বিশ্বভারতীর নোটিসের বিরুদ্ধে আদালতে অমর্ত্য সেন। ফাইল চিত্র।
অমর্ত্য সেনকে শান্তিনিকেতনের ‘প্রতীচী’ বাড়ির ১৩ ডেসিমাল জমি ১৫ দিনের মধ্যে খালি করার নির্দেশ দিয়েছে বিশ্বভারতী। অন্যথায় তাঁকে উচ্ছেদ করা হবে বলে জানানো হয়েছে। বিশ্বভারতীর এই নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ চেয়ে বৃহস্পতিবার বীরভূম জেলা জজ আদালতের দ্বারস্থ হলেন নোবেলজয়ীর আইনজীবী গোরাচাঁদ চক্রবর্তী এবং আরও কয়েক জন আইনজীবী।
সূত্রের খবর, জেলা জজ না থাকায় এবং বিশ্বভারতী আগেই ক্যাভিয়েট দাখিল করে থাকায় বৃহস্পতিবার শুনানি হয়নি। দায়িত্বপ্রাপ্ত বিচারক সব দিক বিচার বিবেচনা করে ১৫ মে পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছেন। একই সঙ্গে সব পক্ষকে নোটিস মারফত শুনানির সময় উপস্থিত থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গত ১৯ এপ্রিল রাতে নোটিস জারি করে বিশ্বভারতী জানিয়ে দেয়, অমর্ত্য এবং সংশ্লিষ্ট যাঁরা ১৩ ডেসিমাল জমি (নোটিসে বলা হয়েছে, প্রতীচীর উত্তর-পশ্চিম কোণের জমি) দখলে রেখেছেন, তাঁদের ১৫ দিনের মধ্যে বা ৬ মে-র মধ্যে তা খালি করে দিতে হবে। না হলে অমর্ত্য এবং সংশ্লিষ্ট সকল ব্যক্তিকে উল্লিখিত জায়গা থেকে ‘উচ্ছেদ’ করা হবে। নোটিসে দাবি করা হয়েছে, ‘ওই জমি জনগণের সম্পত্তি। তা দখল করে রাখা যায় না। অধ্যাপক অমর্ত্য সেনকে অনেক সময় দেওয়া হয়েছে। তাঁকে সশরীর হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। উনি বা ওঁর কোনও প্রতিনিধি আসেননি’। পরে সেই নোটিস ‘প্রতীচী’ বাড়ির গেটে সাঁটিয়েও দেওয়া হয়।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতীচীতে গিয়ে পুরো ১.৩৮ একর জমির কাগজ অমর্ত্যের হাতে তুলে দিয়ে এসেছেন এ বছর জানুয়ারিতে। তার পরেও বিশ্বভারতী কী ভাবে তাঁকে ১৩ ডেসিমাল জমি খালি করার নির্দেশ দিতে পারে, সে নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তা ছাড়া, অমর্ত্যের আইনজীবীর আবেদনের ভিত্তিতে প্রতীচীর আশপাশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব রয়েছে বীরভূম জেলা প্রশাসনের হাতে। এর পরেও ‘উচ্ছেদ’-এর নোটিস ঘিরে প্রশ্ন উঠেছে। জেলা প্রশাসনের সূত্রে বলা হচ্ছে, অমর্ত্যের পিতা প্রয়াত আশুতোষ সেনের নামে ১.৩৮ একর জমি লিজ দেওয়া হয়েছিল। তার রেকর্ড ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরে রয়েছে। পরবর্তী কালে ১.৩৮ একর জমিই অমর্ত্যের নামে রেকর্ড করানো হয়। সুতরাং সেই রেকর্ড সংশোধন না-করে তাঁকে উচ্ছেদ-নোটিস দেওয়া যায় না।
বিশ্বভারতীর নোটিস নিয়ে বিভিন্ন মহলে সমালোচনা হয়। অনেকেই বলছেন, অর্থনীতিবিদকে আত্মপক্ষ রাখার সুযোগ না-দিয়ে কার্যত ‘এক তরফা’ ভাবে এই নির্দেশ দিয়েছেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। এই নিয়ে বিতর্কের মধ্যে এ বার আদালতের দ্বারস্থ হলেন অমর্ত্য।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy