মুর্শিদাবাদ থেকে এসে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামের বাসিন্দা এক ব্যক্তিকে গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছে। বরাতজোরে প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন ওই ব্যক্তি। গুলি লেগেছে হাতে।
জমি সংক্রান্ত বিবাদে প্রাণে মারার উদ্দেশ্যেই শুক্রবার রাতে ৬-৭ জনের দল সশস্ত্র অবস্থায় ঘিরে ধরে গুলি চালায়। গুলিবিদ্ধ ব্যক্তি চিকিৎসাধীন কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে। নাম নসিয়ত শেখ। অভিযুক্তরা গুলিবিদ্ধ ব্যক্তির পূর্ব পরিচিত। অভিযুক্তদের তালিকায় এক পঞ্চায়েত সদস্য রয়েছে বলে অভিযোগ নসিয়ত শেখের। বাড়ি মুর্শিদাবাদ জেলার কর্ণসুবর্ণে হলেও জখম ব্যক্তি কেতুগ্রামের কেউগুড়ি গ্রামে গত কয়েক বছর ধরে বসবাস করছেন। ঘটনার পর অভিযুক্তেরা পলাতক।
মুর্শিদাবাদের কর্ণসুবর্ণের বাসিন্দা ছিলেন নসিয়ত। কেতুগ্রামের কেঁওগুড়ি গ্রামে তাঁর শ্বশুরবাড়ি। প্রায় ২৫ বছর আগে তিনি কেঁওগুড়ি গ্রামে বসবাস শুরু করেন। পেশায় জনমজুর। চার মেয়ে, এক ছেলে। মেয়েদের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। নসিয়ত জানিয়েছেন, শুক্রবার রাত ৮টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে। বাড়িতে ছিলেন নসিয়তের স্ত্রী সরিফা বিবি। ছোট মেয়ে খাইরুল বিবির ১১ দিন আগে বিয়ে হয়েছে। খাইরুল দুদিন আগে বাপেরবাড়িতে আসেন । ছেলে মনিরুল বাড়িতে ছিলেন না।
নসিয়ত বলেন, ‘‘কর্ণসুবর্ণ গ্রামের বাসিন্দা আমার পরিচিত মোসের শেখ আমাকে রাতে ফোন করে কেঁওগুড়ি বাসস্ট্যান্ডের কাছে আসতে বলে জমিজমা সংক্রান্ত বিষয়ে কথা বলার জন্য। আমি মোসেরর কথা শুনে সাইকেল চালিয়ে কেঁওগুড়ি মোড়ে যাই। যখন মোসেরের সঙ্গে কথাবার্তা চলছে, তখন চারটি বাইকে চড়ে পাঁচ-ছ’জন এসে আমাকে ঘিরে ধরে। একটি চারচাকা গাড়িও ছিল। আমার পরিচিত একজন আগ্নেয়াস্ত্র বার করে বুক লক্ষ্য করে তাক করে। তখন তার হাতটা চেপে ধরতেই গুলি ছিটকে আমার হাতে লাগে। এরপর আমি ছুটে পালানোর চেষ্টা করি। তখন আবারও কয়েক রাউন্ড গুলি চালায়। তবে সেগুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।’’
তাঁর চিৎকারে আশপাশের লোকজন বেরিয়ে এলে পালিয়ে যান অভিযুক্তেরা। রাতেই খবর পেয়ে জখম নসিয়তকে উদ্ধার করে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করায় পুলিশ। নসিয়ত শেখের বক্তব্য, কর্ণসুবর্ণ গ্রামে পারিবারিক জমি সংক্রান্ত বিবাদে তাঁকে প্রাণে মারতেই মুর্শিদাবাদ থেকে এসেছিলেন অভিযুক্তেরা।
মুর্শিদাবাদ জেলার বেলডাঙা এলাকার বাসিন্দা এক ব্যক্তির কেঁওগুড়ির গ্রামের কাছে বিঘা দশেক জমি আছে। সেই ব্যক্তি জমি বিক্রয় জন্য খরিদ্দারের খোঁজ করছেন। মোসের শেখের শ্যালিকার বিয়ে হয়েছে কেঁওগুড়ি গ্রামে। বেলডাঙার ওই জমিমালিক তাই মোসেরকেও খরিদ্দার দেখার জন্য বলেছিলেন।
নসিয়ত শেখ এই ঘটনায় মোসের শেখ, সুকুর শেখ,জাহিরুল শেখ, ইসমাইল শেখ-সহ কয়েক জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলছেন। নসিয়তের দাবি, ‘‘জমি সংক্রান্ত পুরোনো বিবাদের জেরে আমাকে খুন করার চেষ্টা করে সুকুর শেখরা।’’
প্রাথমিক ভাবে পুলিশের দাবি গুলি চলেনি। সম্ভবত মদের বোতল ভেঙে ভাঙা কাঁচের বোতল দিয়ে হামলা চালানো হয়েছে।