Advertisement
২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪
Super hot Summer

বৈশাখের তাপে হারিয়েছে আড্ডার মেজাজ

বর্ধমান শহরের বিভিন্ন পাড়ায় গেলে দেখা যায়, বিকেল হলেই বাড়ি লাগোয়া এক চিলতে বারান্দার দখল নেন প্রবীণেরা, বাডির গিন্নিরা। লুডো, তাস খেলা চলে।

Bardhaman Zoological park

ফাঁকা রমনাবাগান চিড়িয়াখানা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০২৩ ০৯:৩৯
Share: Save:

সেই আড্ডাটা আর নেই!

গত সপ্তাহ জুড়ে বর্ধমান শহরের তাপমাত্রা ৪০ থেকে ৪৩ ডিগ্রিতে ঘোরাফেরা করছে। বাঁকুড়া-পুরুলিয়াকেও এ বার পিছনে ফেলে দিয়েছে বর্ধমান। তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে আর্দ্রতা কমছে। ফলে রোদে বাইরে বার হলেই শীতকালের মতো ঠোঁট ফাটছে অনেকের। গরম এড়াতে আড্ডা ছাড়া দিন চলে না যাঁদের, তাঁরাও কার্যত ঘরবন্দি। পাড়ার মোড়ে, চায়ের দোকানে, দামোদরের ধারে থেকে বিভিন্ন পার্কেও ১৮ থেকে সত্তরোর্ধ্বদের আড্ডা আপাতত দেখা যাচ্ছে না। যদিও সপ্তাহান্তের মেঘ বিকেলের আড্ডাকে আবার জাগিয়ে তুলেছে।

রাজনীতি করার সুবাদে গরমেও রাস্তাঘাট চষে বেরান মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। তাঁর অভিজ্ঞতা, ‘‘গরমের ছুটি পড়লেই গ্রাম বাংলায় আম বাগান, বাঁশ বাগান, পুকুর পাড়ে কিশোর, তরুণদের আড্ডা দেখি। পুকুরে নেমে ছেলেমেয়েদের দাপাদাপি করতে দেখি। কিন্তু এ বারের গরমে সে সব উধাও। দুপুরের রাস্তা নিঝুম।’’ বর্ধমান শহরের আদালত চত্বরের বিভিন্ন চায়ের দোকানেও আড্ডা লেগেই থাকে। সেই বিক্রেতাদেরও দাবি, ‘‘ছুটির দুপুরে নিয়মিত আড্ডা দিতে অনেকেই আসেন। কিন্তু গরমে তাঁদের অনেকেই আসছেন না। যাঁরা আসছেন, তাঁরাও ঘেমেনেয়ে একসা হয়ে বেশি ক্ষণ থাকতে পারছেন না।’’

বর্ধমান শহরের সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব দেবেশ ঠাকুর নিয়মিত আড্ডা দেন। তাঁর কথায়, ‘‘টাউন হল, বাঁকার পাড় আড্ডার কেন্দ্রস্থল। কিন্তু গরমে আড্ডা দেওয়া বন্ধ। ১৫ দিন ধরে তো গরমে ঠিক করে বার হতেই পারছি না।’’ রাজ্য মহিলা কমিশনের প্রাক্তন সদস্য শিখা আদিত্যও বলেন, ‘‘আবাসনের নীচে সবাই আড্ডা দিতাম। গরমের চোটে তা বন্ধ। কেউ ঘর থেকে বেরোতেই চাইছেন না।’’

বর্ধমান শহরের বিভিন্ন পাড়ায় গেলে দেখা যায়, বিকেল হলেই বাড়ি লাগোয়া এক চিলতে বারান্দার দখল নেন প্রবীণেরা, বাডির গিন্নিরা। লুডো, তাস খেলা চলে। গত কয়েক দিন ধরে সেই দৃশ্যও দেখা যায়নি। বন্ধ ‘মহিলা মহলও’। ঢলদিঘির গীতা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমার বাড়িতে অনেকে আসেন। আমিও পাড়ার অন্য বাড়িতে যাই। গল্পগুজব করি। কিন্তু কয়েক দিন ধরে গরমের জন্য বিকেলে বার হতে আর ইচ্ছা করছে না।’’ বর্ধমানের একটি বৃদ্ধাশ্রমের আবাসিক শ্যামলী সর্দারও বলেন, ‘‘বিকেলের সেই আড্ডাটা আর হচ্ছে না। আমরা কয়েকজন বৃদ্ধাশ্রমের সামনের ফাঁকা জায়গায় গিয়ে গল্প, গান, লুডো নিয়ে মেতে থাকতাম। এত গরম যে ঘরের বাইরে যাওয়া যাচ্ছে না।’’ বর্ধমানের কাঞ্চননগরের মঞ্জুশ্রী দে-র আবার আক্ষেপ, ‘‘প্রতিদিন বিকেলে নাতিকে পার্কে ঘোরাতে নিয়ে যেতাম। ১২ দিন ধরে সেটা বন্ধ। নাতিটা বাড়িতে ছটফট করছে। আমিও ছটফট করছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bardhaman Bardhaman Zoological Park summer
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE