Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
Fire

‘দুষ্কৃতীদের আগুনে’ ঝলসে গেল চার হাজার আকাশমণি

বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা নাগাদ কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা দেখেন, ওই জঙ্গলে দাউদাউ করে আগুন জ্বলছে।

 এ ভাবেই দাউদাউ করে জ্বলল ‘বনসৃজন’ প্রকল্পে রোপণ করা গাছগুলি। বারাবনির মেঝানডিহি জঙ্গলে বৃহস্পতিবার।

এ ভাবেই দাউদাউ করে জ্বলল ‘বনসৃজন’ প্রকল্পে রোপণ করা গাছগুলি। বারাবনির মেঝানডিহি জঙ্গলে বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা 
বারাবনি শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০২১ ০৫:৫৮
Share: Save:

আগুনে ঝলসে গেল ‘বনসৃজন’ প্রকল্পের অন্তর্গত কয়েক হাজার মূল্যবান গাছ। বৃহস্পতিবার সকালে বারাবনি ব্লকের পানুড়িয়া পঞ্চায়েতের মেঝানডিহি জঙ্গলের ঘটনা। স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে বন দফতরের কর্মী-আধিকারিকেরা ঘটনাস্থলে এসে প্রায় তিন ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নেভান। প্রাথমিক তদন্ত শেষে বন দফতরের অনুমান, ‘দুষ্কৃতীরা’ এই ঘটনা ঘটিয়েছে।

ডিএফও (দুর্গাপুর ডিভিশন) নীলরতন পণ্ডা বলেন, ‘‘বহু ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, দুষ্কৃতীরা চোরাগোপ্তা জঙ্গলে আগুন লাগিয়ে দিচ্ছে। এর ফলে, গাছের ক্ষতি হচ্ছে। সে ভাবেই এই ঘটনাও ঘটানো হয়েছে। দুষ্কতীদের খোঁজ করে আইনি পদক্ষেপ করা হবে।’’

বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা নাগাদ কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা দেখেন, ওই জঙ্গলে দাউদাউ করে আগুন জ্বলছে। এলাকায় তীব্র বেগে হাওয়াও দিচ্ছিল সেই সময়ে। ফলে, আগুন জঙ্গলের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। দেখা যায়, একের পরে এক আকাশমণি গাছে আগুন ধরেছে। এলাকাবাসীর একাংশ প্রথমে নিজেরাই আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। স্থানীয় বাসিন্দা হরিপদ কিস্কু বলেন, ‘‘এক সময়ে বোঝা যায়, এই আগুন আমরা নেভাতে পারব না। তাই বন দফতরের বিট অফিসে (‌গৌরান্ডি) খবর দিই।’’ খবর পেয়েই সহকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে জলের ট্যাঙ্কার-সহ ঘটনাস্থলে যান বিট অফিসার (‌গৌরান্ডি) সুমন্ত দাস। তাঁর কথায়, ‘‘আগুন পুরোপুরি নেভানো সম্ভব হয়েছে। এলাকাবাসী সাহায্য করেছেন। কিন্তু প্রাথমিক গণনায় দেখা যাচ্ছে, প্রায় চার হাজারের মতো আকাশমণি গাছ ঝলসে গিয়েছে। জঙ্গলে বহু বন্যপ্রাণী থাকে। আগুনে বন্যপ্রাণেরও ক্ষতি হয়েছে।’’

বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৮-য় এই জঙ্গল এলাকায় রাজ্য সরকারের উদ্যোগে ‘নিবিড় বনসৃজন প্রকল্প’ তৈরি করা হয়। প্রায় ৪৮ হাজার আকাশমণি গাছ লাগানো হয়। এলাকাটি খুবই রুক্ষ। আশেপাশে একাধিক খনি রয়েছে। ফলে, এলাকার বাসিন্দাদের জন্য বসবাসযোগ্য পরিবেশ তৈরির লক্ষ্যে এই প্রকল্প নেওয়া হয়। চার বছর ধরে এই গাছগুলি পূর্ণ মাত্রায় বড় হয়েছে।

তবে জঙ্গলে অগ্নি-সংযোগের ঘটনা এই প্রথম নয় বলে স্থানীয় ও বন দফতর সূত্রে জানা যায়। বন দফতরের হিসেবে, গত তিন মাসে বারাবনি-সহ আশপাশের এলাকার জঙ্গলে প্রায় ২৫টি অগ্নি-সংযোগের ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু ‘দুষ্কৃতীরা’ জঙ্গলে অগ্নি-সংযোগ করছে কেন? বন দফতরের একাধিক আধিকারিক জানান, জঙ্গলের শুকনো পাতায় আগুন ধরালে গাছগুলি পুরোপুরি পুড়ে যায় না। কিন্তু ঝলসে যায়। কিছু দিন পরে গাছগুলি মরে যায়। পরে কাঠ চোরেরা সেই গাছ রাতে কেটে নিয়ে চম্পট দেয়।

এই পরিস্থিতিতে জঙ্গলে নজরদারি নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। তবে ডিএফও (দুর্গাপুর) নীলরতনবাবুর দাবি, ‘‘আমাদের কর্মী, আধিকারিকেরা জঙ্গল বাঁচাতে নিয়মিত পাহারা দিচ্ছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Fire
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE