Advertisement
০৬ মে ২০২৪
Missing Teenage girls

বেড়েছে নাবালিকা নিখোঁজ, চিন্তা

জেলা প্রশাসনের মাথাব্যথা নাবালিকা ‘নিখোঁজ’ ও পকসো সংক্রান্ত মামলা। জেলায় ২০১৮ সালে ২৮১টি নিখোঁজের মামলা হয়েছিল। ২০২০ সালে করোনার সময়ে তা বেড়ে হয় ৪৫১।

ক্যাচলাইন: ক্যাপ্শন। 

ক্যাচলাইন: ক্যাপ্শন।  ছবি: ক্রেডিট

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০২৪ ০৮:৪১
Share: Save:

করোনার পরেও নাবালিকাদের ‘নিখোঁজ’ হয়ে যাওয়া বা যৌন নির্যাতনের হার কমার ইঙ্গিত নেই পূর্ব বর্ধমান জেলায়। যা নিয়ে চিন্তায় জেলা প্রশাসন। ওই সব মামলার তদন্তের ক্ষেত্রেও পদ্ধতিগত কিছু ত্রুটি নজরে আসায়, প্রতিটি থানার পকসো মামলার ‘নোডাল’ অফিসারদের নিয়ে আলোচনা করেন সমাজকল্যাণ দফতরের শিশু সুরক্ষা বিভাগ।

বৈঠক সূত্রে জানা যায়, ‘ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরো’র (এনসিআরবি) রিপোর্ট অনুযায়ী, পূর্ব বর্ধমানে শিশুদের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালে ২৭৯টি মামলা রুজু হয়েছিল। ২০২০ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৩৯১। ২০২১ সালের রিপোর্টে তা কিছুটা কমে ৩০৯ হয়েছে। আবার, অপহরণের ঘটনাও ২০২০ সালে বেশি ছিল (২৯৫)। ২০১৮ ও ২০২১ সালে যথাক্রমে অপহরণের ঘটনা লিপিবদ্ধ হয়েছিল যথাক্রমে ২০২ ও ২১৬। জেলায় ২০২০ ও ২০২১ সালের রিপোর্টে কোনও পাচারের অভিযোগ নেই। ২০১৮ সালে একটি পাচার-সংক্রান্ত অভিযোগ হয়েছিল।

জেলা প্রশাসনের মাথাব্যথা নাবালিকা ‘নিখোঁজ’ ও পকসো সংক্রান্ত মামলা। জেলায় ২০১৮ সালে ২৮১টি নিখোঁজের মামলা হয়েছিল। ২০২০ সালে করোনার সময়ে তা বেড়ে হয় ৪৫১। পরের বছর কিছুটা কমে দাঁড়ায় ৪০৮টি। জেলা প্রশাসনের এক কর্তার দাবি, “জেলায় নাবালিকা নিখোঁজের বেশিরভাগই প্রণয়ঘটিত সম্পর্কে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা বলে জানা যায়। পরিজনেরা মেয়েকে ফিরিয়ে আনতে কখনও নিখোঁজ, আবার কখনও অপহরণের মামলা করেন। তবে আশার কথা, ৯০%-এর বেশি নাবালিকাকে উদ্ধার করে আদালতে পেশ করা যায়।” এনসিআরবি রিপোর্ট অনুযায়ী, ধীরে হলেও জেলায় পকসো মামলা বাড়ছে, ‘জুভেনাইল জাস্টিস অ্যাক্ট’-এও মামলা হচ্ছে। ২০১৮ সালে জেলায় পকসো মামলা ছিল ৬৪টি, সেখানে ২০২০ ও ২০২১ সালে পকসো মামলা বেড়ে হয় ৮৪ ও ৮৫টি। তেমনই জুভেনাইল জাস্টিস অ্যাক্টে ২০১৮ সালে কোনও মামলা ছিল না। সেখানে ২০২০ ও ২০২১ সালে যথাক্রমে ২টি ও ৫টি মামলা হয়েছে।

পুলিশ অফিসারদের তদন্তে কী ধরনের পদ্ধতিগত ‘ফাঁক’ থেকে যায়, এ দিনের বৈঠকে তা নিয়েই মূলত আলোচনা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। উপস্থিত পুলিশ আধিকারিকেরা জানান, কোন ধরনের অভিযোগের ক্ষেত্রে পকসোর কোন ধারা দেওয়া উচিত, তদন্ত করতে গিয়ে কী কী সমস্যা উঠে আসে, সে সব সমস্যা কী ভাবে সমাধান করা যায়— এ সব নিয়েই মূলত আলোচনা হয়েছে।

বৈঠকে বক্তব্য রাখা হাই কোর্টের আইনজীবী দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পুলিশকেই প্রাথমিক তদন্ত করতে হয়। সে জন্য তদন্ত ও আইন কার্যকর কী ভাবে করতে হবে, হাই কোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের বিভিন্ন নির্দেশ ধরে আলোচনা হয়েছে।’’ বর্ধমানের পকসো আদালতের সরকারি আইনজীবী গৌতমকুমার মুখোপাধ্যায় বলেন, “পদ্ধতিগত ভুল দেখতে পেলে তদন্তকারী অফিসারদের বলে ঠিক করে দেওয়া হয়। ছোট ছোট পদ্ধতিগত ফাঁকের জন্য এ ধরনের বৈঠকের প্রয়োজন রয়েছে।” বর্ধমান বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সদন তা মনে করেন, “পকসো মামলার তদন্ত বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের করতে দিলেই ভাল হয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

East Bardhaman
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE