Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

নামল না ইসিএল, উদ্যোগী প্রশাসন

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত রবিবার বিকেল সাড়ে ৫টা নাগাদ আলডিহির ‘অবৈধ’ খাদানে নামেন লাগোয়া আকনবাগানের মাজিপাড়ার তিন যুবক। তার পর থেকে তাঁদের আর কোনও খোঁজ মিলছিল না।

ঘটনাস্থলে উদ্ধারকারী দলের সদস্যেরা। নিজস্ব চিত্র

ঘটনাস্থলে উদ্ধারকারী দলের সদস্যেরা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কুলটি শেষ আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০১৯ ০১:৩২
Share: Save:

নিখোঁজ যুবকদের উদ্ধারের চেষ্টা বন্ধ হয়ে থাকায় ক্ষোভ-বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল এলাকায়। ইসিএলের কাছে উদ্ধারকাজ শুরুর দাবিতে সরব হয়েছিলেন এলাকার বিধায়কও। কিন্তু আলডিহির ওই খাদান এলাকায় উদ্ধারকাজে বিপদের সম্ভাবনা রয়েছে জানিয়ে তাতে রাজি হননি ইসিএলের কর্তারা। বৃহস্পতিবার অবশ্য জেলা প্রশাসনের তরফে উদ্ধারকাজ চালানোর উদ্যোগ হল। সকাল থেকে শুরু করে তা চলল রাত পর্যন্ত।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত রবিবার বিকেল সাড়ে ৫টা নাগাদ আলডিহির ‘অবৈধ’ খাদানে নামেন লাগোয়া আকনবাগানের মাজিপাড়ার তিন যুবক। তার পর থেকে তাঁদের আর কোনও খোঁজ মিলছিল না। এলাকাবাসীর একাংশের দাবি, সে দিন ওই যুবকদের সঙ্গেই খাদানে নেমেছিলেন ওই পাড়ার আর এক যুবক। তিনি গ্রামে ফিরে দুর্ঘটনার খবর দেন। এর পরে বাসিন্দারা প্রথমে নিজেরা উদ্ধারের চেষ্টা করেন। সফল না হওয়ায় পুলিশে খবর দেওয়া হয়।

পুলিশ সোমবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ইসিএলের উদ্ধারকারী দলকে সঙ্গে নিয়ে তল্লাশি চালিয়েও ওই যুবকদের সন্ধান পায়নি। উদ্ধারকারী দলের সদস্যেরা জানান, খনিগর্ভে প্রচুর কার্বন মনোক্সাইড গ্যাস রয়েছে। খনিমুখ অত্যন্ত সংকীর্ণ হওয়ায় অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে ভিতরে ঢুকতে পারেননি তাঁরা। খনির মুখ বড় করা না হলে তাঁরা উদ্ধারকাজ চালাতে পারবেন না বলেও জানান। ইসিএল ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এর পরে খনিমুখ বড় করার বিষয়ে উদ্যোগ হয়নি। ফলে, মঙ্গল ও বুধবার উদ্ধারকাজ থমকে থাকে। তাতে ক্ষুব্ধ হন গ্রামবাসী। দফায়-দফায় বিক্ষোভ হয়। এলাকায় পাহারায় থাকা পুলিশকর্মীকেও এলাকাছাড়া করার অভিযোগ ওঠে।

বুধবার ঘটনাস্থলে গিয়ে ইসিএলের কাছে উদ্ধারকাজ শুরু করার দাবি জানান কুলটির বিধায়ক উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়। সে দিন একই দাবিতে জেলাশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেয় আদিবাসী কো-অর্ডিনেশন কমিটি। ইসিএলের বিশেষজ্ঞেরা অবশ্য জানান, ওই এলাকায় সংস্থার নিজস্ব খনি না থাকায় কোনও নকশা নেই তাঁদের কাছে। সেখানে উদ্ধারকাজ চালাতে গেলে ধস-সহ নানা বিপত্তি তৈরি হতে পারে। সব দিক খতিয়ে না দেখে কাজে নামা সম্ভব নয় বলে জানানো হয় ইসিএলের তরফে। তবে বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সকাল থেকে উদ্ধারকাজে নামে এনডিআরএফ।

এ দিন উদ্ধারকাজ চলাকালীন প্রায় দু’ঘণ্টা ঘটনাস্থলে ছিলেন বিধায়ক উজ্জ্বলবাবু। তিনি বলেন, ‘‘ইসিএল কর্তৃপক্ষ বুধবারই তাঁদের কিছু সমস্যার কথা জানিয়েছিলেন। আমরা চেয়েছিলাম যে ভাবে হোক উদ্ধারকাজ শুরু করতে হবে। প্রশাসনের উদ্যোগে সেই কাজ হওয়ায় আমরা খুশি।’’ আগে কখনও কোনও খাদানে উদ্ধারকাজের অভিজ্ঞতা তাঁদের রয়েছে কি না, সে প্রশ্ন অবশ্য এ দিন এড়িয়ে গিয়েছেন উদ্ধারকাজে নামা এনডিআরএফ দলের সদস্যেরা। দলটির নেতৃত্বে থাকা ডেপুটি কমান্ডান্ট অভয়কুমার সিংহ শুধু বলেন, ‘‘আমরা এর আগে বহু দুর্গম পরিস্থিতিতে উদ্ধারকাজ চালিয়েছি। এখানেও সেই রকম কাজই করছি।’’ শেষমেশ রাতে দেহ উদ্ধারে সফল হন তাঁরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kulti NDRF Illegal Mine
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE