প্রতীকী ছবি।
গত বছর সেপ্টেম্বরের এই সময় পর্যন্ত প্রায় ৮৩ জন ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছিলেন। এ বার সেই সংখ্যাটা মাত্র সাত জন। এমনটাই দাবি করে ডেঙ্গি রোধে নিজেদের সাফল্যের কথা জানিয়েছে আসানসোল পুরসভা। পাশাপাশি, রবিবার রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের নির্দেশে ‘ডেঙ্গি বিজয় অভিযান’ পালিত হল জেলার নানা প্রান্তে।
পুরসভার মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা কমার ওই পরিসংখ্যানটি জানিয়ে সাফল্যের কয়েকটি কারণের কথা উল্লেখ করেন। পুর-আধিকারিকদের মতে, কারণগুলি— প্রথমত, পুরসভার অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের নিয়ে তৈরি শতাধিক দল বহুতল আবাসন এবং বাড়ি-বাড়ি গিয়ে জল জমার প্রবণতা বন্ধ করতে হবে, এই সচেতনতা প্রচার করে সাফল্য পেয়েছেন। তাঁরা খেয়াল রেখেছেন, কোথাও কেউ জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন কি না। দ্বিতীয়ত, পুকুরের জঞ্জাল সাফাই, নিকাশি ও আবর্জনা সাফাইয়ে জোর দেওয়া হয়েছে। তৃতীয়ত, শহরের নানা প্রান্তে বন্ধ কারখানাগুলিতে জল জমতে দেওয়া হয়নি। চতুর্থত, পুর-এলাকায় আঢাকা নর্দমা রাখা হয়নি বলে দাবি। যে সব এলাকায় তা সম্ভব হয়নি, সেখানে গাপ্পি মাছ ছাড়া হয়। পঞ্চমত, গত বছর পুর-এলাকার ৪, ২২, ২৩, ৪৫, ৪৬, ৪৭, ৫৩, ৫৪, ৭৭, ৮৪, ৮৯, এই ১১টি ওয়ার্ডকে ‘অতি সংবেদনশীল’ ঘোষণা করা হয়েছিল। এ বার এই ওয়ার্ডগুলিতে বিশেষ নজর দেওয়া হয়। ষষ্ঠত, চলতি বছরে, ছ’নম্বর বরোয় আসানসোলের ১০টি ওয়ার্ড এবং এক নম্বর বরোয় জামুড়িয়ার ১০টি ওয়ার্ডে গত বারের অভিজ্ঞতা থেকে পুরসভা বাড়তি নজরদারি চালানো হয়।
এ দিকে, রবিবার পুরসভায় ‘ডেঙ্গি বিজয় অভিযান’-এর সূচনা করেন আসানসোল পুরসভার অধ্যক্ষ অমরনাথ চট্টোপাধ্যায় ও মেয়র পারিষদ (সাফাই ও নিকাশি) লক্ষ্মণ ঠাকুর। অমরনাথবাবু বলেন, ‘‘গত বারের তুলনায় আসানসোল পুরসভা এলাকায় এ বার ডেঙ্গির প্রকোপ প্রায় নেই। কী ভাবে সাফল্য মিলেছে, তা প্রচার করে বাসিন্দাদের আরও সচেতন করা হচ্ছে।’’
এ দিন সকালে আসানসোলের কালীপাহাড়ির ছ’নম্বর বরো কার্যালয়ে একটি বিশেষ সচেতনতা কর্মসূচি পালিত হয়। পরে বরো কার্য়ালয়ের কর্মী, আধিকারিকেরা আশপাশের এলাকায় পদযাত্রা করেন। জামুড়িয়ায় কর্মসূচির সূচনা করেন মেয়র পারিষদ (জল) পূর্ণশশী রায়। এ ছাড়া, ট্যাবলোর মাধ্যমে রানিগঞ্জে ২ নম্বর বরো কার্যালয় থেকে সচেতনতা প্রচার চালানো হয়। পরে মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) দিব্যেন্দু ভগতের নেতৃত্বে হাটতলা এলাকায় পুরকর্মীরা সাফাই অভিযান চালান। পথচারীদের ‘মাস্ক’ দেওয়া হয়। দিব্যেন্দুবাবু জানান, এই অভিযান নভেম্বর মাস পর্যন্ত চলবে।
পাশাপাশি, দুর্গাপুরেও এ দিন এই কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল। দুর্গাপুরে অতীতে ডেঙ্গির প্রকোপ, এমনকি প্রাণহানির ঘটনাও সামনে এসেছিল। তবে, গত কয়েক বছরে ডেঙ্গি রোধে জোর দিয়েছে দুর্গাপুর পুরসভাও। এ দিন মুচিপাড়ায় ‘ডেঙ্গি বিজয় অভিযান’-এর সূচনা করেন পুরসভার মেয়র দিলীপ অগস্তি। মুচিপাড়া থেকে বার হয় সচেতনতা-র্যালি। এই কর্মসূচিতে মেয়র ছাড়াও যোগ দেন মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) রাখি তিওয়ারি। মেয়র বলেন, ‘‘পুরসভা নিজের কাজ করছে। তবে, ডেঙ্গি-রোধে শহরবাসীকেও সচেতন থাকতে হবে।’’ পুরসভা জানায়, সাফাইয়ে জোর দেওয়া হবে। নর্দমায় মশার লার্ভা মারার তেল, গাপ্পি মাছ ছাড়া হবে। বাড়ি-বাড়ি গিয়ে স্বাস্থ্যকর্মীরা ইতিমধ্যেই সমীক্ষা করেছেন। ফের তাঁরা গিয়ে সচেতন করবেন বাসিন্দাদের যাতে বাড়িতে কোথাও জল জমে না থাকে। কারও জ্বর হলে ডেঙ্গি কি না, তা জানার জন্য দ্রুত রক্ত পরীক্ষা করানোর ব্যবস্থা করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy