Advertisement
E-Paper

আপনাদের ভাগ্য ঝুলেই: মন্ত্রী

শুক্রবার এই দৃশ্য দেখা গেল বর্ধমান শহরের সংস্কৃতি লোকমঞ্চে। এ দিন পঞ্চায়েত মন্ত্রী বছরে ১০০ দিনের কাজের সাফল্যের খতিয়ান হিসাবে ‘একশোয় ১০০’ নামে একটি পত্রিকার উদ্বোধন করেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা 

শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০১৮ ০১:৩৯
নেতানেত্রীদের সঙ্গে সুব্রত মুখোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র

নেতানেত্রীদের সঙ্গে সুব্রত মুখোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র

পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে কার্যত ঘিরে ধরে পূর্ব বর্ধমানে পঞ্চায়েত সমিতির কয়েক জন সভানেত্রী ছুড়ে দিলেন প্রশ্নটা—‘আমাদের কী হবে?’। পঞ্চায়েত মন্ত্রী জিজ্ঞাসা করলেন, “নির্বাচন হয়নি? আপনাদের মধ্যে কেউ ভোটে জেতেননি?” সমস্বরে জবাব এল, ‘‘না। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়লাভ করেছি।’’ হেসে মন্ত্রী বললেন, “তা হলে আপনাদের ভাগ্য ঝুলেই রইল!’’

শুক্রবার এই দৃশ্য দেখা গেল বর্ধমান শহরের সংস্কৃতি লোকমঞ্চে। এ দিন পঞ্চায়েত মন্ত্রী বছরে ১০০ দিনের কাজের সাফল্যের খতিয়ান হিসাবে ‘একশোয় ১০০’ নামে একটি পত্রিকার উদ্বোধন করেন। মন্ত্রীকে হাতের কাছে পেয়ে তাঁদের কী হবে, তা জানতে চান বিনা লড়াইয়ে জেতা তৃণমূলের কয়েক জন সদস্য। এমনিতে পঞ্চায়েতের ত্রিস্তরে অর্ধেকের বেশি আসনে এ বার ভোটই হয়নি এই জেলায়। শুধু পূর্ব বর্ধমান নয়, রাজ্যের সব জেলাতেই এমন বিনা ভোটে জেতা আসনের সংখ্যা কয়েক হাজার। সেই সব জেলা পরিষদ, পঞ্চায়েত সমিতি ও পঞ্চায়েতের ‘ভাগ্য’ এখন সুপ্রিম কোর্টের হাতে। কিন্তু একদিন না একদিন ভাগ্য খুলবেই। কিন্তু মেয়াদ ফুরনোর পর ঝুলে থাকা ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের উন্নয়ন প্রক্রিয়া কী হবে, তা নিয়ে ধোঁয়াশা কাটার কোনও লক্ষ্মণ দেখা যাচ্ছে না। সোমবার সুপ্রিম কোর্টের রায় না দেখে রাজ্য পঞ্চায়েত দফতরও আগ বাড়িয়ে কোনও নির্দেশিকা জারি করতে চাইছে না।

পূর্ব বর্ধমান-সহ বেশ কিছু জেলায় গ্রাম পঞ্চায়েতের মেয়াদ শেষ হচ্ছে মঙ্গলবার। পঞ্চায়েত সমিতির কার্যক্রম শেষ হচ্ছে ৩১ জুলাই। আর সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে জেলা পরিষদের মেয়াদ ফুরিয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে বোর্ড গঠন না হলে পঞ্চায়েত চালাবে কে, উন্নয়নেই কাজই বা কী ভাবে করা যাবে তা ভেবে পাচ্ছেন না প্রশাসনিক কর্তারা। সুব্রতবাবু অবশ্য বলেন, “এখনও পর্যন্ত উন্নয়ন নিয়ে সমস্যা দেখা দেয়নি। তবে মামলা অনেক দিন ধরে চললে উন্নয়নের কাজ নিয়ে সমস্যা দেখা দেবে। আশা করি, ওঁরা (সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি) এ বিষয়টি ভাববেন।’’

পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের কর্তারা জানান, ১৯৭৮ সাল থেকে প্রতিবার পঞ্চায়েত নির্বাচন হয়েছে পুরনো বোর্ডের মেয়াদ শেষের আগে। গত বার ভোট দেরিতে হলেও বোর্ড গঠন নিয়ে এমন সঙ্কট হয়নি। এ বার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ীদের নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা হওয়ায় অধিকাংশ জায়গাতেই বোর্ড গঠনের প্রক্রিয়া আটকে রয়েছে। এই অবস্থায়, আইনি জটিলতা নেই, জেলার এমন ২১টি গ্রাম পঞ্চায়েত ও দু’টি পঞ্চায়েত সমিতিতে (কালনা ২, পূর্বস্থলী ২) বোর্ড গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছে রাজ্য সরকার। ইতিমধ্যেই এই সংক্রান্ত সরকারি নির্দেশিকা চলে এসেছে জেলা প্রশাসনের কাছে। পঞ্চায়েত দফরের নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, ১৬ অগস্ট থেকে ২৯ শে আগস্টের মধ্যে সেরে ফেলতে হবে এই ধরনের পঞ্চায়েত গুলির বোর্ড গঠন পর্ব। ৩১ অগস্ট থেকে ৬ সেপ্টম্বরের মধ্যে শেষ করে ফেলতে হবে পঞ্চায়েত সমিতির বোর্ড গঠন পর্ব।১০-১৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে শেষ করতে হবে জেলা পরিষদ গঠন পর্ব।

এ বার ভোটে গোটা কাটোয়া মহকুমা ছিল বিরোধী-শূন্য। সেখানে ত্রিস্তরেই কোনও ভোট হয়নি। বর্ধমান উত্তর ও দক্ষিণের কিছু অংশে ভোট হয়েছে। নির্বাচন যা হয়েছে, তা কালনা মহকুমায়। ফলে, যে ২১টি পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠন হতে চলেছে, সেগুলির অধিকাংশই কালনার। কালনা ২ একমাত্র ব্লক, যেখানে পঞ্চায়েত সমিতি এবং সব ক’টি গ্রাম পঞ্চায়েতেই বোর্ড গঠন হতে চলেছে। বিডিও মিলন দেবগড়িয়া জানান, শুক্রবার বিষয়টি নিয়ে একটি বৈঠক হয়েছে। ১৬ ও ২০ অগস্ট এলাকার চারটি করে পঞ্চায়েতে সদস্যদের শপথগ্রহণ পর্ব এবং প্রধান নির্বাচন পর্ব অনুষ্ঠিত হবে। জেলা পরিষদের বিদায়ী সভাধিপতি দেবু টুডু বলেন, ‘‘আদালতের নির্দেশের পরে জেলা পরিষদ এবং বাকি পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির বোর্ড গঠিত হবে।’’

প্রশাসনিক সূত্রের খবর, সোমবার মামলার রায় না হলে প্রশাসক নিয়োগ করতে পারে সরকার। তবে পঞ্চায়েত মন্ত্রী মুখ খুলতে চাননি এ বিষয়ে। তিনি বলেন, “মামলা এখন যে পর্যায়ে, সংবাদমাধ্যমের সামনে কোনও কথা বলার জায়গায় নেই।’’

Panchayat Election Subrata Mukherjee Committee
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy