Advertisement
০৪ মে ২০২৪
Coronavirus

পশ্চিম বর্ধমানে আক্রান্ত ৪৮২

বুধবার রাতে প্রকাশিত বুলেটিন অনুযায়ী, আক্রান্তের সংখ্যায় ইতিমধ্যেই পশ্চিম বর্ধমান পিছনে ফেলেছে পড়শি বীরভূম, পুরুলিয়া, বাঁকুড়ার মতো জেলাগুলিকে। ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে পূর্ব বর্ধমানের।

দুপুর ১২টা, বুধবার। বরাকর বাজারে গিজগিজে ভিড়। এমনই হাল নাগরিক সচেতনতার। ছবি: পাপন চৌধুরী

দুপুর ১২টা, বুধবার। বরাকর বাজারে গিজগিজে ভিড়। এমনই হাল নাগরিক সচেতনতার। ছবি: পাপন চৌধুরী

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০২০ ০৮:০০
Share: Save:

বুধবার রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের প্রকাশিত বুলেটিন অনুযায়ী, পশ্চিম বর্ধমানে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৪৮২ জন। এই পরিস্থিতির অন্যতম দাওয়াই, নাগরিক সচেতনতা, মনে করছেন জেলার বাসিন্দারাই। পাশাপাশি, প্রশাসন ‘সক্রিয়’ জানিয়েও আরও কিছু পদক্ষেপ করার দাবি জানাচ্ছেন তাঁরা।

বুধবার রাতে প্রকাশিত বুলেটিন অনুযায়ী, আক্রান্তের সংখ্যায় ইতিমধ্যেই পশ্চিম বর্ধমান পিছনে ফেলেছে পড়শি বীরভূম, পুরুলিয়া, বাঁকুড়ার মতো জেলাগুলিকে। ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে পূর্ব বর্ধমানের।

করোনা মোকাবিলায় রানিগঞ্জের দু’টি ওয়ার্ডে লকডাউন, আসানসোল-দুর্গাপুর মহকুমায় বাজারের সময় নির্দিষ্ট করা, বাজার-হাটে প্রশাসনের নজরদারি, ‘গণ্ডিবদ্ধ এলাকা’ ঘোষণা, ‘সেফ হোম’ তৈরি-সহ নানা পদক্ষেপ করতে দেখা গিয়েছে জেলা প্রশাসনকে।

তা হলে কেন এই পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে? আসানসোলের ডাক্তার অরুণাভ সেনগুপ্ত বলেন, “রাস্তার মোড়, চায়ের দোকান, এমনকি, সন্ধ্যার পরে মাঠে ও পাড়ার অলিগলিতে রোজই জটলা করছেন মানুষ। এর ফলে, গোষ্ঠী সংক্রমণও যে আগামী দিনে ঘটবে না কে বলতে পারে?” ‘ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন’-এর সদস্য সমরেন্দ্রকুমার বসুও একই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। পাশাপাশি, বাজারে নিম্ন মানের ‘হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার’ ব্যবহার নিয়েও সচেতন হওয়ার আর্জি জানান তিনি। নাগরিক সচেতনতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা নিবেদিতা আচার্যও।

সেই সঙ্গে প্রশাসনের কাছে আরও কিছু পদক্ষেপ প্রত্যাশা করছেন জেলার বাসিন্দাদের একাংশ। দুর্গাপুরের একটি হাইস্কুলের প্রধান জইনুল হক, ‘বেঙ্গল সাবার্বান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ়’-এর সাধারণ সম্পাদক প্রফুল্ল ঘোষদের দাবি, ‘‘এখন সংক্রমণ বাড়ছে। ফলে, আগের মতো প্রতিটি রোগীর ক্ষেত্রে নিয়ম মেনে সংস্পর্শে আসা মানুষের সংখ্যা নিরুপণ করা সমস্যার। এই পরিস্থিতিতে র্যাপিড টেস্ট চালু করা জরুরি।’’

এই দু’টি বিষয় নিয়ে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ) দেবাশিস হালদার বলেন, “র্যাপিড টেস্টের বিষয়ে রাজ্য থেকে যেমন নির্দেশিকা আসবে, সেই মতো কাজ করা হবে। তবে প্রশাসনের লাগাতার প্রচারের ফলে, নাগরিক সচেতনতা কিছুটা হলেও বেড়েছে। আরও বাড়াতে হবে।” ডিসি (পূর্ব) অভিষেক গুপ্ত বলেন, ‘‘স্বাস্থ্য-বিধি কঠোর ভাবে মানতে হবে। প্রয়োজনে আইনি পদক্ষেপ করা হবে।’’

এ দিকে, দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের এক জন নার্সিং সুপারিন্টেন্ডেন্ট, পাঁচ জন নার্স, এক কর্মী এবং এক অ্যাম্বুল্যান্স চালকের লালারসের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট ‘কোভিড পজ়িটিভ’ এসেছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার ইন্দ্রজিৎ মাজি। তিনি জানান, পরিস্থিতির মোকাবিলায় মেডিক্যাল ও মেল সার্জিক্যাল ওয়ার্ড এক করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই নার্সিং সুপারিন্টেন্ডেন্ট ও এক নার্স সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। বাকিদের চিকিৎসা চলছে কোভিড হাসপাতালে। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ফিমেল মেডিক্যাল ওয়ার্ড দু’বেলা জীবাণুমুক্ত করা হচ্ছে। আক্রান্তদের সংস্পর্শে আসা সবার লালারসের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।

মহকুমা প্রশাসন (দুর্গাপুর) সূত্রে জানা যায়, দুর্গাপুরের বেনাচিতির উত্তরপল্লিতে এক কোভিড আক্রান্তের হদিস মেলায় সেখানে বুধবার থেকে যানবাহন ঢোকা নিষিদ্ধ করেছে পুলিশ। মহকুমাশাসক (দুর্গাপুর) অনির্বাণ কোলে বলেন, ‘‘এ পর্যন্ত দুর্গাপুরে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১৩৯ জন। মৃত্যুর ঘটনা নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Paschim bardhaman
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE