Advertisement
০৮ মে ২০২৪
Education

Education: অতিমারিতে স্কুলছুট রুখতে গ্রামে শিক্ষাদান

একটি শিশু পড়াশোনার ক্ষেত্রে এই মুহূর্তে কী অবস্থায় রয়েছে তার মান বুঝতে স্বনির্ভর দলের মহিলাদের একটি ‘টুলকিট’ পাঠানো হয়েছে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

দয়াল সেনগুপ্ত 
সিউড়ি শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০২১ ০৬:০৩
Share: Save:

করোনা কালে চরম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সব স্তরের শিক্ষা ব্যবস্থা। তবে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত প্রাথমিক স্তরের পড়ুয়ারাই। স্কুলের সঙ্গে দেড় বছর কোনও সম্পর্ক নেই তাদের। দীর্ঘদিন স্কুলে যাওয়ার অনভ্যাস ও পড়াশোনার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যাওয়া সেই খুদে পড়ুয়াদের পাঠদানে সাহায্য করতে উদ্যোগী হয়েছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন লিভার ফাউন্ডেশন ও ‘প্রথম’ নামে পড়াশোনার মানোন্নয়ন সংক্রান্ত গবেষণার কাজে যুক্ত একটি সংস্থা।

‘লেখাপড়া’ নামক ওই কর্মসূচি শুরু হয়েছে সিউড়ি ১ ব্লকের নগরী গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। পাড়ায়, গ্রামে একটি নির্দিষ্ট জায়গা বেছে নিয়মিত প্রাথমিকের পড়ুয়াদের পাঠদানে সাহায্য করছেন এলাকার মহিলা স্বনির্ভর দলের ইচ্ছুক সদস্যারা। গত মার্চেই এলাকার মোট ৫৫০ জন প্রাথমিক পড়ুয়াকে চিহ্নিত করা হয়েছিল। তাদের পাঠদানে সাহায্যের জন্য বাছা হয়েছিল ৬০ জন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলা সদস্যকে। পড়ুয়াদের কীভাবে পড়াতে হবে সে ব্যাপারে তাঁদের প্রশিক্ষণ দিয়ে কাজও শুরু হয়েছিল। কিন্তু করোনার দ্বিতীয় ঢেউ তা থামিয়ে দেয় কয়েক মাসের জন্য। ফের নতুন উদ্যোমে শুরু হয়েছে পাঠদান। লিভার ফাউন্ডেশনের কর্ণধার, বিশিষ্ট চিকিৎসক অভিজিৎ চৌধুরী বলেন, ‘‘আপাতত পরীক্ষামূলক ভাবে নগরী গ্রাম পঞ্চায়েতে গ্রামে গ্রামে এই ব্যবস্থাপনা শুরু হয়েছে। পরে রাজ্যের অন্য জেলায় ছড়িয়ে দেওয়া হবে।’’

দুই সংগঠনেই যুক্তরা জানাচ্ছেন, প্রান্তিক পরিবারের প্রথম প্রজন্মের পড়ুয়াদের শিক্ষা এই পরিস্থিতিতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইন্টারনেটে পড়া তো দূর অস্ত্‌, স্কুল বন্ধ হওয়ায় তাদের অনেকেই লেখাপড়া ছেড়ে পরিবারকে সাহায্য করার কাজে লেগে গিয়েছিল। সেই অবস্থার কথা ভেবেই থেকেই ওই পড়ুয়াদের সাহায্যের জন্য ‘প্রথম’ নামক সংস্থাটির সঙ্গে যোগাযোগ করা হয় লিভার ফাউন্ডেশনের তরফে।

একটি শিশু পড়াশোনার ক্ষেত্রে এই মুহূর্তে কী অবস্থায় রয়েছে তার মান বুঝতে স্বনির্ভর দলের মহিলাদের একটি ‘টুলকিট’ পাঠানো হয়েছে। তার ভিত্তিতে পড়ুয়াদের দুয়ারে পৌঁছে পাঠদান করছেন স্বনির্ভর দলের সদস্যারা। অভিজিৎবাবু জানাচ্ছেন, স্কুলছুট বৃদ্ধি রুখতেই রুখতেই মায়েদের পাঠদানে যুক্ত করার ভাবনা নেওয়া হয়েছে। স্কুল খোলার পরও কোভিড বিধি মেনে এ কাজ চলবে বলে তিনি জানান।

খুদেরা এই শিক্ষাদানে আগ্রহ দেখাচ্ছে বলে জানাচ্ছেন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যা পূজা মাল, দাঁতামণি হেমব্রম, জুলি রায়, বালিকা মুর্মু, সোমা মুখোপাধ্যায়রা। তাঁরা কেউ কাঁটাবুনিতে, কেউ নগরীতে, কেউ পাথরা, পাথরচাপুড়ির মতো গ্রামে খুদেদের পাঠদানের দায়িত্বে আছেন। নিজেদের কাজ সেরে বিকেলে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়াদের পাশে থাকছেন তাঁরা। স্কুল বন্ধ হলেও, এমন পড়াশোনার আসরে এসে খুশি খুদে পড়ুয়া পায়েল বাগদি, ইন্দিরা বাগদি, এলমা মারাণ্ডি বা অশোক মালের মতো অনেকে। তাদের অভিভাবকেরা বলছেন, ‘‘স্কুল বন্ধ থাকায় ওরা খেলে বেড়াচ্ছিল, এখন তাও পড়াশোনা করছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Education suri town
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE