Advertisement
E-Paper

খবর পেলেই রান্না করা খাবার নিয়ে যাচ্ছেন ওঁরা

৫০ জন সদস্যের প্রত্যেকে পকেট-খরচ বাঁচিয়ে মাসে ১৫০ টাকা করে চাঁদা দিয়ে তহবিল বানিয়েছেন। সেই তহবিলের ভরসাতেই কাজ চলছে।

সুশান্ত বণিক

শেষ আপডেট: ১৩ মে ২০২১ ০৫:৩১
বার্নপুরে দুঃস্থের সাহায্য।

বার্নপুরে দুঃস্থের সাহায্য। ছবি: পাপন চৌধুরী।

দৃশ্য এক: পরিবারের এক ছেলে বিদেশে কর্মরত। সদ্য করোনা-যুদ্ধে জয়ী হয়েছেন বৃদ্ধ বাবা-মা। কিন্তু রান্না করে পারছেন না। এ দিকে, সংক্রমণের ভয়ে ওই বৃদ্ধ দম্পতিকে কার্যত এড়িয়ে চলছেন প্রতিবেশীরাও। বার্নপুরের সুভাষপল্লির ওই পরিবারের সঙ্কটে পাশে দাঁড়িয়েছেন একদল তরুণ-তরুণী। এখন প্রতিদিন ওই বৃদ্ধ-বৃদ্ধার কাছে রান্না করা খাবার পৌঁছে দিচ্ছেন তাঁরা।

দৃশ্য দুই: কয়েকদিন ধরে করোনা-সংক্রমিত হয়ে গৃহবন্দি আসানসোল রাধানগর এলাকার একটি পরিবারের তিন জন। সেখানেও ত্রাতা ওই তরুণ-তরুণীর দল। ওই পরিবারের কাছে দিনে চার বার রান্না করা খাবার, ওষুধ ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছেন ওঁরা।

চাওয়া-পাওয়ার ঊর্ধ্বে উঠে শুধু সমাজসেবা করবেন বলেই বছর দুই আগে একটি সংগঠন গড়ে তুলেছিলেন ওই তরুণ-তরুণীরা। এখন সংগঠনের সদস্য সংখ্যা প্রায় ৫০ জন। মূলত পিছিয়ে পড়া পরিবারের সন্তানদের লেখাপড়া শেখানো ও তাদের নিখরচায় শিক্ষা সরঞ্জাম দেওয়ার কাজ করেন তাঁরা। বার্নপুর রিভারসাইড এলাকার বনগ্রামে একটি পাঠশালা গড়ে তুলে সেখানে আশপাশের এলাকার গরিব পরিবারের সন্তানদের নিয়মিত পড়ান। করোনা-কালে আপাতত পাঠশালা বন্ধ। এখন অতিমারির কবলে পড়া অসহায়দের পাশে দাঁড়িয়েছে ওই সংগঠন।

সংগঠনের সম্পাদক শৌভিক পাল জানান, পরিচিত সূত্র থেকে তাঁরা জানতে পারেন, শহরের বিভিন্ন এলাকায় বসবাসকারী একাকী বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের অনেকে সংক্রমণ-মুক্ত হয়েও কার্যত বিছিন্ন অবস্থায় রয়েছেন। অসুস্থতার কারণে অনেকেই রান্না করতে পারছেন না। খাবার পাচ্ছেন না ঠিক মতো। এই অবস্থায় সোশ্যাল মিডিয়ায় সংগঠনের নাম এবং ফোন নম্বর দিয়ে সাহায্যের অঙ্গীকার করা হয়। তিনি বলেন, ‘‘সেই থেকে সাহায্য চেয়ে প্রচুর মানুষের ফোন করছেন। তাঁদের কাছে প্রয়োজনমতো রান্না করা খাবার, ওষুধ আনাজ ও অন্য সামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছি।’’

শৌভিক জানান, পরিষেবা দেওয়ার জন্য তাঁরা অর্থ দাবি করছেন না। যাঁর পক্ষে যতটা সম্ভব, তিনি ততটাই দাম দিচ্ছেন। প্রতিদিন প্রায় ২০টি পরিবারের কাছে সাহায্য পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। আর্থিক সঙ্গতিপূর্ণ অনেক পরিবার তাঁদের থেকে পাওয়া সাহায্যের বিনিময়ে যে অর্থ দিচ্ছেন, সেই টাকায় অনেক গরিব পরিবারকে সাহায্য করছে তাঁদের সংগঠন।

অর্থ আসছে কোথা থেকে? শৌভিকবাবু জানিয়েছেন, সংগঠনের ৫০ জন সদস্যের প্রত্যেকে পকেট-খরচ বাঁচিয়ে মাসে ১৫০ টাকা করে চাঁদা দিয়ে তহবিল বানিয়েছেন। সেই তহবিলের ভরসাতেই কাজ চলছে।

COVID-19 coronavirus
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy