E-Paper

ফের কেন্দ্রীয় দল, নজরে আট পঞ্চায়েত

জেলা প্রশাসন একশো দিনের তথ্য, শেষ তিন বছরের প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার তালিকা, সহায়ক-ভাতার তালিকা, স্বনির্ভর গোষ্ঠীর তথ্য প্রস্তুত রাখতে বলেছে পঞ্চায়েতগুলিকে।

সৌমেন দত্ত

শেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০২৫ ০৮:১৭
চলছে কাজ।

চলছে কাজ। —ফাইল চিত্র।

রাজ্যে একশো দিনের কাজ প্রকল্প আটকে থাকার নেপথ্যে পূর্ব বর্ধমান অন্যতম। কয়েক মাস আগে সেই বাধা কাটানো গিয়েছে বলে দাবি করেছিল জেলা প্রশাসন। কেন্দ্রের গ্রামোন্নয়ন দফতরের ‘ন্যাশনাল লেভেল মনিটরিং’ (এনএলএম) দলের সদস্য হয়ে দিল্লির একটি সংস্থার দুই প্রতিনিধি বুধবার বর্ধমানে এসেছেন। কেন্দ্রীয় দল পরিদর্শনের পরে আটকে থাকা বরাদ্দ মিলবে কি না, সেই প্রশ্ন ঘোরাফেরা করছে প্রশাসনের অন্দরে।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কেন্দ্রের ওই দুই প্রতিনিধি আজ, বৃহস্পতিবার জেলাশাসক ও অন্য আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। পরে তাঁরা জেলার তিনটি ব্লকের আটটি পঞ্চায়েত পরিদর্শন করবেন। দশ দিন তাঁরা জেলায় থাকবেন। আট দিনে আটটি পঞ্চায়েতে কেন্দ্রের নানা প্রকল্পের কাজ খতিয়ে দেখবেন তাঁরা। কেন্দ্রের গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক সূত্রে জানা যায়, একশো দিনের কাজ, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা (গ্রামীণ), প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ সড়ক যোজনা, সহায়ক-ভাতা, স্বনির্ভর গোষ্ঠী গঠন-সহ ১০টি প্রকল্প দেখার কথা প্রতিনিধিদের। পূর্ব বর্ধমান ছাড়াও আলিপুরদুয়ার, বাঁকুড়া, বীরভূম, পশ্চিম মেদিনীপুর, পুরুলিয়া, পূর্ব মেদিনীপুর, দুই ২৪ পরগনা ও নদিয়ায় যাবে দলটি।

সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় দলের পরিদর্শন নিয়ে জেলা প্রশাসন বৈঠক করেছে। বিডিও-রা পঞ্চায়েতের নির্মাণ সহায়ক, আধিকারিকদের সঙ্গে গত দু’দিন ভার্চুয়াল বৈঠক করেছেন। জানা যাচ্ছে, জেলা প্রশাসন কেন্দ্রের প্রতিনিধি দলের দুই প্রতিনিধির (সিনিয়র কনসালটেন্ট ধরম কুমার ও অ্যাসোসিয়েট কনসালটেন্ট সুরেন্দ্র সিংহ) কাছে ১৬টি পঞ্চায়েতের (আউশগ্রাম ২ ব্লকের দেবশালা, রামনগর, অমরপুর, কোটা, ভেদিয়া, এড়াল, কাটোয়া ২ ব্লকের অগ্রদ্বীপ, শ্রীবাটি, গাজিপুর, সিঙ্গি, করুই ও জগাদনন্দপুর, পূর্বস্থলী ২ ব্লকের মুকসিমপাড়া, কালেখাঁতলা ১, পাটুলি ও মাজদিয়া) তালিকা তুলে দেবে। বৃহস্পতিবার প্রথম বৈঠকের পরে কোন আটটি পঞ্চায়েতে তাঁরা যাবেন, জেলা প্রশাসনকে তা জানিয়ে দেবেন প্রতিনিধিরা।

জেলা প্রশাসন একশো দিনের তথ্য, শেষ তিন বছরের প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার তালিকা, সহায়ক-ভাতার তালিকা, স্বনির্ভর গোষ্ঠীর তথ্য প্রস্তুত রাখতে বলেছে পঞ্চায়েতগুলিকে। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার কেন্দ্রীয় লোগো রয়েছে কি না, তা-ও দেখতে বলা হয়েছে। জবকার্ডের তালিকা, রেজিস্টার, কেস-রেকর্ড, যোগ‍্য শ্রমিকদের মাস্টার রোল, প্রকিওরমেন্ট ফাইল হাতের সামনে রাখতে হবে। জেলা পরিষদের সভাধিপতি শ্যামাপ্রসন্ন লোহার বলেন, “কেন্দ্রীয় দল তো প্রতি বছরই আসছে। কিন্তু কিছুই খুঁজে পায় না। একশো দিনের কাজ প্রকল্প চালুর নির্দেশ দিয়েছে আদালত। আশা করব, কেন্দ্রীয় দলটি ঘুরে যাওয়ার পরে বরাদ্দ ছাড়া হবে।”

২০১৯-র জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে পূর্ব বর্ধমান ও হুগলির ১২টি পঞ্চায়েতে ৬২টি কাজ পরিদর্শন করেছিল কেন্দ্রীয় দল। একশো দিনের কাজ প্রকল্পে নানা অনিয়মের সন্ধান পান গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের আধিকারিকেরা। কেন্দ্র ওই সব পঞ্চায়েতের থেকে টাকা ফেরতের নির্দেশও দিয়েছিল। না দিলে আইনানুগ ব্যবস্থার ইঙ্গিতও দিয়েছিলেন আধিকারিকেরা। রায়না ও খণ্ডঘোষের একাধিক পঞ্চায়েত টাকা ফেরত দিয়েছিল। কিন্তু পদ্ধতিগত প্রশ্ন তুলে আউশগ্রামের এড়াল পঞ্চায়েতের ৬০.৮২ লক্ষ ও রামনগর পঞ্চায়েতের ১৩ লক্ষ টাকা আটকে রাখা হয়। বার বার চিঠি দিয়ে টাকা ফেরত চেয়েছিল কেন্দ্রের গ্রামোন্নয়ন দফতর। ধাপে ধাপে সেই টাকা দেওয়া হয়েছিল। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, কয়েক মাস আগে সব টাকা দিয়ে দেওয়া হয়েছে। নানা প্রশ্ন তুলে চিঠি পাঠিয়েছিল কেন্দ্র। প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, “টাকা ফেরত থেকে শুরু করে সব প্রশ্নের জবাব দেওয়া হয়েছে। আশা করছি, পরিদর্শনের পরে আটকে থাকা বরাদ্দ ছাড়বে কেন্দ্র।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

East Bardhaman

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy