E-Paper

ঐতিহ্যের মোহন্তস্থল রক্ষায় কড়া হাই কোর্ট

বর্ধমান শহরের রাজগঞ্জের এই মোহন্তস্থলটি নিম্বার্গ সম্প্রদায়ভুক্ত বৈষ্ণব মঠ। রাজা কীর্তিচাঁদ এটি প্রতিষ্ঠা করেন। এখানে রাধা দামোদরের বিগ্রহ রয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ মার্চ ২০২৪ ০৮:৪৪
রাজগঞ্জের মহন্তস্থল।

রাজগঞ্জের মহন্তস্থল। —নিজস্ব চিত্র।

বর্ধমান শহরের রাজগঞ্জের মোহন্তস্থল ভেঙে হেরিটেজ ধ্বংসের অভিযোগ নিয়ে কড়া পুলিশের রিপোর্ট তলব করল কলকাতা হাই কোর্ট। ঘটনাস্থল সরেজমিনে পরিদর্শন করে এ ব্যাপারে রিপোর্ট দেওয়ার জন্য জেলাশাসককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই সময় পুরসভা, হেরিটেজ কমিশন ও মামলাকারীকেও হাজির থাকতে বলা হয়ছে। বিশদে রিপোর্ট দেবে পুরসভা ও হেরিটেজ কমিশনও। এ ছাড়াও কী ভাবে ঐতিহ্যকে সংরক্ষণ করা যায় রিপোর্টে তা যেন উল্লেখ থাকে, নির্দেশ সেই কথা স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা। কোনও ভাবেই ওই হেরিটেজ নির্মাণ যাতে ধ্বংস না করা হয় তা পুলিশ সুপারকে দেখতে বলা হয়েছে। প্রয়োজনে পুলিশ পিকেট বসানোরও নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট।

বর্ধমান শহরের রাজগঞ্জের এই মোহন্তস্থলটি নিম্বার্গ সম্প্রদায়ভুক্ত বৈষ্ণব মঠ। রাজা কীর্তিচাঁদ এটি প্রতিষ্ঠা করেন। এখানে রাধা দামোদরের বিগ্রহ রয়েছে। মন্দির প্রতিষ্ঠা নিয়ে একটি কাহিনি প্রচলিত রয়েছে। রাজ বংশানুচরিত অনুযায়ী, যখন কীর্তিচাঁদ বিষ্ণু পুরাধিপতির সঙ্গে যুদ্ধে যান, সেই সময় কাঞ্চননগরের বারোদ্বারী নামের আমবাগানে এক সন্ন্যাসী রঘুনাথ জিউয়ের বিগ্রহ নিয়ে বসেছিলেন। সেখান দিয়ে যাওয়ার সময় কীর্তিচাঁদ ভক্তি সহকারে রঘুনাথ জিউ ও সন্ন্যাসীকে প্রণাম করেন। তুষ্ট হয়ে যুদ্ধে তাঁর জয় হবে বলে সন্ন্যাসী তাঁকে আশীর্বাদ করেন। কীর্তিচাঁদ যুদ্ধে জিতে ফিরে এসে রাজগঞ্জে উৎকৃষ্ট মন্দির ও অতিথিদের জন্য নিষ্কর মহল ও দেবোত্তর ভূমি দান করেন।

তবে কয়েক মাস আগে ওই মন্দির ভাঙাভাঙি শুরু হয়। সেখানে রয়েছে হোমিওপ্যাথি কলেজ। কলেজ কর্তৃপক্ষ ভাঙাভাঙিতে বাধা দেন। জড়িয়ে পড়ে একটি ট্রাস্টি বোর্ডের নাম। সেই বোর্ডের নিয়েও রয়েছে প্রশ্ন। কলেজ কর্তৃপক্ষ জেলাশাসক, পুরসভা ও হেরিটেজ কমিশনকে নালিশ জানান। কিন্তু, কোনও সুরাহা হয়নি বলে অভিযোগ। এর পরেই কলেজ কর্তৃপক্ষ হেরিটেজ ধ্বংস করা নিয়ে হাই কোের্ট মামলা করেন। কলেজ কর্তৃপক্ষের আইনজীবী উত্তীয় রায় ও অর্ণব মণ্ডল বলেন, ‘‘হেরিটেজ ধ্বংস করা নিয়ে হাই কোর্ট অত্যন্ত কড়া মনোভাব নিয়েছে। প্রশাসনের উদাসীন মনোভাবের কারণে হেরিটেজ ধ্বংস করে সেখানে নির্মাণকাজ চলছে।’’ যদিও মন্দিরটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছিল বলে সেটি মেরামত করা হচ্ছে দাবি করে সওয়াল করে অভিযুক্ত পক্ষ।

জেলাশাসক বিধানচন্দ্র রায় বলেন, ‘‘নির্দেশ পেয়েছি। পুলিশ ও পুরসভাকে জানানো হয়েছে। আদালতের নির্দেশ মেনে যা যা করার কথা, করা হবে।’’ পুলিশের দাবি, নির্দেশ মেনে রিপোর্ট জমা দেওয়া হবে। পুরপ্রধান পরেশচন্দ্র সরকার বলেন, ‘‘এতে পুরসভা যুক্ত নয়।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Calcutta High Court Bardhaman

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy