রাহুল সিংহের পাশে বিতর্কিত নেতা শ্যামল রায়। নিজস্ব চিত্র
পুলিশকে মারধর, তাদের গাড়ি ভাঙচুর এবং তাতে আগুন লাগানোর কথা বলে এ বার বিতর্কে পূর্ব বর্ধমানের বিজেপির এক যুব নেতা। বৃহস্পতিবার বর্ধমান টাউন হলে নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) নিয়ে একটি সভায় বিভিন্ন জায়গায় দলের নেতাদের মার খাওয়ার প্রসঙ্গ টেনে শ্যামল রায় নামে ওই নেতা বলেন, ‘‘আমরা সংযত রয়েছি। কিন্তু যদি জেলা সভাপতি নির্দেশ দেন, তাহলে তৃণমূলকে পাল্টা আক্রমণ করতে পারি। তবে প্রথম মারব পুলিশকে।’’ দলের যুব কার্যকর্তাদের তাঁর পরামর্শ, “তৃণমূলকে দমানোর আগে, পুলিশের ভ্যান জ্বালান, পুলিশের গাড়ি ভাঙুন। দেখবেন, তৃণমূলও ভয় পেয়ে গিয়েছে। কারণ, তৃণমূল চলছে পুলিশের উপর দিয়ে।’’
ওই সময় মঞ্চে হাজির ছিলেন বিজেপির জেলা সাংগঠনিক সভাপতি (বর্ধমান সদর) সন্দীপ নন্দী, দলের যুব সংগঠনের রাজ্য সভাপতি দেবজিৎ সরকার। সন্দীপবাবু বলেন, ‘‘এ নিয়ে কথা বলব না।’’ দেবজিৎবাবুর দাবি, ‘‘ওই নেতা সংগঠনের পদে নেই । এ ধরনের কোনও মন্তব্য করা হলে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক ও দুর্ভাগ্যজনক। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব।’’
তবে শ্যামলবাবুর মন্তব্যে উস্কানির রসদ দেখছেন অন্যেরা। তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথের কথায়, “বিভিন্ন ভাবে রাজ্যে অশান্তির চেষ্টা চালাচ্ছে বিজেপি। উস্কানিমূলক বক্তব্য রেখে বর্ধমানেও গোলমাল করতে চাইছে। পুলিশের উচিত ব্যবস্থা নেওয়া।’’ সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য আভাস রায়চৌধুরীর মন্তব্য, “বিজেপি নেতারা সভ্য ভাষায় কথা বলছেন না।’’ জেলার পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় শুধু বলেন, ‘‘আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।’’
এর আগেও ‘বিতর্কিত’ মন্তব্য করে, দলের অন্য নেতাদের ‘দ্বন্দ্বে জড়িয়ে’ সংবাদ শিরোনামে এসেছেন শ্যামলবাবু। পরে মন্তব্যের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, “পুলিশকে মারতে বলাটা আমার কাছে কষ্টের। সবাই বলবে, এ কেমন বিজেপি নেতা! কিন্তু যে দিন আমাদের যুব নেতারা বিনা দোষে মার খাচ্ছিলেন, বিনা দোষে মাদক মামলায় জেল খাটছিলেন, সে দিনও কষ্ট হয়েছিল।’’
শ্যামলবাবু ‘বিতর্কিত’ মন্তব্য করার পরেই সভায় পৌঁছন বিজেপির অন্যতম কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিংহ। তবে সভায় তিনি দাবি করেন, ‘‘অধিকাংশ পুলিশ বিজেপির পক্ষে রয়েছেন, কিন্তু তাঁরা কিছু করতে পারছেন না। এটা যদি মিথ্যা হয় তা হলে রাজনীতি ছেড়ে দেব।’’ পরে শ্যামলবাবুর মন্তব্য সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘‘আমি ওই কথা শুনিনি। যদি এ রকম কেউ বলে থাকেন, তিনি অন্যায় করেছেন। আমরাও যদি তৃণমূলের মতো কথা বলি, তা হলে মানুষ কার কাছে প্রত্যাশা রাখবেন? দলীয় ভাবে খোঁজ নেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy