E-Paper

ব্লক অফিসে ‘মারধর’, প্রশ্নে প্রশাসনের ভূমিকা

জামুড়িয়া পঞ্চায়েত সমিতির ৭ নম্বর (হিজলগড়া) আসনের সিপিএম প্রার্থী তুষার গোস্বামী জানান, গত ১০ জুন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ জুন ২০২৩ ০৮:৩০
মনোনয়নপত্র জমা দিতে চলেছেন বিজেপি প্রার্থীরা। জামুড়িয়ায়। সোমবার দিনভর।

মনোনয়নপত্র জমা দিতে চলেছেন বিজেপি প্রার্থীরা। জামুড়িয়ায়। সোমবার দিনভর।

সালানপুরে শাসক-বিরোধী সৌজন্যের আবহ দেখা গেলেও, জামুড়িয়ায় উল্টো চিত্র। সোমবার পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন-পর্বকে কেন্দ্র করে বিরোধীদের মারধর, মনোনয়নপত্র কেড়ে নেওয়ার মতো অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, ব্লক অফিস চত্বরেই তা হয়েছে। যদিও, তৃণমূল অভিযোগ মানেনি। পাশাপাশি, বিরোধীরা পুলিশ-প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলছে। যদিও, ব্লক প্রশাসনের দাবি, ব্লক অফিস চত্বরে কিছুই ঘটেনি।

জামুড়িয়া পঞ্চায়েত সমিতির ৭ নম্বর (হিজলগড়া) আসনের সিপিএম প্রার্থী তুষার গোস্বামী জানান, গত ১০ জুন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। সোমবার দুপুর ১টায় তিনি ‘সিম্বল লেটার’ জমা দিতে জামুড়িয়া ব্লক অফিসে যান। অভিযোগ, ব্লক অফিসের দরজার সামনেই কয়েক জন তৃণমূলকর্মী তাঁকে ধাক্কা মারেন। তার পরে অফিসের সামনে তাঁকে মারধর করা হয়। সিপিএমের অভিযোগ, তাঁদের বেশ কয়েক জন প্রার্থী এ দিন মনোনয়নপত্র জমা দিতে যান। কিন্তু তৃণমূলের জামুড়িয়া ২ ব্লক সভাপতি সিদ্ধার্থ রানার নেতৃত্বে মনোনয়ন জমা দেওয়ার টেবিলের সামনে থেকে তাঁদের তাড়িয়ে দেওয়া হয়। সিদ্ধার্থ অবশ্য বলেন, “মিথ্যা অভিযোগ।” উত্তম রুইদাস, হোলি বাউড়ি, বাদল নামে তিন সিপিএম প্রার্থীর অভিযোগ, “হাত থেকে মনোনয়নপত্র কেড়ে নেওয়া হয়।” বিজেপি প্রার্থী মন্ত্রীময় ঘোষের অভিযোগ, “আমি মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছি। তার পরে আমাকে মারধর করা হয়।”

সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মনোজ দত্ত জানান, সন্ত্রাসের পরিবেশের মধ্যেই এ পর্যন্ত জামুড়িয়ায় পঞ্চায়েতের ১১২টি সংসদের মধ্যে ৬২টি, পঞ্চায়েত সমিতির ২৫টির মধ্যে আটটি আসনে দলের প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। মনোজের অভিযোগ, “সন্ত্রাসের কথা ব্লক প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।” বিজেপির জামুড়িয়া বিধানসভার যুগ্ম-আহ্বায়ক গৌতম মণ্ডল জানান, এ পর্যন্ত পঞ্চায়েত স্তরে ১১টি এবং পঞ্চায়েত সমিতি স্তরে ছ’টি সংসদে তাঁদের প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র দিয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, “অনেককে ব্লক অফিসে ঢুকতে দিচ্ছে না তৃণমূল। পুলিশ-প্রশাসনকে বার বার আবেদন জানিয়েও লাভ হচ্ছে না।” পাশাপাশি, অভিযোগ, এ দিন দুপুরে চিচুড়িয়ায় বিজেপির মণ্ডল কার্যালয় থেকে খুঁটিশুদ্ধ দলের পতাকা খুলে ফেলে দেয় তৃণমূল।

পুলিশ অবশ্য জানিয়েছে, মনোনয়ন-পর্বে যথেষ্ট নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল! কিন্তু তার পরেও কেন এমন অভিযোগ উঠছে, সে সম্পর্কে পুলিশের কেউ মুখ খোলেনি। বিডিও (জামুড়িয়া) অরুণালোক ঘোষ বলেন, “প্রচুর পুলিশ ছিল। ব্লক অফিস চত্বরে কিছু হয়নি। বাইরে কিছু হয়ে থাকলে, খোঁজ নিতে হবে।” যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূলও। দলের অন্যতম রাজ্য সম্পাদক ভি শিবদাসন (দাশু) এ দিন বলেন, “সন্ত্রাস হলে বিরোধীরা একটি আসনেও প্রার্থী দিতে পারতেন না। ফলে, সন্ত্রাসের অভিযোগ মিথ্যা।”

এ দিকে, পঞ্চায়েত ভোট উপলক্ষে রাজ্য জুড়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে সোমবার আসানসোলে মিছিল ও সভা করল এসএফআই ও ডিওআইএফ। কর্মসূচির নেতৃত্বে ছিলেন ডিওআইএফ-এর রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। গির্জা মোড় থেকে আসানসোল মহকুমাশাসকের কার্যালয় পর্যন্ত মিছিল হওয়ার কথা ছিল। মিছিলটি রবীন্দ্র ভবন লাগোয়া এলাকায় আটকে দেয় পুলিশ। সেখানেই বৃষ্টি উপেক্ষা করে মিছিলে যোগদানকারীরা বসে পড়েন। হয় সভাও। তৃণমূল অভিযোগ মানেনি।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

WB panchayat Election 2023 BJP Jamuria

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy