Advertisement
E-Paper

জেলে পচে মরুক স্বামী, মেয়ের ‘খুনি’র সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে চান না মা

ওই দম্পতির তিন মেয়ের মধ্যে ছোট সরস্বতী। পরিচারিকার কাজ করে মায়ের সঙ্গে সংসার চালাতেন তিনি। সঙ্গে চালাতেন নিজের পড়াশোনার খরচ। এ বার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল তাঁর।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০১৮ ০১:৪৭
কল্পনাদেবী। ছবি: উদিত সিংহ

কল্পনাদেবী। ছবি: উদিত সিংহ

মেয়ের ‘খুনি’র মুখদর্শন করতে চান না কল্পনা ক্ষেত্রপাল। ১৯ বছরের মেয়েকে হারিয়ে মেমারির কলেজ-মাঠপাড়ার বাসিন্দা কল্পনা ক্ষেত্রপাল দাবি করেন, ‘‘২৭ বছর আগে ও আমার তিন মাসের ছেলেকে মেরে ফেলেছিল। তারপরেও অনেক অত্যাচার সহ্য করে রয়ে গিয়েছি। এ বার আমার ছোট মেয়েটাকেও পুড়িয়ে মেরে দিল। ওর মুখ দেখতে চাই না। জেলে পচে মরুক।’’

বুধবার দুপুরে বছর পঞ্চাশের শঙ্কর ক্ষেত্রপালকে নেশার টাকা না দেওয়ায় মেয়েকে পুড়িয়ে মারার অভিযোগে আটক করেছিল মেমারি থানার পুলিশ। পুলিশের দাবি তিনি জেরায় স্বাকীর করেছিলেন, ‘নেশার টাকা জোগাড় হয়নি বলে মাথায় রাগ উঠে গিয়েছিল। সেই রাগেই মেয়েকে মেরে ফেলেছি’। পরে ওই রাতেই মেয়েকে খুন করার দায়ে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। বৃহস্পতিবার ধৃতকে আদালতে তোলা হলে বিচারক ১৩ দিন জেল-হাজতের নির্দেশ দেন।

ওই দম্পতির তিন মেয়ের মধ্যে ছোট সরস্বতী। পরিচারিকার কাজ করে মায়ের সঙ্গে সংসার চালাতেন তিনি। সঙ্গে চালাতেন নিজের পড়াশোনার খরচ। এ বার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল তাঁর। অভিযোগ, মঙ্গলবার দুপুরে নেশার টাকা দিতে না চাওয়ায় তাঁর মাথায় বোতলের আঘাত করেন শঙ্কর। কাঁদতে কাঁদতে ঘরের ভিতর গিয়ে কাঁথা ঢাকা দিয়ে শুয়ে পড়েন সরস্বতী। তখনই শঙ্কর কেরোসিন তেল ঢেলে মেয়ের গায়ে আগুন লাগিয়ে দেন বলে অভিযোগ। রাতে হাসপাতালে মারা যান সরস্বতী। হাসপাতালে মা ও দিদিদের সব ঘটনা জানিয়েও যান তিনি। কল্পনাদেবীর অভিযোগের ভিত্তিতেই পুলিশ শঙ্করকে গ্রেফতার করে।

এ দিন বাড়িতে দাঁড়িয়ে কল্পনাদেবী বলেন, ‘‘মারা যাওয়ার আগে মেয়ে আমাকে সব বলে গিয়েছে। এখন মেয়ের সঙ্গে ছেলেটার কথাও মনে পড়ছে। তিন মাসের ছেলেকেও ওর জন্যেই আমি হারিয়েছিলাম। নেশাই ওকে শেষ করে দিল।’’ তিনি আরও জানান, প্রতিদিন নেশার টাকার জন্য মা, মেয়েকে মারধর করতেন শঙ্কর। তিন মাস আগে সরস্বতীকে রাস্তায় ফেলেও মেরেছিলেন। এমন স্বামীর উপর কোনও সহানুভূতি নেই, সে কথা স্পষ্ট জানিয়ে দেন কল্পনাদেবী। তাঁর কথায়, ‘‘আমি চাই ও যেন এখানে না আসে। সারা জীবন জেলে পচে মরুক, সরকার ফাঁসি দিক, আমার কোনও আপত্তি নেই। মেয়ের খুনির সঙ্গে আমার কোনও দরকার নেই।’’ মৃতার দুই দিদি পিঙ্কি সাউ ও পূর্ণিমা দে বলেন, ‘‘যে বাবা নিজের মেয়েকে নেশার জন্য মারতে পারে, তাঁকে মানুষ বলে ভাবা যায়! আমরাও সম্পর্ক রাখতে চাই না।’’

মেয়েকে খুন করে ফেললেন? পুলিশের পাহারায় দাঁড়ানো শঙ্কর বললেন, ‘‘নেশা মাথায় চেপে বসেছিল।’’

Memari murder
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy