Advertisement
E-Paper

হাসপাতালে টাকা কেন, উঠছে প্রশ্ন

বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের প্রশ্ন, রাজ্য বা কেন্দ্রের তৈরি কোনও হাসপাতালে টাকা চাওয়ার বিষয়টি আসছে কী ভাবে।

নিজস্ব সংবাদদাতা 

শেষ আপডেট: ২০ মে ২০২১ ০৫:৩৭
বুধবার উদ্বোধন হয়েছে এই হাসপাতালেরই। নিজস্ব চিত্র।

বুধবার উদ্বোধন হয়েছে এই হাসপাতালেরই। নিজস্ব চিত্র।

ইস্কো ও জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বার্নপুরের নিউটাউনে তৈরি হওয়া কোভিড হাসপাতালের বুধবার ‘ভার্চুয়াল’ উদ্বোধন করলেন কেন্দ্রীয় ইস্পাতমন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান। সরকারের তৈরি হাসপাতাল, কিন্তু সেখানে রোগীকে চিকিৎসার জন্য টাকা দিতে হবে। এমনটাই দাবি, নবনির্মিত হাসপাতালের দায়িত্বে থাকা কর্তৃপক্ষের। এই বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পরেই বেধেছে বিতর্ক। বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের প্রশ্ন, রাজ্য বা কেন্দ্রের তৈরি কোনও হাসপাতালে টাকা চাওয়ার বিষয়টি আসছে কী ভাবে। যদিও এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কোনও পক্ষই সদুত্তর দেয়নি।

প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, হাসপাতালের যাবতীয় পরিকাঠামো তৈরি করেছে ইস্কো। চিকিৎসা সংক্রান্ত যাবতীয় দায়িত্ব পালনের ভার দেওয়া হয়েছে দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালকে। জেলা প্রশাসনের নজরদারিতে এই হাসপাতাল চলবে বলে জানান জেলাশাসক (পশ্চিম বর্ধমান) বিভু গোয়েল। বুধবার ইস্পাতমন্ত্রী বলেন, ‘‘কারখানার অস্থায়ী শ্রমিক-কর্মী ও এলাকার গরিব মানুষদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে এই হাসপাতালে।’’

২০০ শয্যার, আইসিইউ ওয়ার্ড থাকা ওই হাসপাতালটির স্বাস্থ্য পরিষেবা দেবেন ৬৭ জন চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী। কিন্তু হাসপাতালটির চিকিৎসার দায়িত্বপ্রাপ্ত দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালের সিএমডি অরুণাংশু গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এখানে চিকিৎসার জন্য যাঁরা ভর্তি হবেন, তাঁদের প্রত্যেককে থাকা-খাওয়া, ওষুধ ও চিকিৎসার জন্য দৈনিক তিন হাজার টাকা দিতে হবে। যদি কোনও রোগীকে আইসিইউ-তে ভর্তি করা হয়, তবে তাঁকে দৈনিক পাঁচ হাজার টাকা দিতে হবে।’’

এই বিষয়টি নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন। আইএনটিইউসি-র কেন্দ্রীয় সম্পাদক হরজিৎ সিংহ বলেন, ‘‘হাসপাতালটিতে টাকা নেওয়া হবে, এ কথা কোনও দিনই ইস্কো ও জেলা প্রশাসন আমাদের জানায়নি। সরকারি হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরিষেবা বিনামূল্যে দেওয়া হয়। সেখানে এই হাসপাতালে কী ভাবে টাকা নেওয়া হবে, জানি না।’’ সিটুর জেলা সম্পাদক বংশগোপাল চৌধুরী বলেন, ‘‘সরকার পরিকাঠামো তৈরি করেছে। কিন্তু চিকিৎসার জন্য যদি টাকা নেওয়া হয়, তা হলে তা জনকল্যাণমূলক হল কী করে?’’ একই কথা বলেন বিএমএস নেতা দীপক সিংহও। আইএনটিটিইউসি নেতা ভি শিবদাসন জানান, বিষয়টি তাঁরা নজরে রাখছেন। ঘটনাচক্রে, জেলার চিকিৎসকদের একাংশেরও প্রশ্ন, গরিব মানুষের জন্য হাসপাতাল বলা হচ্ছে, কিন্তু তাঁরা কী ভাবে প্রতি দিন তিন বা পাঁচ হাজার টাকা করে দেবেন!

কেন টাকা চাওয়া হচ্ছে, তা নিয়েও রয়েছে ধন্দ। এ দিন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে থাকা এলাকার সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়কে ফোন ও মেসেজ করা হলেও রাত পর্যন্ত কোনও উত্তর মেলেনি। হাসপাতালটির তত্ত্বাবধানের দায়িত্বপ্রাপ্ত অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) অভিজিৎ তুকারাম শোভলেকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে বলেন, ‘‘আপাতত মিটিংয়ে আছি।’’ যদিও এই বিতর্ক প্রসঙ্গে ইস্কোর ইডি (পি অ্যান্ড এ) অনুপ কুমার বলেন, ‘‘এ বিষয়ে আমরা কিছু জানি না। আমাদের কাজ হাসপাতালের পরিকাঠামো তৈরি করে দেওয়া। তা করে হাসপাতাল জেলা প্রশাসনকে হস্তান্তর করে দেওয়া হয়েছে।’’ সিএমওএইচ অশ্বিনীকুমার মাজির অবশ্য আশ্বাস, ‘‘কোনও ভাবেই যাতে রোগীদের কাছ থেকে বেশি টাকা না নেওয়া হয়, সে বিষয়ে আমাদের নজরদারি থাকবে।’’

এ দিকে, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ইস্কোর সিইও এসবি কমলাকর জানান, ইস্পাতমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী ১ জুন থেকে বার্নপুর হাসপাতালে করোনা-পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হবে।

COVID-19 coronavirus
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy