Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
বলছে করোনায় মৃতদের পরিবার
cOVID-19

‘আর স্বজনহারা হবে না অনেকে, এটুকুই পাওনা’

জেলায় স্বাস্থ্য-ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন ৩১,৩৮৩ জন। তাঁরা আগে প্রতিষেধক পাবেন। তার মধ্যে সাড়ে পনেরো হাজার জন প্রথম দফায় তা পাচ্ছেন।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান ও কালনা শেষ আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০২১ ০১:৪৫
Share: Save:

কেউ বলছেন, প্রতিষেধক কিছু দিন আগে তৈরি করা গেলে তাঁদের হয়তো স্বজনহারা হতে হত না। আবার কেউ বলছেন, তাঁদের মতো পরিজনকে হারানোর শোক হয়তো আর কাউকে সহ্য করতে হবে না। প্রতিষেধক দেওয়া শুরুর পরে এমনই প্রতিক্রিয়া করোনায় মৃত অনেকের পরিবারের।

করোনা আক্রান্ত হয়ে বর্ধমান শহরের কালীবাজারের সুবীর রায়ের বাবা ও ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে। রবিবার সুবীরবাবু বলেন, ‘‘ভ্যাকসিন আসার খবর শুনেছি। খুবই আনন্দের খবর। আমাদের যা হওয়ার হয়ে গিয়েছে। আর যেন কোনও পরিবারে এমনটা না ঘটে, এটাই চাই।’’ করোনায় প্রয়াত হয়েছেন পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ নারায়ণ হাজরা চৌধুরী। তাঁর ছেলে অনির্বাণ হাজরা চৌধুরীর কথায়, ‘‘সকলে প্রতিষেধক পাক। সব কিছুর ঊর্ধ্বে উঠে মানুষের বাঁচার হাতিয়ার হোক এই ভ্যাকসিন, এটুকুই কামনা করি।’’

অগস্টে করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় বর্ধমান ২ ব্লকের বড়শুলের গোপালপুরের বাসিন্দা রঞ্জন মণ্ডলের। তাঁর পরিজনেরা জানান, সংসার চালাতে রীতিমতো সমস্যায় পড়েছেন। প্রতিষেধক এসে যাওয়ায় করোনায় মৃত্যু থেকে রেহাই মিলবে, তাঁদের মতো পরিস্থিতিতে আর কাউকে পড়তে হবে না বলে মনে করছেন তাঁরা। ভাতারের পাটনা গ্রামের শেখ মহসীনের মৃত্যু হয়েছে কোভিড আক্রান্ত হয়ে। তাঁর ভাইপো শেখ রিপন বলেন, ‘‘অনেক দিন ধরেই শুনছিলাম, ভ্যাকসিন তৈরি হচ্ছে। অবশেষে তা এল। এ বার হয়তো মৃত্যুভয় কেটে যাবে। তবে আমাদের যা ক্ষতি হওয়ার, হয়ে গেল।’’

পূর্বস্থলীর সমুদ্রগড়ের নিমতলা এলাকার বাসিন্দা কাজল দেবনাথ করোনা প্রতিষেধকের কথা শুনেই কেঁদে ফেলেন। তিনি জানান, স্বামী মুম্বইয়ে একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করতেন। ৬ জুলাই করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর। তিনি বলেন, ‘‘আগে যদি এই রোগের টিকা থাকত, স্বামীকে হারাতে হত না। অনেক চেষ্টা করে ভ্যাকসিন তৈরি হয়েছে। সবাই সুস্থ থাকুন, এই প্রার্থনা করি।’’ কালনা শহরের বাসিন্দা সুমিতকুমার ঘোষ জানান, তাঁর বাবা অন্য একটি অসুখে আক্রান্ত হয়ে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন। পরে তাঁর করোনা ধরা পড়ে। সেখানেই তিনি মারা যান। সুমিতবাবু বলেন, ‘‘ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু হতে বাবার কথা বারবার মনে পড়ছে, আফশোসও হচ্ছে।’’

জেলা স্বাস্থ্য দফতর জানায়, জেলায় স্বাস্থ্য-ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন ৩১,৩৮৩ জন। তাঁরা আগে প্রতিষেধক পাবেন। তার মধ্যে সাড়ে পনেরো হাজার জন প্রথম দফায় তা পাচ্ছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

cOVID-19 Vaccine
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE