E-Paper

‘ফ্যাসিবাদ-বিরোধী’ মঞ্চে বাম সংগঠনের পাশে ব্রাত্যও

অযোধ্যায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যখন রামলালার ‘প্রাণ প্রতিষ্ঠা’য় ব্রতী, সেই সময়েই ‘ফ্যাসিবাদের আগ্রাসন’ রোখার আহ্বান জানিয়ে এই শহরে মিছিলে হেঁটেছেন তিস্তা শেতলবাদ, বিনায়ক সেন, হর্ষ মান্দার, দীপঙ্কর ভট্টাচার্যেরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০২৪ ০৮:১১
ফ্যাসিবাদ-বিরোধী মিছিল বিভিন্ন গণস সংগঠনের যৌথ মঞ্চের ডাকে। কলকাতায়।

ফ্যাসিবাদ-বিরোধী মিছিল বিভিন্ন গণস সংগঠনের যৌথ মঞ্চের ডাকে। কলকাতায়। —নিজস্ব চিত্র।

অযোধ্যায় ধর্মীয় অনুষ্ঠান হচ্ছে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর পৌরহিত্যে, দেশের সংবিধানের নীতিই মানা হচ্ছে না। এই অভিযোগে এবং ধর্মকে ‘বিদ্বেষের রাজনীতির হাতিয়ার’ করে তুলতে না দেওয়ার ডাক দিয়ে কলকাতায় মিছিল করল বিভিন্ন বামপন্থী দল-সহ ১৭২টি গণসংগঠনের যৌথ মঞ্চ। ওই সংগঠনগুলি একসঙ্গেই ‘ফ্যাসিবাদ-বিরোধী মহাসম্মেলনে’র আয়োজন করছে, ওই নামের ছাতার নীচেই একজোট হয়েছে বিভিন্ন দল, সংগঠন ও ব্যক্তিত্ব। মিছিল শেষে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে সমাবেশে সিপিআই (এম-এল) লিবারেশন, এসইউসি, আরএসপি-র মতো বামপন্থী দলের নেতাদের সঙ্গেই উপস্থিত থাকলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ও তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা ব্রাত্য বসু।

অযোধ্যায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যখন রামলালার ‘প্রাণ প্রতিষ্ঠা’য় ব্রতী, সেই সময়েই ‘ফ্যাসিবাদের আগ্রাসন’ রোখার আহ্বান জানিয়ে এই শহরে মিছিলে হেঁটেছেন তিস্তা শেতলবাদ, বিনায়ক সেন, হর্ষ মান্দার, দীপঙ্কর ভট্টাচার্যেরা। রাজা সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার থেকে রানি রাসমণি অ্যাভিনিউ পর্যন্ত মিছিল থেকে ধর্মকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে কাজে লাগানোর প্রতিবাদ ছাড়াও কৃষি ঋণ মকুব-সহ কৃষক ও শ্রমজীবী মানুষের জীবনের সঙ্গে সম্পর্কিত এক গুচ্ছ দাবি তোলা হয়েছে। পরে সমাবেশে নাগরিক আন্দোলনের মুখ তিস্তা বলেছেন, ‘‘রামমন্দির বা কোনও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের বিরোধিতা কেউ করছে না। বিরোধিতা ধর্মকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহারের।’’ তাঁর আরও অভিযোগ, ‘‘দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে যাদের কোনও ভূমিকা ছিল না, তারা নাগরিকের স্বাধীনতা কেড়ে নিতে চায়। বিরোধিতার স্বর শোনা গেলেই ইউএপিএ-সহ দমনমূলক আইন প্রয়োগ করা হয়।’’ গণতন্ত্র ও সংবিধান বাঁচানোর জন্য সর্বাত্মক বিজেপি-বিরোধিতার ডাক দিয়েছেন সব বক্তাই। লিবারেশনের সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্করের বক্তব্য, ‘‘বাংলা, বিহার, ঝাড়খণ্ড ও মহারাষ্ট্রে বিজেপিকে আটকে দেওয়া গেলে দেশের সরকারে যাওয়ার পথে তাদের রুখে দেওয়া সম্ভব।’’

বাম নেতা ও সংগঠনের সঙ্গে একমঞ্চে আসা প্রসঙ্গে ব্রাত্যের বক্তব্য, ‘‘আমি এখানে এসেছি আমাদের দলনেত্রীর অনুজ্ঞা মেনে। যাঁরা সংবিধানকে বাঁচাতে চান, যাঁরা বিভাজনের রাজনীতি চান না, তাঁরা এক জায়গায় এসেছেন। এটা ব্যক্তিগত ও নাগরিক অধিকারেরও প্রশ্ন। কারা আসেনি, তা নিয়ে মাথা ঘামাতে চাই না।’’ দীপঙ্কর যা বলেছেন, সেই সূত্রে ব্রাত্যের দাবি, ‘‘উনি কয়েকটি রাজ্যের কথা বলেছেন। আমার মনে হয়, গোটা দেশেই বিজেপি-বিরোধী একটা হাওয়া রয়েছে।’’

সিপিএম অবশ্য এই ‘ফ্যাসিবাদ-বিরোধী মহাসম্মেলনে’ ছিল না। তবে তিস্তাদের সুরেই এ দিন আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেছেন, ‘‘বিজেপি ক্যালেন্ডার বদলে দিচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এখন নতুন কাল শুরু হল। স্বাধীনতা সংগ্রামে সঙ্ঘ ছিল না বলে ২৩, ২৬ বা ৩০ জানুয়ারি নিয়ে তাদের কোনও উৎসাহ নেই। আরএসএস-বিজেপি এখন ২২ জানুয়ারি নিয়ে মাতামাতি করছে!’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Kolkata Ayodhya Ram Temple

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy