মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করলেন নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত বাংলাদেশি হাই কমিশনার এম রিয়াজ় হামিদুল্লা। তিন দিনের সফরে রবিবার রাতে নয়াদিল্লি থেকে কলকাতায় এসেছেন তিনি। সোমবার বিকেল ৫টা নাগাদ নবান্নে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন তিনি। হামিদুল্লার সঙ্গে ছিলেন কলকাতায় বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত ডেপুটি হাই কমিশনার মুহাম্মদ আসরাফুল শিকদার। রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থও উপস্থিত ছিলেন সাক্ষাতের সময়ে।
বাংলাদেশের কূটনীতিকেরা উপহার হিসাবে মুখ্যমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন বাংলাদেশের মিষ্টি এবং শাড়ি। তবে বাংলাদেশের হাই কমিশনারের সঙ্গে কী নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর আলোচনা হয়েছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। মুখ্যমন্ত্রী এ বিষয়ে এখনও পর্যন্ত প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করেননি। বাংলাদেশি হাই কমিশনারও কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি। যদিও কলকাতায় বাংলাদেশের ডেপুটি হাই কমিশনার আসরাফুল এই আলাপচারিতাকে ‘সৌজন্য সাক্ষাৎ’ হিসাবেই ব্যাখ্যা করছেন। বস্তুত, প্রায় ন’বছর পরে বাংলাদেশের হাই কমিশনারের সঙ্গে এই ধরনের কোনও আলাপচারিতা হল রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর। এর আগে ২০১৬ সালে বাংলাদেশের তৎকালীন হাই কমিশনার মোয়াজ্জেম আলির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর। তার পর থেকে এমন আলাপচারিতা এই প্রথম।
সোমবার বিকেলে নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করলেন বাংলাদেশি কূটনীতিকেরা। রয়েছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থও। ছবি: সংগৃহীত।
সম্প্রতি, বাংলাদেশের সিরাজগঞ্জে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ, ওই বাড়ির ভিতরে ঢুকে তাণ্ডব চালান কয়েক জন। আসবাব, জানলা ভাঙচুর করা হয়। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই বাড়ির নিরপত্তা রক্ষীদের সঙ্গে এক দলের বচসা হয়। সাইকেল রাখার টোকেন দেওয়া নিয়ে ঝামেলার সূত্রপাত। বচসা মারামারিতে গড়ায়। এক কর্মীকেও মারধরের অভিযোগ উঠেছে। বাংলাদেশের পুলিশ ওই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
সিরাজ়গঞ্জের ওই ঘটনা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠিও পাঠান মুখ্যমন্ত্রী মমতা। মোদীকে তিনি লেখেন, এই ভাঙচুরের ঘটনা শুধু ‘বিস্ময়কর নয়, দুর্ভাগ্যজনক’-ও। ভারতের গর্ব, সংস্কৃতির জন্য এই ভাঙুচুর ‘দুর্ভাগ্যজনক’ বলে জানিয়েছেন তিনি। চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী আরও লেখেন, জীবৎকালে সিরাজগঞ্জের ওই বাড়িতে বহু বার গিয়েছেন রবীন্দ্রনাথ। সেখানে বসে বহু সাহিত্য রচনা করেছেন তিনি। যা ভাঙা হয়েছে, তা শুধু বাড়ি নয়, ‘সৃজনশীলতার ঝর্না’। এই নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে কথা বলার জন্য কেন্দ্রকে আর্জি জানান তিনি।
আরও পড়ুন:
সাম্প্রতিক এই ঘটনার পরে বাংলাদেশের হাই কমিশনারের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর সাক্ষাৎ যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও আলাপচারিতায় কোন কোন প্রসঙ্গ উঠে এসেছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। সোমবার সকালে কলকাতায় বাংলাদেশের ডেপুটি হাই কমিশনেও যান হামিদুল্লা। সেখানে বাংলাদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে ঘণ্টা দুয়েক বৈঠক করেন তিনি। তার পরে পূর্বনির্ধারিত সূচি অনুসারে বিকেলে নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে যান তিনি। মঙ্গলবার তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ জহর সরকারের সঙ্গেও বৈঠক করার কথা রয়েছে হামিদুল্লার।