সুপ্রিম কোর্টের রায়ে চাকরি হারানো শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের তালিকায় নাম ছিল ছেলে ও পুত্রবধূর। সেই খবর শোনার পরে মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছিলেন পূর্ব বর্ধমানের সোনাকুড় গ্রামের বাসিন্দা মঞ্জুলা যশ (৬৯)। আচমকা হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে শুক্রবার মৃত্যু হয় তাঁর। মৃতের পরিবারের দাবি, ছেলে ও পুত্রবধূর চাকরি হারানোর শোক সহ্য করতে না পেরে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হন ওই বৃদ্ধা।
মৃতের পরিবার সূত্রের খবর মঞ্জুলার ছেলে অর্ণব যশ বীরভূমের চাতরা গণেশলাল হাইস্কুলের শিক্ষক ছিলেন। তাঁর স্ত্রী চন্দ্রানী দত্ত ছিলেন বীরভূমের নওয়াপাড়া হাই স্কুলের শিক্ষিকা। বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট রাজ্য স্কুল সার্ভিস কমিশনের ২০১৬ সালের শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী নিয়োগের প্যানেল বাতিল করে দেয়। ফলে চাকরি হারাতে হয় ওই দম্পতিকে।
অর্ণবের দাবি, কলকাতা হাই কোর্টের ডিশিভন বেঞ্চ এসএসসির ২০১৬-র নিয়োগের প্যানেল বাতিল করার পরেই মা অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। চন্দ্রানীর দিদি ইন্দ্রানী জানান, মানসিক যন্ত্রণায় ছিলেন মঞ্জুলাদেবী। ছেলে ও পুত্রবধূর চাকরি হারানোর খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার হৃদ্রোগে আক্রান্ত হন তিনি। তাঁকে ভর্তি করানো হয়েছিল বর্ধমানের বামচাঁন্দাইপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে। শুক্রবার সকালে তাঁর মৃত্যু হয়।
বৃদ্ধার মৃত্যুর খবর চাউর হতেই এলাকায় শোকের ছায়া নামে। তাঁর পরিবার ও পরিজনেরা এই ঘটনায় জন্য রাজ্য সরকার, স্কুল সার্ভিস কমিশন ও সিবিআই-কে (শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি মামলার তদন্তকারী সংস্থা) দায়ী করেন। ইন্দ্রানীর কথায়, ‘‘সাত বছর চাকরি করার পরে তা চলে যাবে, এটা ভাবাই যায় না। এটা মেনে নেওয়া যায় না।’’ অর্ণব এই রায়ের জন্য রাজ্য সরকারের পাশাপাশি বিরোধীদেরও দায়ী করেন।
মৃতার আত্মীয় মৌসুমি দত্তের মতে, এ রাজ্যে মহিলাদের নিরাপত্তা নেই। এখন দেখা যাচ্ছে এ রাজ্যে সরকারি চাকরিও নিরাপদ নয়। গোটা ঘটনায় দায় রাজ্য সরকার অস্বীকার করতে পারে না।
যদিও তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, গোটা ঘটনার জন্য দায়ী রাজ্যের বিরোধীরা। রাজ্য সরকার চাকরি হারানো শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের
পাশে রয়েছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)