তৃতীয় লিঙ্গের শিল্পীদের হাতে রূপ পাচ্ছে প্রতিমা। পূর্ব বর্ধমানের মেমারি ১ ব্লকের পাল্লা-চাঁচাই ৩ নম্বর ক্যাম্প এলাকায় মীরা মণ্ডল, কিরণ ক্ষেত্রপালেরা মৃৎশিল্পী হিসাবে কাজ করে নিজেদের স্বাবলম্বী করছেন। এ বছর তাঁদের গড়া প্রতিমা শোভা পাচ্ছে জেলার একাধিক মণ্ডপে। সাহায্যের জন্য কারও কাছে হাত না পেতে, দক্ষতাকে হাতিয়ার করেই সমাজে মর্যাদা অর্জন করতে পেরেছেন, বলছেন তাঁরা।
মীরা, কিরণেরা জানান, ছোট থেকেই আর পাঁচ জনের থেকে ‘আলাদা’ হওয়ায়, ভিন্ন ভাবে বাঁচার তাগিদ ছিল। পড়াশোনার পাশাপাশি, প্রতিমা গড়ার প্রতি আগ্রহ তৈরি হয় ছোটবেলা থেকেই। মৃৎশিল্পী বিপ্লব মিত্রের কাছে বেশ কয়েক বছর ধরে কাজ শিখেছেন তাঁরা। আর তাতে ভরসা করেই নিজেদের পায়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে চলেছেন। সারা বছর প্রতিমা নির্মাণ করেন পারিশ্রমিকের বিনিময়ে।
বিপ্লব বলেন, “তৃতীয় লিঙ্গের প্রতিনিধি বলে ওঁদের আলাদা চোখে দেখার কিছু নেই। ওঁরা পরিশ্রমী। শিল্পের প্রতি নিষ্ঠা ওঁদের দক্ষ করে তুলেছে। এখন অনেকেই আমাদের তৈরি প্রতিমার প্রশংসা করছেন।” এ বছর মোট ১৬টি দুর্গা প্রতিমা গড়েছেন তাঁরা। এর মধ্যে জামালপুরের পাঁচরা উত্তরপাড়া সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির প্রতিমা বিশেষ ভাবে নজর কেড়েছে এলাকাবাসীর। ডাকের সাজের প্রতিমা দেখে পাঁচরার বাসিন্দা প্রেমনাথ ঘোষাল বলেন, “সৃষ্টিবৈচিত্রের অংশ হিসেবেই আমরা তৃতীয় লিঙ্গের শিল্পীদের দেখি। তাঁদের শিল্পকর্মে সেই বৈচিত্রের অনন্য প্রকাশ ঘটেছে।” দুর্গাপুজো শেষে লক্ষ্মী, তার পরে কালী প্রতিমা তৈরির কাজ শুরু হবে। গত বছর এক সঙ্গে ২০টি কালী প্রতিমা তৈরি করেছিলেন মীরা, কিরণেরা। এ বছর সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশাবাদী বিপ্লব।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)