Advertisement
E-Paper

দখল-রাজ আইনের ফাঁকে, আইনেই গেরো

এক নিয়মে সুবিধা হল। অন্য নিয়মে কিছু অসুবিধাও থাকল! পঞ্চায়েত বা জেলা পরিষদে সরাসরি কোনও দলত্যাগ-বিরোধী আইন কার্যকর নয়। কোনও সদস্য দল বদল করলে নৈতিকতার নিরিখে তাঁর পদত্যাগ দাবি করা যেতে পারে মাত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ অগস্ট ২০১৬ ০৩:২৮

এক নিয়মে সুবিধা হল। অন্য নিয়মে কিছু অসুবিধাও থাকল!

পঞ্চায়েত বা জেলা পরিষদে সরাসরি কোনও দলত্যাগ-বিরোধী আইন কার্যকর নয়। কোনও সদস্য দল বদল করলে নৈতিকতার নিরিখে তাঁর পদত্যাগ দাবি করা যেতে পারে মাত্র।

এই ফাঁক যদি বিরোধীদের হাতে থাকা জেলা পরিষদ দখলের ক্ষেত্রে তৃণমূলের পক্ষে সুবিধার হয়, অসুবিধার কারণ আবার অন্য নিয়ম। জেলা পরিষদের সাধারণ সভায় ভোট দিতে পারেন জেলার সাংসদ ও বিধায়কেরা। বিরোধী দল থেকে সদস্যদের ভাঙিয়ে এনে মালদহ ও জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদ তৃণমূল দখল করতে পেরেছে ঠিকই। মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদেও একই চেষ্টা চালাচ্ছে তারা। কিন্তু মালদহ ও মুর্শিদাবাদ দুই জেলাতেই সাংসদ ও বিধায়কের নিরিখে বিরোধীদের পাল্লা ভারী। তাই দৈনন্দিন সব কাজ না আটকালেও বড় কোনও সিদ্ধান্ত সাধারণ সভায় স্থগিত হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকছেই। যে দিকে ইঙ্গিত করে কংগ্রেসের এক বিধায়ক বলেছেন, ‘‘এই অসুবিধা কাটানোর জন্য তৃণমূলকে আরও মরিয়া হয়ে বিধায়ক ভাঙাতে হবে!’’

শিলিগুড়ির মেয়র তথা বাম জমানার পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য জানাচ্ছেন, জেলা পরিষদে কর্মাধ্যক্ষদের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনা যেতে পারে। সেই নির্বাচনে যে হেতু সাংসদ, বিধায়ক, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিরা ভোট দেন, তাই মালদহ ও মুর্শিদাবাদের (ওই জেলায় সভাধিপতি পরিবর্তন করতে তৃণমূলের দরকার আরও ৮ জন সদস্যের সমর্থন) ক্ষেত্রে তৃণমূলের জেতা কঠিন হয়ে যেতে পারে। জলপাইগুড়ি অবশ্য তেমন নয়। জলপাইগুড়ির জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তীর দাবি, ‘‘অনাস্থা প্রস্তাব যখন আসবে, তখন আমাদের দিকে আরও বেশি সদস্য চলে আসবেন।’’

তবে পঞ্চায়েত স্তরে দলত্যাগ-বিরোধী আইন যথেষ্ট মজবুত না-হওয়ার সুবিধা যে তাঁরা নিচ্ছেন, ঘরোয়া আলোচনায় তা অস্বীকার করছেন না তৃণমূলের শীর্ষ নেতারাও। দলের এক প্রথম সারির নেতার মন্তব্য, ‘‘বামেরা পঞ্চায়েত স্তরে দলত্যাগের বিষয়ে কড়া আইন করে যায়নি। ফলে, এখন নিজেদের ভুলেই নিজেরা ভুগছে!’’ আইনে ফাঁক আছে মেনে নিয়েও সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্য আবার পাল্টা বলছেন, ‘‘আমাদের তো এই ভাবে জেলা পরিষদ দখল করতে হয়নি কখনও! তাই হয়তো এতটা তলিয়ে ভাবা হয়নি। তবে আইন অন্য রকম থাকলেও তৃণমূল বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে এখন সেটা কি পাল্টে নিত না!’’

আইনে স্পষ্ট কিছু বলা না-থাকলেও অবশ্য সাবধানের মার নেই ভেবেই বিরোধীদের এক-তৃতীয়াংশ সদস্য ভাঙানোর পথে হাঁটছে তৃণমূল। কারণ, দলত্যাগ-বিরোধী আইন এড়ানোর জন্য এক-তৃতীয়াংশকে সব সময়েই মাপকাঠি বলে ধরা হয়। তা ছাড়া, সিপিএম নেতা তথা আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য তাঁর আইনি লড়াইয়ের অভিজ্ঞতা থেকে জানাচ্ছেন, কোনও বৈঠক বা সভায় দল যদি হুইপ জারি করে এবং এক-তৃতীয়াংশের কম সদস্য যদি তা অমান্য করেন তা হলে তাঁরা সমস্যায় পড়তে পারেন। এই সম্ভাবনা মাথায় রেখেই বিরোধী শিবির থেকে এক-তৃতীয়াংশ বা তার বেশি সদস্যকে তৃণমূলে নেওয়া হচ্ছে বলে স্বীকার করছেন দলীয় নেতৃত্ব।

Anti defection law TMC CPIM
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy