ওড়িশায় বাংলাদেশি সন্দেহে গ্রেফতার পূর্ব বর্ধমানের ১৬ জন পরিযায়ী শ্রমিক। বাংলায় কথা বলার অপরাধে বাংলাদেশি সন্দেহে কেতুগ্রাম থানার চরসুজাপুর গ্রামের ১৬ পরিযায়ী শ্রমিক ওড়িশা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন। বাংলাদেশি সন্দেহ দূর করতে ওড়িশার ঝাড়সুগদা ও বিজয়নগর থানার পুলিশ ধৃত শ্রমিকদের জন্মশংসাপত্র-সহ অন্যান্য প্রামাণ্য নথি চাইছে বলে পরিবারের দাবি।
ইদের পর কাজের সন্ধানে যান কেতুগ্রামের মৌগ্রাম পঞ্চায়েতের চরসুজাপুর গ্রামের প্রায় ১০০ জন শ্রমিক। তাঁদের মধ্যে থেকে ১৬ জনকে ওড়িশা পুলিশ গ্রেফতার করে। কোনও রকমে এক শ্রমিক বাড়িতে খবর দিতে পারায় ঘটনাটি জানাজানি হয়। এই খবর পাওয়ার পর থেকেই আটক শ্রমিকদের পরিবারে উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা বেড়েছে।
শ্রমিকদের পরিবারের সদস্যেরা মৌগ্রাম পঞ্চায়েতের দ্বারস্থ হয়েছেন। মৌগ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান পার্থপ্রতিম চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘চরসুজাপুর গ্রামের পরিযায়ী শ্রমিকদের পরিবারের কাছে ঘটনার কথা জানতে পেরে আমি বুধবার কেতুগ্রাম ২ নম্বর ব্লক প্রশাসকে চিঠি দিয়ে ১৬ জন শ্রমিকের তালিকা দিয়েছি। চরসুজাপুর গ্রামের আতঙ্কিত পরিবারগুলি ওড়িশার পুলিশের কাছ থেকে প্রিয়জনদের মুক্ত করতে প্রশাসনের মুখ চেয়ে বসে আছেন।’’
চরসুজাপুর গ্রামের প্রায় ২৫০ জন ও়ড়িশার ঝাড়সুগদা এবং বিজয়নগর থানা এলাকায় পরিযায়ী শ্রমিক হিসাবে কাজ করেন। কেউ নির্মাণ শ্রমিক, কেউ আবার ফেরিওয়ালা, কেউ ভাঙারির ব্যবসা করেন। গত ২০-২৫ বছর ধরে ঝাড়সুগদার বেলকোপা এলাকায় অস্থায়ী ডেরায় থাকেন। গ্রেফতার নির্মাণ শ্রমিক ইব্রাহিম শেখের স্ত্রী তারিফুন্নেসা বিবি বলেন, ‘‘রবিবার গভীর রাতে ওড়িশার পুলিশ আমার স্বামী-সহ ২০-২২ জনকে ধরে নিয়ে যায়। কেউ কেউ ছাড়া পেলেও আমার স্বামীকে চার দিন ধরে পুলিশ আটকে রেখেছে।’’ একই অবস্থা হয়েছে বলে জানান গ্রেফতার হওয়া মইদুল শেখের স্ত্রী কোহিনুর বিবিও।