দুর্গাপুরের বীরভানপুরে যজ্ঞ। শনিবার। নিজস্ব চিত্র
করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের সুস্থ হয়ে ওঠার প্রার্থনা জানিয়ে শনিবার পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুরের বীরভানপুরে আয়োজিত হল যজ্ঞ। সেখানে জড়ো হয়েছিলেন শ’খানেক বাসিন্দা। এলাকাবাসীর একাংশের অভিযোগ, ওই আয়োজনে করোনা-সতর্কতাবিধি মানা হয়নি। তবে আগত ভক্তেরা যথাসম্ভব ‘দূরত্ব’ বজায় রেখে বসেছিলেন, দাবি আয়োজক ক্লাবের। তবে বিষয়টি নিয়ে এলাকায় চাপান-উতোর তৈরি হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বীরভানপুরের ছিন্নমস্তা মন্দির প্রাঙ্গণে এই আয়োজন করা হয়। উদ্যোক্তা, মন্দির কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় একটি ক্লাব। হোম ও যজ্ঞের মাধ্যমে করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মঙ্গল কামনা ও দ্রুত রোগমুক্তির প্রার্থনা জানানো হয়। পৌরোহিত্য করেন চার জন পুরোহিত। সেখানে ভিড় করেন পাড়ার শ’খানেক বাসিন্দা। মহিলাদের অনেকে এসেছিলেন উপবাস করে। সঙ্গে ছিল শিশুরাও। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এক জন মহিলা বাদে কারও মুখে ‘মাস্ক’ নজরে পড়েনি। ছিল না ‘হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার’-এর ব্যবস্থাও। পরস্পরের মধ্যে নির্দিষ্ট দূরত্বও বজায় রাখা হয়নি। ফলে, করোনা আক্রান্তদের সুস্থ করে তোলার জন্য আয়োজিত যজ্ঞে যোগ দিতে এসে এ দিন স্বাস্থ্যবিধি মানা হয়নি বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের একাংশের।
কিন্তু এই পরিস্থিতিতে কেন এমন আয়োজন? ক্লাবের তরফে সঞ্জীব সাঁই বলেন, ‘‘ধর্মবিশ্বাস অনেকের কাছে ভরসার জায়গা। তাই করোনা-সঙ্কটের সময়ে সেটাকেই অনেকে আঁকড়ে ধরছেন। রোগীরা যাতে সুস্থ হয়ে ওঠেন, তাই এই আয়োজন। বারবার সবাইকে দূরত্ব বজায় রেখে বসতে বলা হয়। ভক্তরা যতটা পেরেছেন তা করেওছেন।’’ ক্লাবের সভাপতি তথা কংগ্রেস নেতা উমাপদ দাস বলেন, ‘‘বিজ্ঞানও কখনও কখনও ঈশ্বরের কথা বলে। তাই হোম-যজ্ঞের মাধ্যমে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা, সবাই ভাল থাকুন।’’
মহকুমাশাসক (দুর্গাপুর) অনির্বাণ কোলে বলেন, ‘‘নানা ভাবে জনসাধারণকে সচেতন করার কাজ করছি। তার পরেও এমন কাজকর্ম ঠিক নয়। স্বাস্থ্যবিধি অমান্য হলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ এই পরিস্থিতিতে পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞানমঞ্চের জেলা সম্পাদক শ্রীকান্ত চট্টোপাধ্যায়ের পরামর্শ, ‘‘সংস্কার বা বিশ্বাসের বদলে আপাতত বিজ্ঞান মেনে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের জারি করা সমস্ত স্বাস্থ্যবিধি সবার মেনে চলা উচিত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy