E-Paper

প্রতারণার বড় নালিশ ঘিরে বাধল তরজা

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার বিকেলে আসানসোল পুরসভার ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের কেটি রোড এলাকায় শাকিলের বাড়িতে এক দল লোকজন হাজির হন।

নীলোৎপল রায়চৌধুরী, সৌমিত্র গঙ্গোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০২৫ ১০:১২
—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

মোটা টাকা আদায় করে প্রতারণার অভিযোগকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক তরজা বাধল আসানসোলে। যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তিনি তৃণমূলের সংখ্যালঘু সেলের নেতার ছেলে। তৃণমূলের একাংশের দাবি, শাকিল আহমেদ নামে ওই নেতা এখন দলের কোনও পদে নেই। যদিও দলের অন্যতম রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা আসানসোলের নেতা ভি শিবদাসন জানান, শাকিল তাঁদের দলের সংখ্যালঘু সেলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক। গোটা বিষয়টি নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত দাবি করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সরব হয়েছে সিপিএম-ও।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার বিকেলে আসানসোল পুরসভার ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের কেটি রোড এলাকায় শাকিলের বাড়িতে এক দল লোকজন হাজির হন। তাঁদের দাবি, শাকিলের ছেলে তাহসিন আহমেদ তিন বছর আগে একটি সংস্থা চালু করে মাসে ১৫ শতাংশ সুদের লোভ দেখিয়ে তাতে বিনিয়োগের জন্য স্থানীয় বাসিন্দাদের আকৃষ্ট করেন। এর পরে প্রায় তিন হাজার জন তাঁর কাছে মোটা টাকা বিনিয়োগ করেন। সংস্থার অফিস ছিল‌ রেলপাড় এলাকায়। রবীন্দ্র সিংহ নামে এক ব্যক্তি নিজেকে প্রাক্ত বিএসএফ কর্মী জানিয়ে দাবি করেন, তিনি ৪১ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন। গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত নিয়মিত টাকা পেয়েছেন। মূল আমানতের ৩৩ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ফেরত পেয়েছেন।‌ তার পরে আর পাচ্ছেন না।‌ মহিশীলার বাসিন্দা মৌটুসি দত্তের দাবি, ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সুদের টাকা পেলেও, মূল আমানত কুড়ি লক্ষ টাকা পাননি। ফেব্রুয়ারিতে তাহসিন নিজে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন বলে প্রচার করেন। পরে তাঁদের জানান, অক্টোবরে মূল আমানত ফেরত দিতে পারবেন।‌ কিন্তু অক্টোবরের তিন সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও, টাকা না পাওয়ায় তাঁরা জোট বেঁধে বুধবার তাহসিনদের বাড়িতে গেলে, হেনস্থা করা হয়।‌

রাজ্যের বিরোধী দলনেতা, বিজেপির শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেছেন, বিনিয়োগের নামে তোলা টাকা ঘুরপথে দলীয় তহবিলে জমা হয়েছে, নাকি বেনামি সম্পত্তি কেনা হয়েছে, না দেশবিরোধী কাজে ব্যবহার করা হবে, তার তদন্ত হওয়া দরকার। সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য পার্থ মুখোপাধ্যায় জানান, শাকিল এক সময়ে ‌ বামফ্রন্ট পরিচরিত আসানসোল পুরসভায় ফরোয়ার্ড ব্লকের হয়ে বরো চেয়ারম্যান এবং মেয়র পারিষদ সদস্য ছিলেন। রাজ্যে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরে, শাকিল দল পাল্টে তৃণমূলে যোগ দেন। পার্থের দাবি, ‘‘এক সময়ে তাঁর স্বচ্ছ ভাবমূর্তি ছিল। এখন তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ উঠছে। যে দলে যোগ দিয়েছেন, তাতে হয়তো এই পরিবর্তনই স্বাভাবিক।’’ আসানসোল পুরসভার ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস কাউন্সিলর সৈয়দ মোহাম্মদ মোস্তফার অভিযোগ, ‘‘জমি বিক্রি করে, গচ্ছিত টাকা জমা দিয়ে,‌ বেশি টাকা পাওয়ার আশায় ব্যাঙ্ক থেকে ধার নিয়ে— নানা ভাবে মানুষজন এই প্রতারক চক্রে টাকা জমা দিয়ে এখন দিশাহারা হচ্ছেন। দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি ও ভুক্তভোগীদের টাকা ফেরতের ব্যবস্থা করুক প্রশাসন।’’

তৃণমূল নেতা শিবদাসনের বক্তব্য, ‘‘যে অভিযোগ উঠেছে, তা সত্যি হলে, রেহাই পাওয়ার কোনও জায়গানেই।’’ পুলিশ জানায়, একটি অভিযোগ জমা পড়েছে এ বিষয়ে। তার তদন্ত শুরু হয়েছে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

TMC BJP

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy