E-Paper

সময়ে রক্ত দেয়নি ব্লাড ব্যাঙ্ক, নালিশ মৃত্যুতে

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, রক্তাল্পতা ও রক্তক্ষরণ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় মধুমিতাকে। তাঁর স্বামী তুফান নায়েক একটি কারখানার কর্মী। তাঁদের দুই সন্তান রয়েছে।

সৌমেন দত্ত

শেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০২৫ ০৭:৫৪

—প্রতীকী চিত্র।

রক্ত চেয়ে হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে কাগজ জমা দেওয়া হয়েছিল ১৫ অগস্ট সকালে। সেই রক্ত মেলে ১৬ অগস্ট রাতে। কিন্তু তা রোগীকে দেওয়ার আগেই মৃত্যু হল তাঁর। ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্ত থাকা সত্ত্বেও, তা না দেওয়ায় রোগী-মৃত্যুর অভিযোগ উঠল বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের নবগ্রামের বাসিন্দা, মৃত মধুমিতা নায়েকের (২৭) পরিজনের অভিযোগ, পরিবর্ত রক্তদাতা আনতে হবে, এ কথা জানিয়ে রক্ত দিতে গড়িমসি করেন ব্লাড ব্যাঙ্কের কর্মীরা। ব্লাড ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ জানান, ঘটনার তদন্তে একটি কমিটি গড়া হচ্ছে। হাসপাতালের সুপার তাপস ঘোষ বলেন, “কোনও গাফিলতি হয়ে থাকলে, উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, রক্তাল্পতা ও রক্তক্ষরণ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় মধুমিতাকে। তাঁর স্বামী তুফান নায়েক একটি কারখানার কর্মী। তাঁদের দুই সন্তান রয়েছে। তুফানের দাবি, ‘‘শুক্রবার সকাল সওয়া ১১টা নাগাদ ‘বি পজ়িটিভ’ রক্ত চেয়েছিলাম। বলা হয়, রক্তদাতা নিয়ে আসুন। এই পরিস্থিতিতে আমার পক্ষে রক্তদাতা জোগাড় করা মুশকিল, তা ব্লাড ব্যাঙ্ককে জানাই। সে দিন রক্ত পাইনি। পরে নানা সূত্রে ‘ডোনর কার্ড’ জোগাড় করে, শনিবার সকালে তা জমা দিই।’’

তুফানের অভিযোগ, ‘‘শনিবার বিকেল পর্যন্ত রক্ত না পেয়ে খোঁজ নিতে গেলে, ব্লাড ব্যাঙ্কের এক চিকিৎসক দুর্ব্যবহার করেন। তবে তার পরে রক্ত মেলে।” তিনি জানান, সেই রক্ত ওয়ার্ডে জমা দেওয়া হয়। রবিবার সকালে তা রোগীকে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়। কিন্তু তার আগেই, শনিবার গভীর রাতে মধুমিতার মৃত্যু হয়। তাঁদের পড়শি সোমনাথ শীল বলেন, “শনিবার সকালে ডোনর কার্ড জমা দেওয়ার পরেই যদি রক্ত দেওয়া হত, মধুমিতা হয়তো বেঁচে যেত।”

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৫ অগস্ট পর্যন্ত রক্তদান শিবির থেকে যথেষ্ট রক্ত সংগ্রহ হয়েছে। তাই রক্তের ঘাটতি ছিল, তা বলা যাবে না। তবে ব্লাড ব্যাঙ্কের দৈনন্দিন রক্ত মজুতের হিসাব লেখা বোর্ডটি বন্ধ রয়েছে। হাতে লেখা একটি বোর্ডে যে হিসাব রয়েছে, সেটি ২৪ জুলাইয়ের। একটি রক্তদাতা সংগঠনের কর্তা শুভ্র ঘোষের অভিযোগ, “রক্ত পেতে দেরির কারণ জানতে গেলে প্রায়ই দুর্ব্যবহারের মুখে পড়েন রোগীর পরিজন। আমরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।’’

বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের ব্লাড ব্যাঙ্কের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক পার্থসারথি মণ্ডল বলেন, “বিষয়টি শুনেছি। রোগীদের রক্তের প্রয়োজন হলে ‘ডোনর কার্ড’ নেওয়া যাবে না, তা জানানো রয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব রক্ত দিতেও বলা আছে। তার পরেও কেন এমন ঘটল, তা জানার জন্য তদন্ত কমিটি গড়া হচ্ছে। তার রিপোর্ট হাসপাতালের সুপারকে দেওয়া হবে।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Death Bardhaman Medical College Hospital blood bank Bardhaman

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy