শ্রীরামপুরের মণ্ডপে চলছে পুজো। ছবি: জাভেদ আরফিন মণ্ডল।
১৯ বছর ধরে দুর্গাপুজো হয় গ্রামে। তবে কোনও মন্দির ছিল না। এ বার স্থানীয় ইটভাটা মালিক আব্দুল শেখের গড়ে দেওয়া মন্দিরে দেবীর আরাধনা করলেন পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলীর উত্তর শ্রীরামপুর এলাকার দাসপাড়ার বাসিন্দারা।
মন্দিরের তিনশো ফুট দূরেই রয়েছে একটি মসজিদ। পুজোর দিনে আজানের সুরের সঙ্গে মিশে যায় ঢাকের বোল। কালীপুজো থেকে ইদ যে কোনও উৎসবে একসঙ্গে আনন্দ করাটাই এই গ্রামের রীতি। পুজোর পরিচালনা করে সরস্বতী ক্লাব। ক্লাবের সদস্যেরা জানান, মাস চারেক আগে মন্দির তৈরি করে দেওয়ার প্রস্তাব দেন আব্দুল শেখ। কয়েকজন একটু দ্বিধা করেছিলেন। তবে ওঁর ইচ্ছে, ভক্তিকে সম্মান দিয়ে খুশি মনে প্রস্তাব মেনে নেওয়া হয়। মাস চারেক ধরে প্রায় চার লক্ষ টাকা খরচ করে তৈরি হয় মন্দিরটি।
অষ্টমীর পুজো দেখতে মন্দিরে গিয়েছিলেন ওই পাড়ার তাজেল শেখ, স্বপন শেখরা। তাঁদের কথায়, ‘‘উৎসবের আমেজই আলাদা। সেটা কোন ধর্মের উৎসব, তা মনেই থাকে না।’’ ইদের সময়েও একই ভাবে ‘দাওয়াত’-এ যোগ দেন অন্যরা। স্থানীয় বাসিন্দা মধুসূদন দে বলেন, ‘‘বরাবরই সম্প্রীতি আমাদের সম্পদ। মুসলিম ধর্মের কেউ মারা গেলে আমরা গোরস্থানে যাই, ওঁরাও শ্মশানে এসে শ্রদ্ধা জানান।’’
পুজো কমিটির সভাপতি বাণী চক্রবর্তী জানান, দাসপাড়ার একেবারে শেষে দুর্গামন্দির। তার পর থেকে মুসলিম পাড়া শুরু। মন্দিরটা যেন মিলনস্থল তাঁদের কাছে। পুজোর মধ্যে ওই মন্দিরে গিয়েছিলেন রাজ্যের প্রাণিসম্পদ দফতরের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। ‘‘এই পুজো সম্প্রীতির বড় উদাহরণ’’, বলেন তিনি। আর ওই ব্যবসায়ী আব্দুল শেখ বলেন, ‘‘ছোট থেকেই আমি সরস্বতী ক্লাবের সঙ্গে যুক্ত। মায়ের মন্দির কোনও একটি সম্প্রদায়ের হতে পারে না। গ্রামের পরিবেশ এমনই থাকুক, এটাই চাই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy