্য, ‘‘আমি কংগ্রেসের সৈনিক। দলের শীর্ষ নেতৃত্বের আস্থা এবং কর্মীদের প্রত্যাশা, দু’টোই পূরণের জন্য চেষ্টার ত্রুটি করব না।’’
আরও পড়ুন: জঙ্গলমহলে ‘অ্যাকশন’ নিতে তৈরি হচ্ছে নবান্ন
আরও পড়ুন: বিশ্বভারতীর ‘রাবীন্দ্রিকরা’ আগে নিজের বাড়ির পাঁচিলটা ভাঙুন
বাংলায় বামেদের সঙ্গে সমঝোতার প্রক্রিয়া শুরু করিয়ে গিয়েছিলেন অধীরবাবু। পরে সোমেনবাবুর হাত ধরে রাজ্য কংগ্রেস সেই পথেই হাঁটছিল। এখন অধীরবাবু আবার প্রদেশ কংগ্রেসের দায়িত্ব পাওয়ায় বামেদের সঙ্গে রাজনৈতিক বোঝাপড়া অব্যাহত থাকবে বলেই দু’পক্ষের নেতাদের ধারণা। কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের মোকাবিলায় কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া যখন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নানা ক্ষেত্রে পাশে নিয়ে চলছেন, সেই সময়ে বাংলায় দলের ভার অধীরবাবুর মতো কট্টর ‘তৃণমূল-বিরোধী’ নেতার হাতে তুলে দেওয়া তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক শিবির। সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিম ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী রাতেই অধীরবাবুর নিয়োগকে স্বাগত জানিয়ে তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
বাংলার ভারপ্রাপ্ত এআইসিসি নেতা গৌরব গগৈয়ের মতে, ‘‘খুব গুরুত্বপূর্ণ ও সঙ্কটজনক সময়ে অধীরবাবু দায়িত্ব নিচ্ছেন। বাংলার কংগ্রেস কর্মীদের ভাবাবেগকে মর্যাদা দেওয়ার জন্য সনিয়াজি’র প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ!’’ অধীরবাবুকে প্রদেশ কংগ্রেসের দায়িত্ব দেওয়ার আর্জি জানিয়ে কিছু দিন আগেই সনিয়াকে চিঠি পাঠিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান। তিনি বলছেন, ‘‘দলের কর্মীদের মনোভাব আঁচ করেই চিঠি লিখেছিলাম। এখানে কংগ্রেসের নেতাদের মধ্যে অধীরের মতো জনভিত্তি আর কার আছে?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy