Advertisement
০৪ ডিসেম্বর ২০২৩

বাড়তি ভাড়ার প্রশ্নে চুপ অটোর ইউনিয়ন

মন্ত্রী-সান্ত্রি বা ইউনিয়ন, কারও তোয়াক্কা না-করেই শহর দাপিয়ে বেড়াচ্ছে অটো। উৎসবের ‘বোনাস’ তুলতে ইচ্ছেমতো ভাড়া বাড়াচ্ছে তারা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:২৫
Share: Save:

মন্ত্রী-সান্ত্রি বা ইউনিয়ন, কারও তোয়াক্কা না-করেই শহর দাপিয়ে বেড়াচ্ছে অটো। উৎসবের ‘বোনাস’ তুলতে ইচ্ছেমতো ভাড়া বাড়াচ্ছে তারা। ইউনিয়ন রবিবার ১১ দফা নীতি-নির্দেশিকা বেঁধে দিয়ে অটোয় লাগাম পরাতে চেয়েছে। কিন্তু সেই নির্দেশ-একাদশে বাড়তি ভাড়ার জুলুমের ব্যাপারটা এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে বেমালুম।

কেন?

ইউনিয়ন নেতারা মুখ খুলতে নারাজ। আর পরিবহণ দফতরের একাংশের বক্তব্য, পুজোর মতো নানা উৎসবে হুটহাট ভাড়া বাড়ানোর ব্যাপারটা নিয়ে অস্বস্তি এড়াতেই ইউনিয়ন তাদের নির্দেশিকায় বিষয়টি রাখেনি। এবং প্রশ্নের মুখেও অর্থপূর্ণ নীরবতার পথ নিচ্ছেন নেতারা।

কয়েক দিন আগেই পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী দফতরের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পরে জানিয়েছিলেন, বর্ধিত ভাড়া নেওয়া যাবে না। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বর্ধিত ভাড়াই নিয়ে চলেছেন অটোচালকেরা। নবান্নের কিছু কর্তার ব্যাখ্যা, অটোচালকেরা বেঁকে বসলে শাসক দল অথৈ জলে পড়বে। সেই জন্যই মুখ্যমন্ত্রী এই নিয়ে উচ্চবাচ্য চাইছেন না। তাই মন্ত্রীর নির্দেশ অমান্য করা সত্ত্বেও অটোচালকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারছে না প্রশাসন। এ দিনের ১১ দফা নিয়ম-নির্দেশের পরেও তাই নিয়ম ভাঙার পুনরাবৃত্তি ঘটছে।

গড়িয়াহাটে দক্ষিণ কলকাতা অটোরিকশা ড্রাইভার্স ও অপারেটর্স ইউনিয়নের উদ্যোগে এ দিনের কর্মশালায় শুভেন্দুবাবুর থাকার কথা ছিল। কিন্তু তিনি যাননি। তাঁর বক্তব্যও জানা যায়নি। গ্রামোন্নয়ন ও পঞ্চায়েতমন্ত্রী এবং তৃণমূলের শ্রমিক নেতা সুব্রত মুখোপাধ্যায় কর্মশালায় অটোচালকদের নিয়ম মানার নির্দেশ দেন। বলেন, ‘‘অটো ইউনিয়নের কাজ শুধু নীতি নির্ধারণ বা চাঁদা তোলা নয়। যাঁরা নিয়ম মানবেন না, তাঁদের বহিষ্কারও করতে হবে।’’ সেই সঙ্গে তিনি জানান, সকলেই খারাপ নন। ব্যক্তিগত গাড়িও দুর্ঘটনা ঘটায়। তাই বলে সব চালককে খারাপ বলা হয় না। সব অটোরিকশা খারাপ নয়।

কর্মশালার আয়োজক সংগঠনের নেতা মেঘনাথ পোদ্দার জানান, সব অটো ইউনিয়নের অফিসে অভিযোগ-বাক্স রাখা হবে। কোনও যাত্রীর অসুবিধে হলে তিনি সেটা লিখে বাক্সে ফেলতে পারেন।

ইউনিয়নের এই ধরনের ফোঁস করার মধ্যে যে আদৌ দম নেই, সেটা ফাঁস করে দিয়েছেন ৪৭-৫৪ রুটের তৃণমূল ইউনিয়নের নেতা মহম্মদ নুর। নেতাদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে তিনি স্বীকার করে নেন, ‘‘আমাদের এখানে তৃণমূল ইউনিয়নের অস্তিত্ব নেই। নেতাদের কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই অটোচালকদের উপরে।’’

কর্মশালাকে কটাক্ষ করছেন সিটু ইউনিয়নের নেতারা। সিটু নেতা অজিত চৌধুরীর বক্তব্য, ‘প্রস্তাব’ তো ভালই। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, বেড়ালের গলায় ঘণ্টা বাঁধবে কে? ‘‘অতীতেও অনেক কথা বলা হয়েছে। কাজ হয়নি। ওঁদের চালকেরাই যে দাদাগিরি করে, সেটা এই কর্মশালাতেই তা প্রমাণিত,’’ বলছেন ওই সিটু নেতা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE