Advertisement
E-Paper

ভিখারিনির বালিশে দু’লাখ টাকা! শেষ ইচ্ছে মেনে মসজিদকে দান করবেন মুর্শিদাবাদের বৃদ্ধার ছেলে

ছেঁড়া বালিশের নীচে তাড়া তাড়া নোট। তোষকের তলায় গোছা গোছা আরও ৫০-১০০ টাকা। হাঁড়ি নাড়াতেই খড়মড় শব্দে জানান দিচ্ছে খুচরোর পাহাড়।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৫:১৭

গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

ছেঁড়া বালিশের নীচে তাড়া তাড়া নোট। তোষকের তলায় গোছা গোছা আরও ৫০-১০০ টাকা। হাঁড়ি নাড়াতেই খড়মড় শব্দে জানান দিচ্ছে খুচরোর পাহাড়। নোংরা ছেঁড়া বিশাল ওজনের ব্যাগটা হাতে তুলে হতবাক পাড়ার ছেলে-ছোকরারা। ব্যাগে ঠাসা ১-২-৫ টাকার কয়েন। দিন কাবার হয়ে গিয়েছিল গুনতে গুনতে।

সব মিলিয়ে টাকার অঙ্কটা দু’লক্ষ ২৩ হাজার টাকা!

পাওয়া গেল কার বাড়িতে? তিনি পাড়ার এক ভিখারিনি। সব দেখেশুনে পাড়ার এক যুবক বললেন, ‘‘ছেঁড়া কাঁথায় শুয়ে লক্ষ টাকা জমানোর গল্প শুনেছিলাম। এ বার নিজের চোখে দেখলাম!’’

মুর্শিদাবাদের ভগবানগোলার বেলিয়া চকপাড়ায় ভাঙাচোরা একখানা মলিন ঘরের মালকিন বছর সত্তরের আসিনুর বেওয়া। স্বামীর মৃত্যু হয়েছে। চার ছেলেমেয়েরও বিয়ে হয়ে গিয়েছে। একাই থাকতেন বাড়িতে। বহু বছর ধরে এমনটাই দেখে আসছেন এলাকার মানুষজন। ভিক্ষা করে, চেয়েচিন্তে দিন কাটাত বৃদ্ধার। কোনও বাড়িতে ভিক্ষা না পেলে উপহাসের সুরে বলতেন, ‘‘রাজার ঘরে যে ধন আছে, আমার ঘরেও সে ধন আছে।’’ লোকে শুনতেন। হাসতেন। হেসে উড়িয়ে দিতেন সে কথা। মৃত্যুর পর সেই বৃদ্ধারই ছেঁড়া বালিশ থেকে দু’লক্ষ টাকা পেলেন প্রতিবেশীরা।

স্থানীয়েরা জানান, বৃদ্ধা বলতেন, মৃত্যুর পর তাঁর জমানো টাকা যেন কোনও মসজিদ, ইদগাহ বা গোরস্থানে দান করে দেওয়া হয়। ভিখারিনির আবার জমানো টাকা! বৃদ্ধার কথায় কখনওই কেউ পাত্তা দেননি। কিন্তু রবিবার দুপুরে বৃদ্ধার দেহ কবরস্থ করার পর গ্রামবাসীরা তাঁর ঘরে গিয়ে টাকা খোঁজ করতেই তাঁদের চোখ ছানাবড়া। বাক্স, কাপড়ের পুঁটুলি, যেখানে হাত যাচ্ছে, সেখান থেকেই বেরিয়ে আসছে টাকা!

মায়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে বাড়িতে এসেছিলেন মেজো ছেলে আবুল হোসেন এবং বড় বৌমা সাইফুন বেওয়ান। বৃদ্ধা যে এত টাকা জমিয়ে রেখেছিলেন, তা তাঁরা ঘুণাক্ষরেও টের পাননি। মায়ের বাড়িতে যাতায়াত সেই ভাবে না থাকায় আরওই জানতে পারেননি তাঁরা। স্থানীয়দের মুখে এ সব শুনে স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছেন মেজো ছেলে। তবে তিনি জানিয়েছেন, মায়ের ইচ্ছেমতো ওই টাকা মসজিদে দান করে দেওয়া হবে।

আবুল বলেন, ‘‘আমি পরিবার নিয়ে অন্য গ্রামে থাকি। মাকে কোনও ভাবে সাহায্য করতে পারতাম না। গ্রামবাসীর উপস্থিতিতে মায়ের ঘর থেকে জমানো দুই লক্ষাধিক টাকা পাওয়া গিয়েছে। মায়ের ইচ্ছা ছিল জমানো টাকা ধর্মীয় ও সামাজিক কাজে দান করা হবে। তাঁর ইচ্ছা অনুযায়ী ওই টাকা মসজিদে দান করা হবে।’’

Murshidabad
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy